জাকাত ফরজ ইবাদত এবং ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। পবিত্র কোরআনে জাকাত আদায়ের নির্দেশ দিয়ে মহান আল্লাহ বলেন- وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ ‘তোমরা নামাজ আদায় করো এবং জাকাত প্রদান করো। (সুরা বাকারা: ১১০)
জাকাত দিতে হয় নির্ধারিত ৮টি খাতে। খাতগুলো হলো- ১. ফকির ২. মিসকিন ৩. আমেল তথা জাকাতের কাজে নিযুক্ত ব্যক্তি ৪. (নওমুসলিমের) মন জয় করার জন্য ৫. দাসমুক্তি তথা দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ লোক। ৬. ঋণগ্রস্তদের ঋণ পরিশোধে জাকাত দেওয়া যাবে ৭. ফি সাবিলিল্লাহ বা আল্লাহর পথে এবং ৮. মুসাফির। (সুরা তাওবা: ৬০)
বিজ্ঞাপন
এই খাতগুলোর অন্তর্ভুক্ত যে-কাউকে জাকাত দেওয়া যাবে। সুতরাং শ্বশুর-শাশুড়িকে এবং সকল আত্মীয়-স্বজনকে জাকাতের উপযুক্ত হলে জাকাত দেওয়া যাবে এবং তাদেরকে দেওয়াই উত্তম। এতে বেশি সওয়াব লাভ হয়। এর দলিল হচ্ছে, রাসুলুল্লাহ বলেছেন— الصَّدَقَةَ في الْمِسْكِينِ صَدَقَةٌ وفي ذِي الرَّحِمِ صَدَقَةٌ وَصِلَةٌ অর্থ: মিসকিনকে জাকাত দেওয়া সদকা; আর আত্মীয়কে দেওয়া সদকা ও আত্মীয়তার হক আদায়।’ (মুসনাদে আহমদ: ১৫৭৯৪ সুনানে নাসায়ি: ২৫৮২)
আরও পড়ুন: যাদের জাকাত দিলে সওয়াব বেশি, যাদের দিলে কবুল হবে না
যাদের জাকাত-ফিতরা দেওয়া যায় না
১. অমুসলিম
২. নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক।
৩. নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিকের নাবালক সন্তান।
৪. বনু হাশেমের লোক।
৫. মা-বাবা, দাদা-দাদি, নানা-নানি—এভাবে ওপরের স্তরের কাউকে জাকাত দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ যাদের মাধ্যমে দুনিয়ায় এসেছে, তাদেরসহ ওপরের স্তরের কাউকে জাকাত দেওয়া যাবে না।
৬. নিজের মাধ্যমে যারা দুনিয়ায় এসেছে, অর্থাৎ ছেলে-মেয়ে ও তাদের সন্তানাদি একইভাবে তাদের সন্তানদেরও জাকাত দেওয়া যাবে না।
৭. স্ত্রী ও স্বামী একে অন্যকে জাকাত দিতে পারবে না।
৮. মসজিদ-মাদরাসা, পুল, রাস্তা, হাসপাতাল বানানোর কাজে ও মৃতের দাফনের কাজে জাকাতের টাকা দেওয়া যাবে না।
(ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/১৮৮, ১৮৯; তাতারখানিয়া: ৩/২০৬; আদদুররুল মুখতার: ৩/২৯৪, ২৯৫)
সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা বা বর্তমান বাজারমূল্য অনুপাতে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমমূল্য পরিমাণ টাকার মালিক হলে, তার ওপর বছর অতিক্রান্ত হলে জাকাত আবশ্যক। জাকাতযোগ্য সম্পদের চল্লিশ ভাগের এক ভাগ জাকাত আদায় করতে হয়। জাকাত ওয়াজিব হলে শতকরা আড়াই টাকা হারে নির্দিষ্ট খাতে ব্যক্তি মালিকানায় জাকাত প্রদান করা আবশ্যক।

