শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

আওয়ামী লীগে গুরুত্ব বাড়ছে আমলাদের!

কাজী রফিক
প্রকাশিত: ২৯ জুলাই ২০২৩, ০৮:২১ এএম

শেয়ার করুন:

আওয়ামী লীগে গুরুত্ব বাড়ছে আমলাদের!

আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ‘আমলা’ শব্দটি নতুন নয়৷ ক্ষমতাসীন দলের হয়ে অনেক আমলাই সংসদ সদস্য হয়েছেন। অনেকেই আবার দীর্ঘ সময় সংসদ সদস্যের পাশাপাশি মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন এবং করছেন। বর্তমানেও চলমান আছে সেই প্রক্রিয়া। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘সরকার এবং দলকে সমৃদ্ধ’ করতেই আমলা ও ব্যবসায়ীদেরকে দলে জায়গা দেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের দিকে তাকালে দেখা যায়, দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক একজন সাবেক আমলা। যিনি সরকারের কৃষিমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলনের আগে দলটির সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য আলোচনায় ছিলেন তিনি।


বিজ্ঞাপন


এছাড়া আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদও সাবেক আমলা।

প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, সরকারপ্রধানের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও সরকারের সাবেক আমলা।

গত নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন প্রার্থী থাকলেও আসনটি থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে একজন আমলাকে। ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়নে সংসদ সদস্য হওয়া মঞ্জুর হোসেন বুলবুল রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন।


বিজ্ঞাপন


একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ। এছাড়া আরও বেশি কয়েকজন সংসদ সদস্য সাবেক আমলা।

সম্প্রতি সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার সক্রিয় হয়েছেন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা হতে পারেন বলে আলোচনা রয়েছে। আবার এইচ টি ইমামের স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন বলেও আলোচনা রয়েছে।

awami-league

সবশেষ নেত্রকোণা-৪ আসন উপ-নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ। মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সাজ্জাদুল হাসানকে। তিনি সরকারের একজন সাবেক আমলা। সাজ্জাদুল হাসানকে মনোনয়ন দেওয়ার পর আওয়ামী লীগের মাঝেই প্রশ্ন উঠেছে, দলীয় নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে আমলাদের কেন মনোনয়ন দেওয়া হলো?

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পূর্ব রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা না থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই আমলারা হুট করে এসে রাজনীতিতে বড় পদে আসীন হচ্ছেন। এতে করে তৃণমূলের ত্যাগী নেতারা বঞ্চিত হচ্ছেন। দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত আসায় তাদেরও বলার কিছু থাকে না।

তবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের মতে, সরকার ও দলকে সমৃদ্ধ করতেই এই প্রক্রিয়া। এতে দলীয় নেতাকর্মীদের ক্ষুদ্ধ হওয়ার কিছু নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ঢাকা মেইলকে বলেন, যারা আমাদের দলের হয়ে দীর্ঘদিন আন্দোলন, সংগ্রাম করে যাচ্ছেন, তাদের জায়গায় যখন দেখা যায়, সেভাবে রাজনীতি করেননি, কিংবা বিভিন্ন জায়গায় সরকারের বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন, ব্যবসায়ী তাদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হয়, তখন তো দলের নেতাকর্মীরা অনেক সময় ব্যথিত হন। কিন্তু দলে কিংবা সংসদে তো বিভিন্ন ধরণের লোকের প্রয়োজন হয়।

তিনি বলেন, যাদের অভিজ্ঞতা আছে, সরকার এবং দলের কাজে ব্যবহারের জন্য তাদেরকে নিতে হয়। এটা একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সরকার এবং দলকে সমৃদ্ধ করতে যারা এক্সপার্ট আছেন, তাদেরকে নেওয়া হচ্ছে।

নেত্রোকানা-৪ আসনের মনোনয়ন ঘোষণার সময় এ সংক্রান্ত প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, কে আমলা, কে ব্যবসায়ী, এত কিছু দেখতে গেলে তো... এদেশে অনেক আমলাই আছেন, অনেক ব্যবসায়ী আছেন, এরা কি রাজনীতি করতে পারবে না?

কারই/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর