সুস্থ থাকতে ফল খাওয়ার বিকল্প নেই। কিন্তু ফল খাওয়ার সঠিক নিয়ম অনেকেই জানেন না। যখন তখন ফল খান। এতে করে ফলের পুষ্টিগুণ যেমন মেলে না, তেমনি বিভিন্ন রোগে ভোগার আশঙ্কা থাকে। তাই জানুন ফল খাওয়ার সঠিক নিয়ম ও সময়।
কখন ফল খাওয়া ক্ষতিকর?
বিজ্ঞাপন
ফল যদি আপনি প্রোটিন বা শর্করার সঙ্গে থান, তবে হজমের সমস্যা হতে পারে। কারণ, ফল হল প্রাকৃতিক ভাবে হালকা আর সহজপাচ্য খাবার। কিন্তু প্রোটিন এবং শর্করা হল ভারী। ওই ধরনের খাবার হজম হতে বেশি সময় লাগে। এখন যদি ভারী খাবারের সঙ্গে ফল খাওয়া হয় তবে প্রোটিন এবং শর্করার পাশাপাশি ফলও পাকস্থলীতে থেকে যাবে বেশি সময় ধরে।

ফল যদি প্রোটিন এবং শর্করার সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ পাকস্থলীতে থেকে যায়, তাতে দুই রকম সমস্যা হতে পারে। এক, পাকস্থলী থেকে যে নানারকম অ্যাসিডের ক্ষরণ হয়, তার সংস্পর্শে এসে ফল অ্যাসিডিটি, গ্যাসের সমস্যা, বদহজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে। দুই, ফল যখন হজম হবে, তখন যে প্রোটিন এবং শর্করা হজম হল না, সেগুলোকে সরাসরি পাঠিয়ে দেবে ক্ষুদ্রান্ত্রে। তাতে সমস্যা আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে।
বিজ্ঞাপন
ভরা পেটে ফল খেলে কী কী ক্ষতি হতে পারে?
১. ফলের জারণ: বিপাকতন্ত্রে যদি বেশি ক্ষণ ফল থেকে যায়, তবে তা শরীরের ভেতরেই জারিত হতে শুরু করে। আঙুর দিয়ে এর একটা সহজ উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। আঙুর যদি বাইরে ফেলে রাখা হয়, তবে খেয়াল করে দেখবেন, তা মজে যায়, আঙুরের রস জারিত হয়ে তৈরি হয় ঝাঁঝালো ওয়াইন। শরীরের ভেতরের তাপমাত্রায় এবং আরও নানা কারণে ওই প্রক্রিয়া আরও দ্রুত হয় পরিপাকতন্ত্রের ভিতরে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, তা থেকে গ্যাস, অ্যাসিডিটি, এমনকি খাদ্যে বিষক্রিয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

২. পুষ্টিগুণে ঘাটতি: ফলকে যদি প্রোটিন এবং শর্করার সঙ্গে খাওয়া হয়, তবে শরীর খাবারে থাকা আয়রন এবং ক্যালশিয়াম পুরোপুরি নিতে পারে না। ফলে পুষ্টির ঘাটতি হয়। নিয়মিত ফল খেয়েও তৈরি হতে থাকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা সমস্যা।
কখন ও কীভাবে ফল খাওয়া উচিত?
কিছু নিয়ম মেনে চললে ফলের পুষ্টিগুণ পুরোটাই নিতে পারবে শরীর।

১. সঠিক সময়ে খান
‘খালি পেটে জল আর ভরা পেটে ফল’ প্রবাদবাক্য খাটছে না এখন। বরং পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ফলের পুরো পুষ্টি পেতে ফল খান খালি পেটেই। দুইটি খাবারের মাঝের সময়েও ফল খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু কখনওই পেট ভর্তি খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বা খাবারের সঙ্গে ফল খাওয়া উচিত নয়।
২. বাদাম বা বীজশস্যের সঙ্গে খান
ফলে থাকা ফ্রুকটোজ়, সুক্রোজ জাতীয় চিনি বা গ্লুকোজ় অনেক সময় রক্তে আচমকা শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই ফল খাওয়ার সময় তার সঙ্গে, কাঠবাদাম, আখরোট, তিসি বীজ, কুমরোর সবুজ বীজ, সূর্যমুখীর বীজ বা চিয়া বিজের সঙ্গে খেতে পারেন। স্বাদের জন্য উপরে গোলমরিচ বা দারচিনি গুঁড়া ছড়িয়ে নিতে পারেন।
৩. নাস্তা হিসেবে ফল খান
দুইটি বড় খাবার, যেমন প্রাতরাশ আর দুপুরের খাবার বা মধ্যাহ্নভোজ আর নৈশভোজের মাঝে প্রায় প্রত্যেকেই হালকা নাস্তা খেয়ে থাকেন। নাস্তা হিসেবে সকাল ১১টা নাগাদ বা বিকাল ৪টার সময় ফল খাওয়া যেতে পারে। তবে ডায়াবিটিস থাকলে এমন ফল খাবেন, যার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম।
এজেড

