শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

নগর আওয়ামী লীগে পদ পাবেন না ক্যাসিনোকাণ্ডে বিতর্কিতরা

কাজী রফিক
প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৪৩ পিএম

শেয়ার করুন:

নগর আওয়ামী লীগে পদ পাবেন না ক্যাসিনোকাণ্ডে বিতর্কিতরা
সম্রাট, খালেদ, সাঈদ, আবু কাওসার, লোকমান, রাজীব। ছবি: সংগৃহীত

২০১৯ সালে ক্যাসিনোবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানে গ্রেফতার হয়েছিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা। তাদের কেউ কেউ দলের বিভিন্ন কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদেও ছিলেন। তারা সবাই ইতোমধ্যে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। কারামুক্ত নেতারা এবার চেষ্টা করছেন পুরনো জায়গা ফিরে পেতে। দলীয় পদ-পদবির পেছনে ছুটছেন অনেকেই। তবে ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িত কোনো নেতা পদ পাবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র।

২০১৯ সালে ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই অভিযান আওয়ামী লীগের শুদ্ধি অভিযান হিসেবেও পরিচিতি পায়। সে সময় যারা গ্রেফতার হয়েছিলেন তাদের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনের পদে থাকা নেতা।


বিজ্ঞাপন


তখন গ্রেফতার হওয়া আলোচিত নেতাদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা জি কে শামীম, কৃষক লীগ নেতা শফিকুল আলম, মোহামেডান ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়া, গেন্ডারিয়ার আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক এনু, রুপম ভুঁইয়া এবং অনলাইন ক্যাসিনোর মূল হোতা সেলিম প্রধান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা আবু কাওসার, কাউন্সিলর মমিনুল হক সাঈদ, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারেকুজ্জামান রাজীব, মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান মিজান।

আরও পড়ুন

আওয়ামী লীগে গুরুত্ব বাড়ছে আমলাদের!

এমপি-মন্ত্রী হয়েই ব্যস্ততা বেড়েছে আওয়ামী লীগ নেতাদের

আলোচিত-সমালোচিত এই নেতাদের সবাই জেল খেটে বের হয়েছেন, রয়েছেন জামিনে। টানা তিন বছর জেলে থেকে জামিন পাওয়া হাবিবুর রহমান মিজান আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে এখন নিয়মিত। ঢাকা-১৩ আসনের যেকোনো অনুষ্ঠানে দেখা যায় তাকে। এমনকি নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলার জনসভায়ও ছিলেন আওয়ামী লীগ থেকে পদ হারানো এই নেতা।

জেলে থাকা অবস্থায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের নামে নানা শোডাউন দেখা গেছে। জামিনে মুক্ত হওয়া এই নেতা নিজে সামনে থেকেও নানা সময় শোডাউন করেছেন।


বিজ্ঞাপন


RR
ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগ করেন ইসমাইল হোসেন সম্রাট। ছবি: সংগৃহীত

নগর দক্ষিণের নেতারাই চান না বিতর্কিত এই নেতা পুনরায় কোনো পদে ফিরে আসুক। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের এক নেতা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা মেইলকে বলেন, 'সম্রাট ভাইকে আমরা কেউ চাই না। এটা অপ্রিয় হলেও সত্য। তিনি না এলে আমার কোনো লাভ-ক্ষতি নেই। কিন্তু নগরের নেতারা তাকে চান না। কারণ তিনি বিতর্কিত। তিনি আবারও কোনো পদে এলে সংগঠন বিতর্কিত হতে পারে।'

যুবলীগে একই ভাবনা রয়েছে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও জি কে শামীমকে কেন্দ্র করে। নগর দক্ষিণ যুবলীগ ও উত্তরের ভাবনার মধ্যেও ফারাক নেই।

আরও পড়ুন

যুব মহিলা লীগ চলে সাবেকদের ইশারায়!

আমলা থেকে আওয়ামী লীগে তারা

ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেফতার নেতাদের মধ্যে উত্তর যুবলীগের তৎকালীন পদধারী নেতাও ছিলেন। তাদের একজন তারেকুজ্জামান রাজীব৷ সাবেক এই কাউন্সিলর যেন যুবলীগের কোনো পদে ফিরতে না পারেন, সে বিষয়ে নগর উত্তর যুবলীগ সজাগ আছে বলে বর্তমান কমিটির একাধিক নেতা জানিয়েছেন।

এদিকে ক্যাসিনোকাণ্ডের বিতর্কিতদের অনেকেই এখন সহযোগী সংগঠন ছেড়ে মূল দলে আসার চেষ্টায় রয়েছেন। বিষয়টি সম্পর্কে অনগত আছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। ঢাকা মেইলকে তিনি জানান, ঈদের পর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ কমিটি করতে যাচ্ছে। তবে তাতে ঠাঁই হবে না ক্যাসিনোকাণ্ডের বিতর্কিতদের।

শেখ বজলুর রহমান বলেন, 'আমাদের সংগঠনে ছিল এমন কেউ এই তালিকায় পড়েনি। তবে নতুন করে অনেকেই আসতে চাইবে। আমরা এ ব্যাপারে সতর্ক আছি। বিতর্কিত কাউকে জায়গা দেওয়া হবে না।'

কারই/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর