শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

৩য় তারাবিতে যা পড়া হবে

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ মার্চ ২০২৪, ০৬:২৫ এএম

শেয়ার করুন:

৩য় তারাবিতে যা পড়া হবে

রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে মুসলিম উম্মাহর কাছে আগমন করেছে পবিত্র রমজান। এ বরকতময় মাসেই নাজিল হয়েছে পবিত্র কোরআনুল কারিম। রমজান মাসের অন্যতম আমল হলো কোরআনুল কারিম খতমের মাধ্যমে তারাবি নামাজ আদায়। আজ তৃতীয় তারাবি। ইসলামি ফাউন্ডেশন নির্ধারিত তৃতীয় তারাবিতে দেশের প্রায় সব মসজিদে আজ পড়া হবে সুরা আলে ইমরানের ৯২ আয়াত থেকে সুরা নিসার ৮৭ নম্বর আয়াত পর্যন্ত। 

সুরা আলে ইমরান, আয়াত ৯২-১০৯
পছন্দের জিনিস কোরবান না করা পর্যন্ত কেউ-ই আল্লাহর প্রিয় হতে পারবে না বলে আলোচনা শুরু হয়েছে। তারপর আহলে কিতাবের আলেমদের উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে- তারা যেন জেনেশুনে সত্য গোপন না করে। কোরআন এসেছে পূর্ববর্তী গ্রন্থগুলোর সত্যায়ন করতে। আরও বলা হয়েছে, পৃথিবীতে বিশ্বাসীদের রাজ কায়েম করতে হলে এবং খুব দ্রুত সফল হতে চাইলে অবশ্যই বিশ্বাসীদের একটি সংঘ থাকা প্রয়োজন। যে সংঘের অধীনে তারা নিজেদের এবং মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করবে। তারপর আল্লাহ তাআলা বলছেন, এই দুনিয়ায় যেমন কেউ সফল হলে তার চেহারায় আনন্দের চিহ্ন ফুটে ওঠে এবং ব্যর্থ হলে লজ্জায় চেহারা কালো হয়ে যায়। তেমনি কেয়ামতের দিনও মানুষের একই অবস্থা হবে। বিশ্বাসীদের চেহারা থাকবে হাস্যোজ্জ্বল। আর অবিশ্বাসীদের চেহারা অপমান-হতাশা আর লজ্জায় ছেয়ে যাবে।


বিজ্ঞাপন


সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১১০-১২০
আল্লাহ তাআলা বিশ্বাসীদের বলছেন- হে বিশ্বাসীরা! তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি। তোমরা মানুষের কল্যাণ করবে এবং পৃথিবীবাসীর নেতৃত্ব দেবে। পূর্ববর্তীদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, ওদের মধ্যে কিছু খাঁটি বিশ্বাসী আছে ঠিক, তবে তাদের বেশিরভাগই সত্য থেকে দূরে। তারা তোমাদের কষ্ট দিতে চায়। কিন্তু তাদের না আছে মনের জোর, না আছে গায়ের জোর। তাই প্রকৃত বিশ্বাসীদের মোকাবেলায় তারা কখনই সফল হবে না। তারা যদি কোনো ভালো কাজ করে থাকে, তবে তার প্রতিদান আল্লাহ দেবেন। কিন্তু প্রকৃত বিশ্বাসী কখনই কপট এবং অবিশ্বাসীকে বন্ধু বলে গ্রহণ করতে পারে না। এতে করে নিজেকেই বিপদে ফেলা হয়।

আরও পড়ুন: ২য় তারাবি যা পড়া হবে

সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১২১-১২৯
এই অংশে বদর যুদ্ধের আলোচনা করা হয়েছে। অল্পসংখ্যক বিশ্বাসীকে আল্লাহ তাআলা কীভাবে আসমান থেকে ফেরেশতা পাঠিয়ে সাহায্য করেছেন এবং কীভাবে বিশ্বাসীদের দুর্বল মনকে চাঙ্গা করেছেন সে কথা বলা হয়েছে এখানে। অবিশ্বাসীরা যেন হতাশায় কালো অন্ধকারে ডুবে যায় এবং লাঞ্ছনার গভীর গর্তে পড়ে যায়- মূলত এ জন্যই বিশ্বাসীদের হাতকে শক্তিশালী করেছেন মহাক্ষমতাধর আল্লাহপাক। আকাশ ও পৃথিবীর নিয়ন্ত্রক আল্লাহর জন্য এটা খুবই সহজ।

সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১৩০-১৪৩ 
খাঁটি বিশ্বাসীদের গুণাবলী সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তারা সুদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখে না এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে মেনে চলে। সচ্ছল-অসচ্ছল সবসময়ই দান করে। রাগ নিয়ন্ত্রণ করে। মানুষকে ক্ষমা করে দেয়। তারা হতাশ হয় না। এসবই বিশ্বাসীদের জন্য সুখের জীবন এবং শান্তির জান্নাত অপেক্ষা করছে। তবে হ্যাঁ! জান্নাত লাভ করতে চাইলে অক্লান্ত পরিশ্রম করেই সাফল্যের চূড়ায় উঠতে হবে। 


বিজ্ঞাপন


সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১৪৪-১৮০
ওহুদ যুদ্ধের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। মাঝেমাঝে কাফেরদের পক্ষ থেকে ওঠা বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা ও মুমিন বাহিনীর প্রশংসা করা হয়েছে।

সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১৮১-১৮৯ 
আল্লাহ সম্পর্কে কাফেরদের বিভিন্ন ধারণা ও প্রশ্নের জবাব দেয়া হয়েছে। মুমিন বাহিনীকে বারবার পরীক্ষা করা হবে—এ কথাও বলা হয়েছে।

সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১৯০-২০০
কিছু হেদায়াতি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, বিশ্বাসীরা আল্লাহর সৃষ্টি রাজ্য নিয়ে ভাবে এবং সবসময় জিকির ও প্রশংসাকীর্তনে লিপ্ত থাকে। পরস্পর ধৈর্য ধারণ করতে হবে, আল্লাহভিরুতার জীবনযাপন করতে হবে। তবেই মোমিনের জীবনে সফলতা ধরা দেবে বলে সুরার ইতি টানা হয়েছে। 

সুরা নিসা, আয়াত ১-১০
আল্লাহ মানবজাতিকে সৃষ্টি করা, এতিমদের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস না করা, নারীদের ন্যায্য অধিকার প্রদান করা, কেউ মারা গেলে তার সম্পদের বণ্টন ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: প্রথম তারাবিতে যা পড়া হবে

সুরা নিসা, আয়াত ১১-২৫ 
মিরাস বণ্টনের বিস্তারিত বিবরণ, সীমালঙ্ঘন না করা, সব সময়ে ভালো কাজ করা, অশ্লীলতা দূরীকরণে বিয়ে ও হারাম থেকে বিরত থাকা, পরিবারে কীভাবে সাম্য রক্ষা করবে, আত্মীয়-স্বজনের হক আদায় করা প্রসঙ্গে আলোকপাত করা হয়েছে।

সুরা নিসা, আয়াত ২৬-৫০
আল্লাহর নিষেধকৃত বিষয় থেকে বিরত থাকা ও আদেশকৃত বিষয় সম্পাদন করা, কৃপণতা না করা বরং উদার হওয়া, নেশাদ্রব্য পান না করা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

সুরা নিসা, আয়াত ৫১-৫৯
আলোচ্য বিষয় হলো আল্লাহর বড়ত্ব ও মহিমা, আল্লাহর আয়াত ও হুকুম অস্বীকার করার পরিণাম, আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস করা ইত্যাদি।

সুরা নিসা, আয়াত ৬০-৭৬
মুনাফিক ও কাফেরদের ধৃষ্টতার বিভিন্ন প্রকার ও শাস্তি, রাসুল (স.) প্রেরিত হওয়ার কারণ ও উদ্দেশ্য, নবীদের সঙ্গে অবিশ্বাসীদের বিভিন্ন ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণ ইত্যাদি প্রসঙ্গে আলোকপাত করা হয়েছে।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর