পবিত্র কোরআনের তেলাওয়াত অতি মূল্যবান একটি আমল। এর ফজিলত সম্পর্কে কোরআন-হাদিসে অনেক বর্ণনা রয়েছে। এক হাদিসে নবীজি (স.) বলেছেন, ‘কোরআন তেলাওয়াতকারী ঈমানদারের দৃষ্টান্ত কমলালেবুর মতো; এর স্বাদও উৎকৃষ্ট, সুগন্ধও উৎকৃষ্ট। আর যে ব্যক্তি মুমিন, কিন্তু কোরআন তেলাওয়াত করে না, তার দৃষ্টান্ত খেজুরের মতো; খেতে সুস্বাদু বটে, তবে কোনো সুঘ্রাণ নেই। কোরআন তেলাওয়াতকারী পাপী ব্যক্তি সুগন্ধি ফুলের মতো, এর সুগন্ধ আছে বটে, তবে স্বাদে তিক্ত। আর যে অতি পাপী আবার কোরআনও তেলাওয়াত করে না, সে মাকাল ফলের মতো। এ ফল স্বাদেও তিক্ত, কোনো সুগন্ধও নেই।’ (সহিহ বুখারি: ৭৫৬০)
উল্লেখিত হাদিস কোরআন তেলাওয়াতের মর্যাদা বোঝানোর জন্য একটি সুন্দর উদাহরণ। কিন্তু আজানের শব্দ শোনা গেলে কোরআন তেলাওয়াত বন্ধ করে আজানের জবাব দেওয়া উত্তম। হাদিসে আজানের জবাব দেওয়ারও অনেক ফজিলতের কথা বর্ণিত হয়েছে। এমনকি আজানের জবাবে মুয়াজ্জিনের মর্যাদা লাভের সুযোগ রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: একাধিক আজান শুনলে কোনটার জবাব দেবেন?
ইসলামে মুয়াজ্জিনের মর্যাদা ও ফজিলত ঈর্ষণীয়। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল, মুয়াজ্জিনদের মর্যাদা আমাদের চেয়ে বেশি হয়ে যাবে। রাসুল (স.) বলেন, ‘তুমিও তা বলো, মুয়াজ্জিন যা বলে। তারপর আজান শেষ হলে আল্লাহর কাছে চাও, যা চাইবে দেওয়া হবে।’ (আবু দাউদ: ৫২৪)
কোরআন তেলাওয়াত করা হয় সওয়াব লাভের জন্যই, আবার আজানের জবাব দেওয়াও বিশেষ ফজিলতপূর্ণ আমল। ফুকাহায়ে কেরামের বক্তব্য হলো- আজানের পরে কোরআন তেলাওয়াত করা যাবে, তাই অল্প সময়ের জন্য তেলাওয়াত বন্ধ করে আজানের জবাব দেওয়া উত্তম। এতে তেলাওয়াত ও আজানের জবাব উভয়টিরই সওয়াব পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ।
বিজ্ঞাপন
তবে এক্ষেত্রে তেলাওয়াত অব্যাহত রাখাও জায়েজ আছে। (উয়ুনুল মাসয়িল, পৃ. ২২৩; বাদায়েউস সানায়ে: ১/৩৮৩; আলমুহিতুর রাজাবি: ১/২১৩; রদ্দুল মুহতার: ১/৩৯৮)
আবার কোরআন শেখা বা শেখানোর কাজে ব্যস্ত থাকলেও আজান চলাকালীন সময়ে তেলাওয়াত বন্ধ করতে হবে না। (রদ্দুল মুহতার: ১/৩৯৬, মাকতাবায়ে আল আশরাফিয়া; আহসানুল ফতোয়া: ২/৩৮৮ মাকতাবায়ে থানবি; হাসিয়াতুত তহতাবি; ২০৩ পৃষ্ঠা, মাকতাবায়ে আল ইত্তেহাদ)