আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রোজার নিয়তে সুবহে সাদিক থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও কামাচার থেকে বিরত থাকলেই রোজা হয়ে যায়। তবে রোজার বিশুদ্ধতা, পরিপূর্ণতা ও যথার্থতার জন্য মাকরুহ তথা অপছন্দনীয় কাজ থেকেও বিরত থাকা বাঞ্ছনীয়। তা না হলে রোজা আদায় হবে ঠিক, কিন্তু সওয়াব কমে যাবে। হাদিসে এসেছে, ‘রোজা হলো ঢাল ও সুরক্ষিত দূর্গ’ (মুসনাদে আহমাদ: ৯২২৫)। অতএব, এ ঢাল ও দুর্গকে দূর্বল করা অনুচিত।
যেসব কারণে রোজা মাকরুহ হয়, নিচে সেগুলো তুলে ধরা হলো।
বিজ্ঞাপন
১. শরিয়তসম্মত কারণ ছাড়া কোনো বস্তুর স্বাদ আস্বাদন করা।
২. অনন্যোপায় হওয়া ছাড়াই কোনো কিছু চর্বণ করে শিশুর মুখে দেওয়া।
৩. বেচাকেনার সময় মধু কিংবা তেলের স্বাদ একান্ত প্রয়োজন ছাড়া আস্বাদন করা।
বিজ্ঞাপন
৪. সঙ্গম বা বীর্যপাতের আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও স্ত্রীকে চুমু দেওয়া।
৫. মুখে অধিক পরিমাণ থুতু একত্র করে তারপর গিলে ফেলা।
৬. বেশি ক্ষুধা বা পিপাসার কারণে অস্থিরতা প্রকাশ করা মাকরুহ।
৭. মাজন, কয়লা, গুল, টুথপেস্ট ব্যবহার করা।
৮. অহংকারের জন্য সুরমা লাগানো বা গোঁফে তেল লাগানো।
আরও পড়ুন: রোজা রেখে নামাজ না পড়ার ক্ষতি
৯. পায়খানার রাস্তায় পানি দ্বারা এত বেশি ধৌত করা যে, ভেতরে পানি চলে যাওয়ার আশঙ্কা হয়।
১০. প্রয়োজন ছাড়া দাঁত তোলা মাকরুহ। তাতে যদি রক্ত বা দাঁতে লাগানো ওষুধ পেটে চলে যায়, যা থুতুর সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি হয়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।
১১. এমন কোনো কাজ করা, যা শরীরকে দুর্বলতার দিকে নিয়ে যায়, যেমন শিঙ্গা লাগানো। আর কাউকে রক্ত দিলে যদি পরের সময়টিতে উপোস থাকা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়।
১২. অজুর সময় গড়গড়া করা।
১৩. গিবত করা।
আরও পড়ুন: গিবত ও মিথ্যা না ছাড়লে রোজার যে অবস্থা হয়
১৪. গালি-গালাজ ও শোরগোল করা।
১৫. টিভি-সিনেমার অপছন্দনীয় অনুষ্ঠান দেখা ও গান-বাদ্য শোনা।
১৬. অশ্লীল কথা বলা।
১৭. মিথ্যা বলা।
১৮. প্রতারণা করা।
১৯. বড় গুনাহে লিপ্ত হওয়া।
(ফতোয়ায়ে শামি; আলমগিরি; ফতহুল কাদির; আলমুহিতুল বুরহানি; ফতোয়া হিন্দিয়া; আহসানুল ফতোয়া; জাওয়াহিরুল ফিকহ; বিনায়াহ; বুখারি; আবু দাউদ)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পবিত্র রমজানের রোজায় মাকরুহ বা অপছন্দনীয় কাজ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।