বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ঢাকা

জানাজার নামাজসহ ৪ আমলে নিশ্চিত জান্নাত

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ মে ২০২৩, ০৬:১০ পিএম

শেয়ার করুন:

জানাজার নামাজসহ ৪ আমলে নিশ্চিত জান্নাত

ইসলামে জানাজা, দাফন-কাফন ইত্যাদি জীবিত মুসলমানদের ওপর মৃত ব্যক্তির অধিকার। হাদিসে জানাজার নামাজের অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি কারো জানাজার নামাজ আদায় করে, সে এক ‘কিরাত’ পরিমাণ নেকি লাভ করে আর যে ব্যক্তি মৃতের জানাজার নামাজ আদায় করার সাথে তার দাফনের কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত উপস্থিত থাকে, তাহলে সে দুই ‘কিরাত’ পরিমাণ সওয়াব লাভ করবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের চেয়েও বড়।” (সহিহ বুখারি: ১/৪৪৫, কিতাবুল জানাইয; সহিহ মুসলিম: ২/৬৫২, হাদিস: ৯৪৬, কিতাবুল জানাইয)

জানাজাসহ চার আমলে নিশ্চিত জান্নাত
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) একদিন বললেন, তোমাদের মধ্যে আজ কে সিয়ামরত ছিলে? আবু বকর (রা.) বললেন, আমি। রাসুলুল্লাহ (স.) বললেন, তোমাদের মধ্যে কে আজ জানাজায় শরিক হয়েছ? আবু বকর (রা.) বললেন, আমি। তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে কে আজ দরিদ্রকে আহার দিয়েছ? আবু বকর (রা.) বললেন, আমি। তিনি বললেন, আজ তোমাদের কেউ কোনো অসুস্থকে দেখতে গিয়েছ? আবু বকর (রা.) বললেন, আমি। তখন রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, এ কাজগুলো যদি কোনো মানুষের মধ্যে একত্রিত হয়, তাহলে সে ব্যক্তি অবশ্যই জান্নাতি হবেন। (সহিহ মুসলিম: ২/৭১৩, হাদিস: ১০২৮, কিতাবুজ জাকাত)


বিজ্ঞাপন


হাদিস অনুযায়ী, রোজা, জানাজার নামাজ, গরিবকে খাওয়ানো ও অসুস্থকে দেখা—এই চারটি আমলের সমন্বয় কারো মধ্যে পাওয়া গেলে সে নিশ্চিত জান্নাতে যাবে। এটি নবীজির কথা। 

এখানে লক্ষণীয়, হাদিসে যে ৪টি ইবাদতের কথা এসেছে, ওখান থেকে তিনটিই সেবা বিষয়ক। আল্লাহ খুশি হন তাঁর সৃষ্টির সেবাতে। তাই এ ধরণের ইবাদতকে হেলা করা উচিত নয়। সুতরাং যারা ফরজে কেফায়ার অজুহাতে জানাজায় শরিক হওয়া থেকে পলায়নের মনোবৃত্তি নিয়ে থাকেন, তাদের চিন্তা করা উচিত- এ কাজে আল্লাহ তাআলা কত খুশি হচ্ছেন। আর কতটা মহান ইবাদত হলেই জান্নাতের গ্যারান্টি দেন নবীজি!

আরও পড়ুন
জানাজার নামাজের নিয়মকানুন, গুরুত্ব ও ফজিলত
৬ শ্রেণির মানুষের জান্নাতের জিম্মাদার স্বয়ং আল্লাহ

জানাজায় উপস্থিত হওয়া মৃতের অধিকার
হাদিসে জানাজার নামাজকে ‘মৃতের অধিকার’ বলা হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেন, ‘এক মুসলিমের ওপর অন্য মুসলিমের ছয়টি অধিকার রয়েছে। ১) যখন কোনো মুসলমানের সঙ্গে দেখা হয় তখন সালাম দেবে। ২) কোনো মুসলমান ডাকলে সাড়া দেবে। ৩) সে তোমার কাছে সৎ পরামর্শ চাইলে তুমি তাকে সৎ পরামর্শ দেবে। ৪) কোনো মুসলমানের হাঁচি এলে হাঁচিদাতা ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বললে জবাবে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলবে। ৫) কোনো মুসলমান অসুস্থ হলে তার সেবা-শুশ্রূষা করবে। ৬) কোনো মুসলমান মৃত্যুবরণ করলে তার জানাজায় শরিক হবে।” (সহিহ মুসলিম: ২১৬২)


বিজ্ঞাপন


পাপাচারী ব্যক্তির জানাজা
এমনকি পাপাচারী মুসলমান মৃত্যুবরণ করলেও তার জানাজা পড়তে হবে। তাই বেনামাজি, ঋণগ্রস্ত, আত্মহত্যাকারীর জানাজাও আদায় করতে হবে। তবে ইমাম বা নেতার নির্দেশনা মান্য করার জন্য পাপাচারীদের জানাজায় অংশগ্রহণ না করার সুযোগ রয়েছে। (ফতোয়া মাহমুদিয়া, খণ্ড: ৮, পৃষ্ঠা: ৬১১-৬২৫)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জানাজার নামাজের গুরুত্ব বুঝার তাওফিক দান করুন। এলাকার প্রত্যেক মুসলমানের জানাজায় উপস্থিত হওয়ার মাধ্যমে এর ফজিলত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর