জানাজা, কাফন-দাফন ইত্যাদি জীবিত মুসলমানদের ওপর মৃতদের অধিকার। জানাজার নামাজ ফরজে কেফায়া তথা সামগ্রিক ফরজ। যদি সমাজের একদল মানুষ মৃত ব্যক্তির জানাজা আদায় করে, সবাই দায়মুক্ত হয়ে যাবে। আর কেউ তা আদায় না করলে সবাই গুনাহগার হবে।
জানাজা নামাজে ইমামতি করার জন্য ইমামের ভেতর এমন যোগ্যতা থাকা আবশ্যক যা অন্যান্য নামাজের ক্ষেত্রেও জরুরি। যেমন- ইমাম প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া, কোরআন তেলাওয়াত বিশুদ্ধ হওয়া এবং মাসয়ালা-মাসায়েল সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: জানাজার নামাজের নিয়মকানুন, গুরুত্ব ও ফজিলত
অতএব নাবালক শিশুর জন্য জানাজা নামাজের ইমামতি করা বৈধ হবে না। হাদিস শরিফে এসেছে, মুজাহিদ (রহ.) বলেন, ‘নাবালক বাচ্চা বালক হওয়ার আগ পর্যন্ত ইমামতি করতে পারবে না।’ (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা: ৩৫০৬)
তাই অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশু জানাজার নামাজের ইমামতি করলেও তার ইমামতি ঠিক হবে না। যদি কোনো নাবালক জানাজার নামাজের ইমামতি করে ফেলে, তাহলে ওই মাইয়্যেতের জানাজা পুনরায় আদায় করে নিতে হবে। (মুসান্নাফ আবদুর রাজজাক: ২/৩৯৮; তাকরিরাতে রাফেয়ি পৃ. ৭৫; রদ্দুল মুহতার: ১/৫৭৭)
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য, জানাজার নামাজ আত্মীয় স্বজনকেই পড়াতে হবে—এমন কোনো বিশেষ নির্দেশনা ইসলামে নেই। বরং মসজিদের ইমামরাই জানাজার নামাজ পড়ানোর বেশি যোগ্য। প্রখ্যাত তাবেয়ি ইবরাহিম আন-নাখায়ি (রহ.) বলেন, ‘জানাজার নামাজ পড়াবে মসজিদের ইমামরা। তোমরা তাদের (ইমামদের) পেছনে ফরজ নামাজ পড়তে রাজি, কিন্তু জানাজা পড়তে রাজি না (এটা কেমন কথা)! (কিতাবুল আসার: ২৩৭) অন্য বর্ণনায় তাবেয়ি সালেম (রহ.), তাউস (রহ.), কায়েস (রহ.), মুজাহিদ (রহ.) ও আতা (রহ.) প্রমুখ আলেমগণ ইমাম সাহেবকে জানাজা পড়ানোর জন্য আগে বাড়িয়ে দিতেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ১১৪৩২)
তবে হ্যাঁ, মৃতের আত্মীয়দের মধ্যে কেউ যদি ইমাম থেকে বেশি যোগ্য ও বড় আলেম হন, তাহলে অবশ্যই তিনি বেশি হকদার। (তথ্যসূত্র: বাহরুর রায়েক: ২/১৮০; দুররুল মুখতার: ২/২১৯; কিতাবুল আছল: ১/৩৪৯; খুলাসাতুল ফতোয়া: ১/২২২; ফতোয়া হিন্দিয়া: ১/১৬৩)

