গ্রীষ্মকাল মানেই যেনো আমের মৌসুম। বাজারে যত জাতের আম আসে—ল্যাংড়া, হিমসাগর, গোপালভোগ, আম্রপালি, ক্ষিরসাপাত—তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় থাকে একটি নাম: ল্যাংড়া। অনেকেই একে বলেন ‘আমের রাজা’, কেউ আবার বলেন, হিমসাগরের কাঁধে সেই মুকুট। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়— ল্যাংড়া আমই কি আসল রাজা?
প্রতিবছর যখন বাজারে আম আসতে শুরু করে তখন হিমসাগর প্রথম দিকে আসে। আর তার হাত ধরে বাজারে আসে ল্যাংড়াও। জানুন ল্যাংড়া আমের বৈশিষ্ট্য।
বিজ্ঞাপন

ল্যাংড়া আমের বৈশিষ্ট্য
উৎপত্তি ও পরিচিতি
ল্যাংড়ার উৎপত্তি ভারতের বেনারস অঞ্চলে হলেও বাংলাদেশে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও দিনাজপুরে এটি ব্যাপকভাবে চাষ হয়।
বিজ্ঞাপন
এটি একটি ঐতিহ্যবাহী আমের জাত, যা বহু প্রজন্ম ধরে বাঙালির পছন্দের তালিকায় শীর্ষে।

স্বাদ ও গঠন
ল্যাংড়া আমের স্বাদ তীব্র মিষ্টি, গন্ধে সুগন্ধি ফুলের মতো, খেলে মুখে দীর্ঘ সময় গন্ধ লেগে থাকে।
এর মাংস ঘন ও আঁশহীন, যা খেতে একেবারে মসৃণ।
চামড়া সবুজ রঙের, অনেক সময় পাকলেও তেমন হলুদ হয় না—এটাই একে আলাদা করে।

প্রাপ্তির সময়
জুন মাসের শেষ থেকে জুলাইয়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত পাওয়া যায়। মৌসুম খুব দীর্ঘ নয়, তাই এর প্রতি আগ্রহ বেশি।
ল্যাংড়া কি আমের রাজা?
হ্যা — অনেকের মতে ল্যাংরা আমই আমের রাজা। কারণ-
অতুলনীয় স্বাদ ও গন্ধ – একবার খেলে বারবার খেতে ইচ্ছে করে।
আরও পড়ুন: কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো আম চেনার উপায়
আঁশহীনতা – খাওয়ার সময় কোনও ঝামেলা নেই।
প্রচলন ও জনপ্রিয়তা – গ্রাম থেকে শহর, দেশের ভেতরে বা বাইরে—সব জায়গায় ল্যাংরার চাহিদা আকাশচুম্বী।
বিশ্বাসযোগ্যতা – অধিকাংশ পুরনো আমপ্রেমীই স্বীকার করেন ‘ল্যাংড়ার মতো আর কিছু হয় না।’

তবে হিমসাগরও পিছিয়ে নয়...
অন্যদিকে, অনেকে হিমসাগরকে ‘আমের রাজা’ বলে থাকেন, কারণ তার রঙ, ঘ্রাণ ও দ্রুত মিষ্টতা অনেকের বেশি পছন্দ। হিমসাগরের মসৃণতা ও বাহ্যিক সৌন্দর্য অনেকের কাছে বেশি আকর্ষণীয়।
আরও পড়ুন: মিষ্টি আম চেনার উপায়
তবে ল্যাংড়ার ক্ষেত্রে একটা প্রাকৃতিক স্বাদ, ঐতিহ্য, এবং স্থানীয়তার একটা আবেগ কাজ করে—যা হিমসাগরের চেয়ে অনেক বেশি ভোক্তামনে জায়গা করে নেয়।
তর্কের রাজা কে—ল্যাংড়া না হিমসাগর?
এর উত্তর হয়তো নির্ভর করে ব্যক্তিগত পছন্দ, অঞ্চলভিত্তিক চাষ এবং স্বাদের ভিন্নতায়। তবে এতটুকু নির্দ্বিধায় বলা যায়—ল্যাংড়া আম বাংলাদেশে ‘আমের রাজা’ উপাধি পাওয়ার সবচেয়ে যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী। কেননা, স্বাদে, গন্ধে আর ঐতিহ্যে সত্যিকারের রাজকীয় আম এটি।
এজেড

