রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

বন্যাদুর্গত এলাকায় লাশের গোসল, জানাজা ও দাফনের বিধান কী

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২ আগস্ট ২০২৪, ০২:৪৮ পিএম

শেয়ার করুন:

বন্যাদুর্গত এলাকায় লাশের গোসল, জানাজা ও দাফনের বিধান কী

বন্যায় বা পানিতে ডুবে কোনো মুসলিমের মৃত্যু হলে তার শরীর পাক থাকলেও গোসল দেয়ার বিধান রহিত হবে না। এমনিভাবে বৃষ্টি যদি মৃত ব্যক্তিকে গোসল করিয়ে দেয় তারপরও তাকে গোসল দিতে হবে। কেননা গোসল দেওয়ার কাজটা জীবিত ব্যক্তিদের দ্বারা সম্পাদিত হয়নি। তবে, দ্বিতীয়বার গোসল না দিলেও এমতাবস্থায় ওই মৃতব্যক্তির জানাজা পড়া যাবে, কিন্তু জীবিত ব্যক্তিরা গুনাহগার হবেন। কিন্তু পানি থেকে উঠানোর সময় যদি একবার অথবা দু’বার অথবা তিনবার গোসলের নিয়তে নেড়ে উঠানো হয়, তাহলে গোসল করানোর দায়িত্ব আদায় হয়ে যাবে। (রদ্দুল মুহতার: ২/১৯৯; ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ১/১৫৮; আলবাহরুর রায়েক: ২/১৮৭)

কোনো কারণে যদি লাশ এতটুকু ফুলে যায় যে, হাত লাগানোর উপযুক্ত না থাকে অর্থাৎ গোসলের জন্য হাত লাগানোর দ্বারা লাশ ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে এ ধরনের নরম লাশে শুধু পানি ঢেলে দেওয়াই যথেষ্ট। ওই অবস্থায় সাধারণ লাশের গোসলের মতো ডলাডলি জরুরি নয়। অতঃপর নিয়মমতো কাফন দিয়ে জানাজার নামাজ পড়ে দাফন করা হবে। তবে জানাজার নামাজ পড়ার পূর্বেই যদি লাশ ফেটে যায় তাহলে নামাজ পড়া ছাড়াই দাফন করে দিতে হবে। (ফতোয়ায়ে তাতারখানিয়া: ২/১৩৬; ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ১/১৫৮; বাদায়েউস সানায়ে: ২/২৯)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: রাস্তার ময়লা পানি কাপড়ে লাগলে নামাজ পড়া যাবে?

যদি লাশের অর্ধাংশের বেশি পাওয়া যায় গোসল দেওয়া ও জানাজা পড়া হবে। এমনিভাবে মাথাসহ অর্ধেক পাওয়া গেলেও তার গোসল দেওয়া হবে এবং জানাজা পড়া হবে। যদি শুধু মাথা পাওয়া যায় তবে দাফন করা হবে; গোসল এবং জানাজা লাগবে না। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ১/১৫৯; আদ্দুররুল মুখতার: ২/১৯৯)

লাশ যদি দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে যায় কিন্তু ফেটে না যায় তাহলেও তার জানাজার নামাজ পড়া হবে। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ১/১৬৩; বাদায়েউস সানায়ে: ২/৪৭; ফতোয়া দারুল উলুম: ৫/৫৩৫)

লাশ ফুলে গিয়ে ফেটে গেলে তার জানাজার নামাজ রহিত হয়ে যাবে, এমতাবস্থায় ওই লাশের জানাজা পড়া হবে না। (মারাকিল ফালাহ: ১/৪১০; ইমদাদুল আহকাম: ১/৮৩০)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: বন্যায় ডুবে যাওয়া মসজিদে নামাজের পদ্ধতি কী হবে?

বন্যাদুর্গত অঞ্চলে লাশ কবর দেওয়ার মতো শুকনা জায়গা না থাকলে এবং লাশ শুকনা অঞ্চলে পাঠিয়ে দেওয়ার মতো কোনো ব্যবস্থাও না থাকলে এবং বন্যার পানি চলে যাওয়ার অপেক্ষা করলেও লাশ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা থাকলে এমতাবস্থায় জানাজা ও কাফন সম্পন্ন করে লাশকে ভাসিয়ে দিতে হবে। ইমাম আহমদ ইনবে হাম্বল (রহ) বলেন, লাশের সাথে ভারী কিছু বেঁধে স্রোতস্বিনী কোনো স্থানে ডুবিয়ে দিবে। শুকনো স্থানে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা থাকলে বা লাশ নষ্ট হওয়ার আশংকা না থাকলে ডুবিয়ে দেবে না, বরং অপেক্ষা করবে আর যথাযথভাবে দাফন করবে। (হাশিয়াতুত তাহতাবি আলা মারাকিল ফালাহ: ৬১৩; ফতোয়ায়ে শামি: ৩/১৬৬)

পানিতে ডুবে কোনো ব্যক্তি মারা গেলে হাদিসের ঘোষণা অনুযায়ী, তিনি শহিদের মর্যাদা পাবেন। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী (স.) বলেছেন— পানিতে ডুবে, কলেরায়, প্লেগে ও ভূমিধসে বা চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তিরা শহিদ। (সহিহ বুখারি: ৭২০) 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর