তাহিয়্যাতুল মসজিদ হলো গুরুত্বপূর্ণ নফল নামাজ। মসজিদে প্রবেশ করামাত্র যে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়া হয় তাকে তাহিয়্যাতুল মাসজিদ বা দুখুলুল মসজিদ বলা হয়। এই নামাজের ফজিলত বিষয়ে আবু কাতাদা সালামি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে সে যেন বসার আগে দুই রাকাত সালাত আদায় করে নেয়। (বুখারি: ৪৪৪, ১১৬৩)
কিন্তু ফজরের ওয়াক্তে যেহেতু দুই রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা বা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত নামাজ রয়েছে, তাই সুন্নতের আগে তাহিয়্যাতুল মসজিদ পড়া যায় কি না জানতে চান অনেকে। আবার কেউ ঘরে ফজরের সুন্নত পড়ে মসজিদে যান, গিয়ে তাহিয়্যাতুল মসজিদ পড়েন—এটাও সুন্নতি আমল কি না জানা প্রয়োজন আছে।
বিজ্ঞাপন
এসব প্রশ্নের উত্তরে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, ফজরের সময় হয়ে যাওয়ার পর তাহিয়্যাতুল মসজিদ পড়া যায় না। কেননা হাদিস শরিফে ফজরের সময় শুরু হওয়ার পর সূর্যোদয় পর্যন্ত ফজরের সুন্নত ছাড়া অন্যকোনো নফল নামাজ পড়তে নিষেধ করা হয়েছে।
উম্মুল মুমিনিন হাফসা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ إِذَا طَلَعَ الْفَجْرُ، لَا يُصَلِّي إِلّا رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ ‘রাসুলুল্লাহ (স.) ফজর উদিত হলে সংক্ষিপ্তভাবে দুই রাকাত (সুন্নত) নামাজ ব্যতীত আর কোনো (নফল) নামাজ পড়তেন না। (সহিহ মুসলিম: ৭২৩)
আরও পড়ুন
চাশতের নামাজের সময় ও নিয়ম
মাগরিবের জামাতের আগে নফল পড়ার গুরুত্ব কতটুকু?
নফল নামাজের সেজদায় মনের চাওয়াগুলো বাংলায় বলা যাবে?
অন্য বর্ণনায় আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন- لَا صَلَاةَ بَعْدَ الفَجْرِ إِلّا سَجْدَتَيْنِ ‘ফজরের সময় শুরু হওয়ার পর সুন্নত ছাড়া অন্যকোনো নফল নামাজ নেই। (জামে তিরমিজি: ৪১৯)
বিজ্ঞাপন
প্রসঙ্গত, হানাফি মাজহাবমতে মুসল্লি যেকোনো উদ্দেশে মসজিদে প্রবেশ করলে এবং সে পবিত্র অবস্থায় থাকলে ‘তাহিয়্যাতুল মসজিদ’ আদায় করবে। তবে সাধারণভাবে নামাজের নিষিদ্ধ সময়ে কিংবা ফরজ নামাজের ইকামত শুরু হলে অথবা খতিবের খুতবা পাঠ শুরু হয়ে গেলে তাহিয়্যাতুল মসজিদ আদায় করা থেকে বিরত থাকবে। (আল-ফিকহু আলা মাজাহিবিল আরবাআ, পৃষ্ঠা-১০২০) ‘যে নামাজের আগে সুন্নতে মুয়াক্কাদা আছে, ওই নামাজের আগে মসজিদে প্রবেশ করে সুন্নতে মুয়াক্কাদা পড়লে ওই নামাজ আর পড়তে হয় না। কারণ তখন এই সুন্নতই এই নামাজের স্থলাভিষিক্ত ও যথেষ্ট হয়।’ (মাজাল্লাতুল বুহুসিল ইসলামিয়্যাহ: ১৫/৬৭)
(কিতাবুল আছল: ১/১৩২; আলমাবসুত, সারাখসি: ১/১৫০; হালবাতুল মুজাল্লি: ২৮৫৫৮; আলবাহরুর রায়েক: ২/৩৬)

