শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

যশোরে বড় জনসমাগমের প্রস্তুতি আ.লীগের, উৎসবের আমেজ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০২২, ১১:৪৮ এএম

শেয়ার করুন:

যশোরে বড় জনসমাগমের প্রস্তুতি আ.লীগের, উৎসবের আমেজ

আগামী বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) যশোরের শামস-উল হুদা স্টেডিয়ামে জনসভা করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সেখানে প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। কয়েক লাখ মানুষের জমায়েতের লক্ষ্য নিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। জনসভা ঘিরে যশোর স্টেডিয়ামসহ পুরো শহরকে নতুনরূপে সাজানো হচ্ছে। নতুন উদ্যমে কাজ করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। এ উপলক্ষে যশোরে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে সাধারণ মানুষের মাঝে নতুন আশা জেগেছে। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর যশোরে দলীয় জনসভায় আসছেন সরকারপ্রধান। ফলে জনসভা জনসমুদ্রে রূপ দিতে দলের কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ের কর্মী পর্যন্ত সবাই একযোগে কাজ করছেন।


বিজ্ঞাপন


ইতোমধ্যেই স্টেডিয়ামের গ্যালারি লাল-সবুজ রঙে রাঙানো হয়েছে। বিশাল আকৃতির নৌকা বানিয়ে সেটিকে করা হচ্ছে জনসভার মঞ্চ। শহরের সড়কগুলো সংস্কার ও দেয়ালগুলোতে লাগানো হয়েছে নতুন রঙ। প্রতিনিয়ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।

আরও পড়ুন: সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদেরই থাকছেন?

প্রধানমন্ত্রীর যশোরে আগমনের বার্তায় শুধু যশোর নয়, গোটা দক্ষিণাঞ্চলের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। জনসভা সফল ও শান্তিপূর্ণ করতে প্রধানমন্ত্রীর আসার আগের দিন ও জনসভার দিন কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে থাকবে জেলা শহর। জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে গঠন করা হয়েছে বিভিন্ন উপ-কমিটি। তারা যৌথভাবে জনসভা সফলের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

jossore2


বিজ্ঞাপন


আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা ঘুরে দেখেছেন সভাস্থল, খোঁজ রাখছেন নিয়মিত। সম্প্রতি বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন সভাস্থল ঘুরে দেখে বলেন, ২৪ নভেম্বর যশোর শামসুল হুদা স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা হবে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জনসভা। জনসভা জনসমুদ্রে রূপ নেবে।

আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, আমরা মনে করছি জনসভায় পাঁচ লাখের বেশি জনসমাগম হবে। আমাদের প্রত্যাশা ওই দিন শহরে পা রাখার জায়গা হবে না। যশোর ছাড়াও খুলনা বিভাগের সবকটি জেলা ও গোপালগঞ্জ থেকে নেতাকর্মীরা আসবেন।

আরও পড়ুন: আ.লীগের তিন সংগঠনের সম্মেলন, ‘সালাম’ বেড়েছে নেতাদের

সার্বিক প্রস্তুতির নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আরও বলেন, আমাদের এই জনসভা সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সকল কাজ সুন্দরভাবে সম্পন্ন  আটটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব কমিটি তাদের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করছেন। সবার মধ্যে একটা উচ্ছ্বাস কাজ করছেন নেত্রী আসবেন বলে।

খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শোনার জন্য মানুষের যেমন ঢল নেমেছিল, ঠিক যশোরে তেমনি মানুষের ঢল নামবে। যশোরে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ঘিরে খুলনা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। খুলনা থেকে অর্ধলাখ নেতাকর্মী বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস নিয়ে যশোরের জনসভায় যোগ দেবেন বলেও জানান তিনি।

josso3

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল মজিদ বলেন, ‘নৌকার আদলে বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে। নৌকার পরিমাপ ১২০ ফুট বাই ৪০ ফুট। তবে স্টেজ করা হবে ৮০ ফুট বাই ৪০ ফুট। মঞ্চে ৭৬ ফুট বাই ১০ ফুট ব্যানার দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে ব্যানারের কাজ সম্পন্ন করতে চারুকলার শিক্ষার্থীরা কাজ শুরু করেছেন। আমি সার্বক্ষণিক জনসভাস্থলে আছি। আশা করছি, মঙ্গলবারের মধ্যে মঞ্চের কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।’

আরও পড়ুন: শুরুতেই অগোছালো সৈনিক লীগ

সড়কগুলো প্রতিনিয়ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। সেই সাথে সড়ক সংস্কারের পাশাপাশি ভবনগুলো রঙিন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর যাওয়া-আসার রাস্তা বাদ রেখে শহরের অন্যান্য সড়কে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। জনসভা ঘিরে শহরজুড়ে নিজেদের প্রচারণার ব্যানার কমিটি ছাড়াও পোস্টার করেছেন স্থানীয় নেতারা। প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানকে স্বাগত জানিয়ে ব্যানার-ফেস্টুন ও পোস্টার টানিয়েছেন দলীয় নেতারা। যশোর বিমানবন্দর থেকে যে সড়কপথে প্রধানমন্ত্রী জনসভাস্থলে পৌঁছাবেন সে পথে সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ভবনের দেয়ালে নতুন রঙ করা হয়েছে।

দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, জনসভা উপলক্ষে এরই মধ্যে পোস্টারিং, মাইকিং ও প্রচার-প্রচারণা চলছে। সভা-সমাবেশের বাইরে সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা জনসভা সফল করতে প্রতিনিয়ত প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

jossore4

গত শনিবার রাতে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার। এসময় তিনি বলেন, আগামী ২৪ নভেম্বর যশোরের জনসভাই হবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু তনয়া প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার করোনা পরবর্তী ঢাকার বাইরের প্রথম কোনো বৃহত্তম জনসভা। এরপর তিনি দেশব্যাপী দলীয় কার্যক্রমে অংশ নেবেন। সে কারণে যশোরের জনসভা ঐতিহাসিক হতে যাচ্ছে।

জনসভায় সেবা দিতে রয়েছে ৪০০ সদস্যের স্বেচ্ছাসেবক কমিটি। জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুখেন মজুমদারকে আহ্বায়ক করে শৃঙ্খলা ও স্বেচ্ছাসেবক এই উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক কমিটির সদস্যরা সমাবেশস্থল, প্রবেশমুখ ও জনসভায় আগতদের সহযোগিতা করতে শহরের প্রবেশমুখে থাকবেন বলেও জানা গেছে।

১৯৭২ সালের ২৬ ডিসেম্বর যশোরের এই স্টেডিয়ামে ভাষণ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিনের ঐতিহাসিক জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল। ৫০ বছর একই মাঠে পর ২৪ নভেম্বর জনসভায় ভাষণ দেবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অতীতের যেকোনো জনসভার চেয়ে বড় জমায়েত করতে চায় আওয়ামী লীগ।

ডব্লিউএইচ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর