‘জাল জালালি ওয়াল ইকরাম’ আল্লাহ তাআলার এক গুণবাচক নাম। আল্লাহর এই নামটি কোরআনে এসেছে দুবার। সুরা আর রহমানের ২৭ নম্বর ও ৭৮ নম্বর আয়াতে। এই নামের দুটি অংশ। প্রথম অংশ ‘জাল জালাল’ অর্থ হলো- ‘সমস্ত সৃষ্টিজগতের অধিপতি; যিনি সৃষ্টিকুল থেকে ভয় পাওয়ার হকদার ও একমাত্র প্রশংসার যোগ্য; দ্বিতীয় অংশ ‘আল-ইকরাম’ অর্থ হলো- মহত্ব-বড়ত্ব-দয়া ও ইহসানের অধিকারী’।
প্রথম অংশ ও দ্বিতীয় অংশ একসঙ্গে পড়লে হয় জাল জালালি ওয়াল ইকরাম। ইয়া শব্দ যোগ করে জিকিরটি করতে হবে এভাবে—ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম। যেকোনো কাজ সুন্দরভাবে শেষ করার জন্য, কাজের ভালো ফলাফলের জন্য এবং দুনিয়ার ধন-দৌলত ও রিজিকের প্রশস্ততার জন্য এই জিকির বেশি বেশি করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন আলেমরা।
বিজ্ঞাপন
কেননা এই জিকিরের মাধ্যমে একসঙ্গে দুটি কাজ হয়। ১. মহামহিম আল্লাহর উচ্চমর্যাদার গুণকীর্তন ২. দয়াবান আল্লাহর দয়ার ভিখারি হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন। তাছাড়া নবী কারিম (স.) এই জিকিরকে সর্বদা আঁকড়ে ধরতে বলেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম-কে সর্বদা আঁকড়ে ধরে থাকবে।’ (তিরমিজি: ৫/৫০৪; মুসতাদরাক হাকিম: ১/৬৭৬)
আরও পড়ুন: আপনাকে প্রাণবন্ত রাখবে যেসব জিকির
নবীজি (স.) নামাজ আদায়ের পরে বসা অবস্থায় এই নামের সঙ্গে মিলিয়ে দোয়া পড়তেন। বলতেন- ‘আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম ওয়া মিনকাস সালাম তাবারাকতা ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম।’ অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ, আপনি সালাম (শান্তি নিরাপত্তা প্রদানকারী, আপনার পক্ষ থেকেই সালাম (শান্তি ও নিরাপত্তা) আসে। আপনি বরকতময়, হে মহিমময় মহানুভব। (মুসলিম: ৫৯১-৫৯২)
একবার হজরত আনাস (রা.) নবীজির সঙ্গে বসা ছিলেন। তখন ওখানে এক লোক এসে নামাজ পড়ে এই দোয়া করল- ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিআন্না লাকাল হামদু, লা-ইলাহা ইল্লা আনতাল মান্নান, বাদিউস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ, ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম, ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুম।’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘তুমি আল্লাহর দরবারে ইসমে আজমের মাধ্যমে দোয়া করেছ, যে নামে ডাকলে মহান আল্লাহ সাড়া দেন এবং কিছু চাইলে তা দান করেন।’ (সুনানে তিরমিজি: ৩,৫৪৪; আবু দাউদ: ১,৪৯৫; নাসায়ি: ১৩০)
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: আল্লাহর সর্বাধিক প্রিয় ৪ জিকির
আল্লাহর গুণবাচক নামের জিকির করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে কোরআন ও হাদিসে। কোরআনে আছে, ‘আর সুন্দর নামগুলো আল্লাহরই। তোমরা তাঁকে সেই সব নামে ডাকবে, যারা তাঁর নাম বিকৃত করে, তাদেরকে বর্জন করবে তাদের কৃতকর্মের ফল তাদেরকে দেওয়া হবে।’ (সুরা আরাফ: ১৮০)
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে উক্ত দামী জিকিরটি বেশি বেশি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
