সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

দোয়া কবুলের দিনগুলোতে আওয়াবিন নামাজের গুরুত্ব

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ জুন ২০২৪, ০৭:৪৬ পিএম

শেয়ার করুন:

দোয়া কবুলের দিনগুলোতে আওয়াবিন নামাজের গুরুত্ব

সালাতুল আওয়াবিন একটি বিশেষ নফল নামাজ। এই নামাজ মাগরিবের পরে পড়া হয়। আওয়াবিন শব্দটি ফার্সি। এটি ‘আওয়াব’ শব্দ থেকে নির্গত। আভিধানিক অর্থ হলো খোদাভীরু। ইসলামি পরিভাষায় মাগরিবের ফরজ ও সুন্নত নামাজ আদায়ের পর যে নফল নামাজ পড়া হয় সেটিই আওয়াবিন নামাজ। আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মাগরিবের নামাজ শেষ করার পর থেকে এশার নামাজের সময় হওয়া পর্যন্ত যে নামাজ পড়া হয় তাকে সালাতুল আওয়াবিন বলে। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৫৯২২)

সালাতুল আওয়াবিনের ফজিলত অনেক। সুরা সাজদার ১৬ নং আয়াত (তাদের পার্শ্ব শয্যা থেকে আলাদা থাকে) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো- যে নামাজ মাগরিব ও এশার মাঝখানে পড়া হয়। সেটা হলো আওয়াবিনের নামাজ। (শুয়াবুল ঈমান লিলবায়হাকি: ২৮৪০, সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকি: ৪৮১৩)


বিজ্ঞাপন


সলফে সালেহিনরা আওয়াবিন নামাজ গুরুত্বের সঙ্গে আদায় করতেন। এই নামাজের ফজিলত সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি ছয় রাকাত নামাজ মাগরিবের পর পড়বে, যার মাঝে আল্লাহর জিকির ছাড়া কোনো কথা বলে না, তাহলে সে ১২ বছর ইবাদতের সমপরিমাণ সওয়াব পাবে। (সহিহ ইবনে খুজাইমা: ১১৯৫)

আরও পড়ুন: ইশরাক ও চাশতের নামাজ কখন পড়তে হয়, ফজিলত কী?

আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি মাগরিবের পর ছয় রাকাত নামাজ পড়ে, যার মাঝে কোনো মন্দ কথা বলে না, তাহলে সে ১২ বছরের ইবাদতের সমপরিমাণ সওয়াব পাবে। (সুনানে তিরমিজি: ৪৩৫, ইবনে মাজাহ: ১৩৭৪)

আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নিশ্চয় ফেরেশতাগণ ওই লোকদের ঘিরে রাখেন, যারা মাগরিব ও এশার মাঝখানে নামাজ পড়ে। আর এটা হলো সালাতুল আওয়াবিন। (শরহুস সুন্নাহ লিলবাগাবি: ৮৯৭)


বিজ্ঞাপন


সালাতুল আওয়াবিনের রাকাতসংখ্যা নির্ধারিত নয়। ছয় রাকাত আওয়াবিন নামাজের ফজিলত বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। অবশ্য এর চেয়ে কমবেশিও করা যাবে। হজরত হুজাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুলুল্লাহ (স.)-এর সঙ্গে মাগরিব নামাজ আদায় করলেন। ফরজ শেষে তিনি নফল পড়তে লাগলেন এশা পর্যন্ত। (সহিহ ইবনে খুজাইমা: ১১৯৪)

হাদিসে আওয়াবিনের নামাজ সর্বোচ্চ ২০ রাকাত পর্যন্ত পড়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। আওয়াবিন নামাজে পড়ার বিশেষ কোনো সুরা নেই। (মাজমাউল আনহুর: ১/১৯৫, তিরমিজি: ৪৩৫, ফতোয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত: ৩/১৫৫)

দোয়া কবুলের দিনগুলোতে এই নামাজের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে আল্লাহর কাছে। আজ শনিবার (১৫ জুন) সৌদি আরবে আরাফাতের দিন। বাংলাদেশে বসবাসকারীদের জন্য ইয়াওমে আরাফা বা আরাফাতের দিন হলো আগামীকাল রোববার। ইসলামে এই দিনের দোয়া শ্রেষ্ঠ। এই দিনের আমল আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়। এই দিন সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। (দাউদ: ২৪৩৮; মুসলিম: ১৩৪৮; সহিহ ইবনে হিব্বান: ৩৮৫৩)

তাই, আজ ও কাল অন্যান্য ইবাদতের পাশাপাশি সালাতুল আওয়াবিন, সালাতুল ইশরাক, তাহাজ্জুদ ইত্যাদি নফল নামাজ পড়া উচিত। যদিও জরুরি নয়। বরং অধিক সওয়াব ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পড়া বাঞ্ছনীয়। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফিক দান করুন। 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর