লিভারের সমস্যা সারে না, এমন ভুল ধারণা আছে অনেকেরই। সঠিক সময়ে রোগ চিহ্নিত করা গেলে, চিকিৎসার মাধ্যমে লিভারের অসুখ সারিয়ে তোলা সম্ভব। লিভারের সমস্যার শুরুটা হয় ফ্যাটি লিভার দিয়ে। এরপর ধীরে ধীরে তা জটিল সমস্যায় পরিণত হয়। চিকিৎসার পরিভাষায় যাকে ‘লিভার সিরোসিস’ বলে।
সচেতনতার অভাব, রোজকার জীবনযাপনে নানা অনিয়মের কারণে লিভারের রোগ এখন অনেক দেরিতে ধরা পড়ে। লিভার ভালো রাখতে সবার আগে খাওয়াদাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ আনা জরুরি। রোজকার খাবার পাতে এমন কিছু খাবার বা পানীয় থাকে যা লিভারকে ছারখার করে দেয়।
বিজ্ঞাপন
কিছু পানীয় লিভার ভালো রাখতে সাহায্য করে। আবার কিছু পানীয় লিভারের ক্ষতি করে। চলুন এসম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই-

বিটরুট ও বেরির স্মুদি:
লিভার ভালো রাখতে খেতে পারেন বিটরুট ও বেরির স্মুদি। বিটরুটে থাকা বিট্যালেন্স এবং বেরিতে থাকা অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট লিভারের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এজন্য লাগবে- অর্ধেক বিট (সেদ্ধ বা কাঁচা টুকরো করে কাটা), কালো জাম বা কালো আঙুর অথবা বেদানা, অর্ধেক গাজর, আধা কাপের মতো পানি বা কাঠবাদামের দুধ, এক চামচ লেবুর রস, এক কাপ পুদিনা পাতা। পুদিনা ছাড়া সব উপকরণ ব্লেন্ডারে দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এরপর ওপরে পুদিনা পাতা ছড়িয়ে খান।
বিজ্ঞাপন
হলুদ ও আনারসের স্মুদি:
হলুদে থাকা কারকিউমিন আর আনারসের প্রদাহনাশক উপাদান ব্রোমালিন লিভারের সমস্যা কমাতে সহায়ক। এটি শরীরের প্রদাহ নাশ করে, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে। হলুদ ও আনারসের স্মুদি বানাতে লাগবে এক কাপের মতো আনারসের টুকরো, আধা চামচ হলুদ গুঁড়ো, ১ ইঞ্চি কাঁচা হলুদ, আধা ইঞ্চি আদা, আধা কাপ নারকেলের পানি, ১ চামচ লেবুর রস, এক চিমটি গোলমরিচের গুঁড়ো। সব উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ডারে মিশিয়ে নিতে হবে। রোজ সকালে বা বিকালে এই স্মুদি পান করলে লিভার ভাল থাকবে।

আপেল ও আদার রস:
নিয়মিত এই পানীয় পান করলে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা দূর হবে। দীর্ঘ সময় ধরে যারা লিভারের রোগে ভুগছেন, তাদের জন্যও এই পানীয় খুব উপকারি। আপেল ও আদার স্মুদি বানাতে লাগবে— ১টি গোটা আপেল, ১ ইঞ্চি আদা, অর্ধের শসার টুকরো, আধ কাপ পানি, ১ চামচ লেবুর রস। সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে ব্লেন্ড করে রোজ সকালে খালি পেটে খান। এতে লিভারের যেকোনো রোগ দূর হবে।
আরও পড়ুন-
লিভারের জন্য কোন কোন পানীয় ক্ষতিকর?
চিনিযুক্ত যেকোনো পানীয় যেমন- সোডা, নরম পানীয়, এনার্জি ড্রিঙ্ক লিভারের ক্ষতি করে।
প্যাকেটজাত ফলের রস, চা বা কফি বেশি খেলে ফ্যাটি লিভার হতে বাধ্য।
মদ্যপান বেশি করলেও অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে।

বাজারে আজকাল নানারকম ডায়েট ড্রিঙ্কস পাওয়া যায়। অনেকেই মনে করেন, চিনি না থাকায় এগুলো নিরাপদ। আসলে এই ধরনের পানীয়তে থাকে কৃত্রিম শর্করা অ্যাসপার্টাম, যা লিভারের জন্য মোটেও ভালো নয়। নিয়মিত ডায়েট সোডা বা ডায়েট ড্রিঙ্কস খেতে থাকলেও ফ্যাটি লিভারের সমস্যা হতে পারে।
মিষ্টি দই বা ক্রিম দেওয়া পানীয়ও লিভারের জন্য ক্ষতিকর। এগুলি বেশি পরিমাণে খেলে রক্তে স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ক্যালোরি বেড়ে যায়। যা লিভারে অতিরিক্ত মেদ জমার কারণ হতে পারে।
এনএম

