শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

Keto Diet: কিটো ডায়েট কেন ক্ষতির কারণ হতে পারে?

লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:০৪ এএম

শেয়ার করুন:

Keto Diet: কিটো ডায়েট কেন ক্ষতির কারণ হতে পারে?

বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষের জীবন কর্মব্যস্ত। এই কর্মব্যস্ত জীবন যাপিত হচ্ছে বিভিন্ন অস্বাস্থ্যকর খাবারের মাধ্যমে। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত বিভিন্ন রকম খাবার মানুষকে করে তুলছে অস্বাভাবিক মাত্রায় স্থূল। এর ফলে শরীরে বাসা বাঁধছে বিভিন্ন রোগব্যাধি। 

এমন অবস্থায় বেশিরভাগ মানুষই চান কম সময়ে নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে। স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে রোগাক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পর শুরু করেন ডায়েট। এতে কেউ কেউ ফল পান আবার কেউ মুখোমুখি হন আরও বেশি শারীরিক জটিলতায়। 


বিজ্ঞাপন


keto

প্রতিটি মানুষের শরীর আলাদা ও সমস্যাগুলোও ভিন্ন। তাই ডায়েট করার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিৎ। কিন্তু বর্তমানে ডায়েট সম্পর্কে সঠিক ধারণা না নিয়ে শুধু ইন্টারনেটের তথ্যের ভিত্তিতে অল্প সময়ে ওজন কমাতে কিটো ডায়েটে আগ্রহী হয়ে উঠছেন অনেকেই। কেবল সামান্য ধারণা নিয়ে ওজন হ্রাস করার জন্য এই ডায়েট মেনে চললে থাকতে পারে মৃত্যু ঝুঁকিও।

আরও পড়ুন- 
ওজন কমায় চামড়া ঝুলে গেলে কী করবেন?

একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের দৈনন্দিন শক্তি বেশিরভাগই আসে কার্বোহাইড্রেট থেকে।  বাকি ১৫-২০ শতাংশ প্রোটিন এবং ২৫-৩০ শতাংশ পূরণ হয় ফ্যাট থেকে। তবে কিটো ডায়েটে এই মাত্রা ভিন্ন। একজন ব্যক্তি যখন কিটো ডায়েট করেন, তখন তিনি দৈনন্দিন ৭৫ শতাংশ গ্রহণ করে ফ্যাট থেকে, ২০ শতাংশ প্রোটিন বা আমিষের মাধ্যমে এবং বাকি  মাত্র ৫ শতাংশ পুষ্টি গ্রহণ করে কার্বোহাইডেট-শর্করা থেকে। এমন ধরনের পুষ্টি তালিকা সবার জন্য কল্যাণকর নয়।


বিজ্ঞাপন


keto

কিটো ডায়েট মূলত তৈরি করা হয়েছিল এপিলেপসি বা মৃগী রোগীদের জন্য। মৃগী রোগীদের পুষ্টি চাহিদা মেটানোর জন্য এই ডায়েট চার্টে যুক্ত করা হয় উচ্চ ফ্যাট, অধিক প্রোটিন এবং অল্প কার্বোহাইড্রেড। তবে পরবর্তীতে আরও গবেষণার পর এই ডায়েট মৃগী রোগীদের জন্যও বাতিল করা হয়। 

আরও পড়ুন- 
১৫ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায়

কিটো ডায়েট করার ফলে হয়তো সাময়িকভাবে আপনার ওজন হ্রাস হচ্ছে এবং শরীর থেকে অতিরিক্ত চর্বি ঝড়ে গিয়ে কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন এই ডায়েট অনুসরণ করলে রক্তের সাধারণ পিএইচ লেভেল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এর ফলে রক্তে প্রাথমিকভাবে কিটোসিস এবং পরবর্তী সময়ে কিটোএসিডোসিস দেখা দেয়। 

keto

প্রাথমিকভাবে তেমন কোনো সমস্যা না হলেও কয়েক সপ্তাহ পর দুর্বল বোধ করা, মাথাব্যথা, শরীর কাঁপা, বুক ধড়ফড়, বমি বমি ভাবসহ কাজে মনোযোগ ধরে রাখতে না পারা এবং ভুলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। সেই সাথে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস, মেজাজ খিটখিটে বা হঠাৎ রেগে যাওয়া, সারা দিন পানির পিপাসা পাওয়াসহ ইত্যাদি পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। 

আরও পড়ুন- 
উচ্চতা অনুযায়ী ওজন কত হওয়া দরকার (চার্ট)

অধিক চর্বি ও প্রোটিন গ্রহণের কারণে ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা যেমন থাকে অপর প্রান্তে কিটো ডায়েটে ফাইবারের পরিমাণ কম থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্যের মতন সমস্যা দেখা দেওয়াটাও স্বাভাবিক। এছাড়াও গর্ভবতী নারী, দুগ্ধদানকারী মা, হরমোনাল ইমব্যালেন্স আছে এমন ব্যক্তি, আর্থ্রাইটিসের রোগী এমন ব্যক্তিদের জন্য কিটো ডায়েট অন্তত ঝুঁকিপূর্ণ। না জেনে বাড়ন্ত বয়সে এই ডায়েট অনুসরণ করলে অনেক মেয়ের ক্ষেত্রেই ঋতুস্রাবের সমস্যা হয় এবং পরবর্তী সময়ে বাচ্চা ধারণ ক্ষমতা হ্রাস হতে পারে। এছাড়াও প্যানাক্রিয়াসের জটিলতা, হজম শক্তি কমে যাওয়া, ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যাওয়া, চুল পড়ে যাওয়ার মতো সমস্যার কারণ হতে পারে কিটো ডায়েট। 

keto

তাই না জেনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ব‍্যতীত কোনো বয়সেই কারো জন্য কিটো ডায়েট অনুসরণ করা উচিৎ নয়। বর্তমানে অনেকেই কেবল ফেসবুক ইউটিউবের তথ্যের ওপর নির্ভর করে নিজেদের জন্য এই ডায়েট প্রয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। নিজের শরীরের চাহিদা না জেনে কিটো ডায়েট করা একটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের থেকে কম কিছু না। একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত সুসম খাদ্য গ্রহণ ও শরীর চর্চা করলে সু-স্বাস্থ্য লাভ করা কঠিন কিছু নয়।

এনএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর