শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

৪র্থ তারাবিতে যা পড়া হবে

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৪ মার্চ ২০২৪, ০৭:০২ পিএম

শেয়ার করুন:

৪র্থ তারাবিতে যা পড়া হবে

রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের মাস রমজান। এই মাসেই নাজিল হয়েছে পবিত্র কোরআনুল কারিম। রমজান মাসের অন্যতম আমল হলো কোরআনুল কারিম খতমের মাধ্যমে তারাবি নামাজ আদায়। আজ চতুর্থ তারাবি। ইসলামি ফাউন্ডেশন নির্ধারিত চতুর্থ তারাবিতে দেশের প্রায় সব মসজিদে আজ পড়া হবে সুরা নিসার ৮৮ নম্বর আয়াত থেকে সুরা মায়েদার ৮২ নম্বর আয়াত পর্যন্ত। পারা হিসেবে পড়া হবে ৫ম পারার শেষের অর্ধেক থেকে ৬ষ্ঠ পারার পুরো অংশ। চলুন একনজরে দেখে নিই- কী থাকছে আজকের খতম তারাবিতে।

সুরা নিসা, আয়াত ৮৮-৯৬
এই অংশে আল্লাহ তাআলা মুনাফিকদের সম্পর্কে বলছেন- মুনাফিকদের ব্যাপারে কোনো দ্বিধা নয়, পরিপূর্ণ ঈমান আনলে তারা মুমিনদের দয়া ও সাহায্য পাবে, নয়তো তাদের সঙ্গে মুমিনদের কোনো সম্পর্ক নেই। যারা হিজরতের সময় হিজরত করেনি, তারা হিজরত না করা পর্যন্ত তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা মুমিনদের জন্য নিষেধ। যদি কোনো মুমিন অন্য মুমিনকে ভুলে হত্যা করে তাহলে কী ক্ষতিপূরণ দিতে হবে তা বলা হয়েছে। একইসঙ্গে বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ মুমিনকে হত্যা করলে তার জন্য জাহান্নাম অবধারিত। আরও আলোচনা করা হয়েছে, যুদ্ধের ময়দানে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে শত্রুমিত্র পার্থক্য করা জানতে হবে, আর যারা সক্ষম হওয়া সত্তেও যুদ্ধে অংশ না নিয়ে ঘরে বসে থাকে, তারা কখনো মর্যাদাবান মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত হবে না।


বিজ্ঞাপন


সুরা নিসা, আয়াত ৯৭-১০৪
বলা হয়েছে, নির্যাতনে অসহ্য হয়ে কেউ যেন নিজেই নিজেকে হত্যা না করে বসে। বরং সে যেন অন্য কোথাও হিজরত করে। ভয়কালীন নামাজ ও যুদ্ধকালীন নামাজ পড়ার বিধান এবং নিয়ম বলে দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: ৩য় তারাবিতে যা পড়া হবে

সুরা নিসা, আয়াত ১০৫-১২৬
এই অংশে মুমিনদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন নসিহত করা হয়েছে। হিজরতের প্রাথমিক যুগে সাধারণ মুসলিমদের আর্থিক অবস্থা যখন খুব খারাপ ছিল, তখন মুনাফিকদের কুকীর্তির ব্যাপারে সচেতন করা হয়েছে। বিশ্বাসভঙ্গকারীদের বিশ্বাস করে ন্যায়বিচার যেন ভুলন্ঠিত না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে কিংবা নিজের প্রতি জুলুম করবে তারপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে, সে আল্লাহকে পাবে ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। বলা হয়েছে, সৎ পথ প্রকাশ হওয়ার পর কেউ যদি রাসুলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মুমিনদের পথ ছাড়া অন্য পথ অনুসরণ করে, তবে যেদিকে সে ফিরে যায় সেদিকেই তাকে আমরা ফিরিয়ে দেব এবং তাকে জাহান্নামে দগ্ধ করাব, আর তা কতই না মন্দ আবাস।

সুরা নিসা, আয়াত ১২৭-১৫২
এই অংশে নারী ও এতিমদের ব্যাপারে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান দেয়া হয়েছে। এছাড়াও তাকওয়া অর্জনের ও কুফুরি বর্জনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ন্যায়বিচার করতে বলা হয়েছে, এমনকি বিচার আত্মীয়-স্বজন মা-বাবার বিরুদ্ধে গেলেও। এখানেও কাফেরদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, মুমিনগণের পরিবর্তে যারা কাফেরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে তারা কি ওদের কাছে ইজজত চায়? সমস্ত ইজজত তো আল্লাহরই। এখানে মুনাফিকদের সালাত সম্পর্কে আলোচনা রয়েছে। বলা হয়েছে, যখন তারা সালাতে দাঁড়ায় তখন শৈথিল্যের সাথে দাঁড়ায়, শুধুমাত্র লোক দেখানোর জন্য এবং আল্লাহকে তারা অল্পই স্মরণ করে। মুনাফিকরা জাহান্নামের নিম্নতমস্তরে থাকবে, তাদের কোনো সহায় থাকবে না।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: ২য় তারাবিতে যা পড়া হবে

সুরা নিসা, আয়াত ১৫৩-১৭৬
কাফেরদের প্রশ্নের জবাবে মুসা (আ.) ও অন্য নবীদের দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ওইসব নবীও সত্যের বাণী প্রচার করতে গিয়ে আরো কঠিন ও জটিল সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। এসব সমস্যা মোকাবিলার জন্য হেকমতের সঙ্গে কাজ করতে হবে।

সুরা মায়েদা, আয়াত ১-১৯
সুরা মায়েদার শুরুতে ইহরাম অবস্থায় শিকার করা নিষিদ্ধ এবং কোন প্রাণী খাওয়া হারাম ও কোন প্রাণী খাওয়া হালাল এসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও অজুর বিধান এবং মুমিনদের আল্লাহর অনুগত ও কৃতজ্ঞ বান্দা হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন ধর্ম বিশ্বাসী, ইহুদি-খ্রিস্টানদের দল-উপদলের বিভিন্ন আকিদার অসাড়তা সংক্ষিপ্ত ও যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রমাণ করা হয়েছে।

সুরা মায়েদা, আয়াত ২০-৩৪
ইহুদিদের হঠকারিতা সম্পর্কে বলা হয়েছে। তারা মুসা (আ.) এর সঙ্গে কত নিচু আচরণ করেছে, তা এ রুকুতে বিস্তারিত বলা হয়েছে। হজরত আদম (আ.) এর দুই পুত্র হাবিল ও কাবিলের ঘটনা বলা হয়েছে। কীভাবে এক ভাই অন্যায়ভাবে আরেক ভাইকে হত্যা করে জাহান্নামি হয়ে গেছে।

আরও পড়ুন: প্রথম তারাবিতে যা পড়া হবে

সুরা মায়েদা, আয়াত ৩৫-৫০
মুমিনদের আল্লাহভীরু হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। চোরদের হাত কাটার বিধান এবং মুনাফিকদের ব্যাপারে মনঃক্ষুণ্ণ না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ইহুদি ও খ্রিস্টানদের বিষয়ে বিস্তারিত বলা হয়েছে। তাওরাত ও ইঞ্জিলের বিধান ছিল আল্লাহ প্রদত্ত বিধান। আর কোরআন হলো ওই দুই কিতাবের সত্যায়নকারী। তাই তাওরাত ও ইঞ্জিলের মতো এ সময়ও আল্লাহর কিতাব কোরআন অনুযায়ী পরস্পরের মাঝে ফয়সালা করতে হবে। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি নয়, বরং প্রত্যেকে ভালো কাজ করতে থাকুক। কে সত্যবাদী, সে ফয়সালা করবেন আল্লাহ তাআলা।

সুরা মায়েদা, আয়াত ৫১-৬৬
ইহুদি ও খ্রিস্টানদের বন্ধুরূপে গ্রহণ না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আহলে কিতাব ও মুনাফিকদের নানা আচরণ এবং চরিত্র সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

সুরা মায়েদা, আয়াত ৬৭-৮২
আহলে কিতাবদের পক্ষ থেকে, বিশেষ করে হজরত ঈসা (আ.) এর অনুসারীরা যে ধরনের ভ্রান্ত আকিদা পোষণ করে থাকে তার অসাড়তা তুলে ধরা হয়েছে। খ্রিস্টানদের মধ্যে যারা হজরত ঈসা ও মরিয়ম (আ.) সম্পর্কে ভ্রান্ত আকিদায় বিশ্বাসী, তাদের নিন্দা করা হয়েছে। এসব অসাড় ধ্যান-ধারণা পরিত্যাগ করা এবং এক আল্লাহর পরিপূর্ণ বিশ্বাস অর্জন করা।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর