রোববার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

ইশরাক ও চাশতের নামাজ কখন পড়তে হয়, ফজিলত কী?

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:২৬ এএম

শেয়ার করুন:

ইশরাক ও চাশতের নামাজ কখন পড়তে হয়, ফজিলত কী?

নফল নামাজেরই ভিন্ন ভিন্ন নাম ইশরাক, চাশত কিংবা দুহা। এসব নামাজের ওয়াক্ত হলো সূর্য উদিত হওয়ার ১৫ মিনিট পর থেকে দ্বিপ্রহরের ৫ মিনিট আগ পর্যন্ত। সূর্য পরিপূর্ণভাবে উদিত হওয়ার পর ইশরাকের নামাজ আদায় করতে হয়। রাসুলুল্লাহ (স.) সূর্যোদয়ের পর এই দু’রাকাত নামাজ আদায় করতেন। অন্যদেরও আদায় করতে উৎসাহিত করেছেন। বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করল এবং সূর্যোদয় পর্যন্ত আল্লাহর জিকিরে বসে থাকল; অতঃপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করল, সে একটি পরিপূর্ণ হজ ও ওমরাহর সওয়াব পাবে।’ (তিরমিজি: ৫৮৬)

ইশরাকের উত্তম সময় হলো, বেলা ওঠার এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে পড়ে নেওয়া।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: ফরজ বাধ্যতামূলক, নফলে আল্লাহর নৈকট্য 

চাশত বা দুহার নামাজ আদায় করতে হয় সূর্য মধ্য আকাশে স্থির হওয়ার আগ মুহূর্তে। চাশত বা দুহা পৃথকভাবে আদায় করার অবকাশ থাকলেও অনেকেই এটাকে ইশরাকের নামাজ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাঁরা বলেছেন, সময়ের শুরুতে আদায় করলে সেটা ইশরাক আর সময়ের শেষে আদায় করলে দুহা। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘আমার প্রিয়তম (রাসুল স.) আমাকে তিনটি বিষয়ে অসিয়ত করেছেন, যেন আমি তা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ত্যাগ না করি। প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখা, দুহার নামাজ ও ঘুমানোর আগে বিতর আদায় করা।’ (সহিহ বুখারি: ১১৭৮)

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষের শরীরে ৩৬০টি জোড়া আছে। অতএব, মানুষের কর্তব্য হলো প্রত্যেক জোড়ার জন্য একটি করে সদকা করা। সাহাবায়ে কেরাম বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! কার শক্তি আছে এই কাজ করার?’ তিনি বলেন, ‘মসজিদে কোথাও থুতু দেখলে তা ঢেকে দাও অথবা রাস্তায় কোনো ক্ষতিকারক কিছু দেখলে সরিয়ে দাও। তবে এমন কিছু না পেলে, চাশতের দুই রাকাত নামাজ এর জন্য যথেষ্ট।’ (আবু দাউদ: ৫২২২)

উপরোক্ত হাদিস থেকে বোঝা যায় যে, চাশতের নামাজ ৩৬০ সদকার সমতুল্য।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: তাহাজ্জুদ কষ্টকর হলে ন্যূনতম যে আমলটি করবেন

ইশরাক নামাজশেষে নাশতা করা এবং জীবন জীবিকার তাগিদে যার যার দুনিয়াবি কাজে নেমে পড়া উচিত। কাজে যাওয়ার সময় নানারকম অনিষ্ট ও ধোঁকা থেকে বাঁচতে ঘর থেকে বের হওয়ার দোয়া পড়বেন। হাদিসে এসেছে, যদি কেউ ঘর থেকে বের হওয়ার সময় ‘বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ, লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ’ পড়ে, তবে সে যাবতীয় অনিষ্ট থেকে হেফাজতে থাকে, শয়তানের ধোঁকা থেকে দূরে থাকে (তিরমিজি: ৩৪২৬)।  দোয়াটির অর্থ: ‘আল্লাহর নামে, আল্লাহ তাআলার ওপরই নির্ভর করলাম, আল্লাহর সাহায্য ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই, শক্তিও নেই।’

কাজের কোনো ফাঁকে সম্ভব হলে চাশতের নামাজ পড়ে নেওয়া উত্তম। চাশতের নামাজ দুই বা চার রাকাত। চার রাকাত পড়াই উত্তম। এর নিয়মও সাধারণ নফল নামাজের মতো। সূর্য এক-চতুর্থাংশ ওপরে উঠলে, গ্রীষ্মকালে ৯টা-১০টা, আর শীতকালে ১০টা-১১টার সময় সাধারণত তা আদায় করা হয়। আবু হুরায়রা (র.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) আমাকে তিনটি বিষয়ের অসিয়ত করেছেন, যা আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কখনো ছাড়ব না। তার একটি হলো চাশতের নামাজ। (বুখারি: ১১৭৮)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রতিটি দিন সুন্নতের ওপর অতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর