ডায়াবেটিস একটি দুরারোগ্য ব্যাধি। এই রোগের রোগীদের অনেক নিয়মের মধ্যে থাকতে হয়। এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধলে তা চিরস্থায়ী হয়। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসকদের চলতে হয় নিয়ম মেনে। খাদ্যাভ্যাস আর জীবনযাপন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
ডায়াবিটিস একটি ঝক্কির অসুখ। এই রোগকে বশে না রাখতে পারলেই বিপদ! তাই সুগার কন্ট্রোল রাখতে হবে। আর এই কাজে সাফল্য পেতে চাইলে সবার প্রথমে কয়েকটি পরিচিত খাবার এবং পানীয়ের থেকে দূরত্ব বাড়িয়ে নিন। নইলে কিন্তু শরীরের হাল বেহাল হতে সময় লাগবে না।
বিজ্ঞাপন
এবার আপনার মাথায় প্রশ্ন আসতেই পারে, ঠিক কোন কোন খাবার এবং পানীয় ডায়াবিটিস রোগীদের শরীরের ভয়াবহ ক্ষতি করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে? আর সেই উত্তর জানতে চাইলে বিস্তারিত পড়ুন।
ফলের রস খেলেই সমস্যা
অনেক ডায়াবিটিস রোগী শরীরের হাল ফেরাতে নিয়মিত ফলের রস খান। আর এই ভুলটা করেন বলেই তাদের সুগার লেভেল ঊর্ধ্বমুখী হয়। কারণ ফলের মধ্যে ফাইবার থাকলেও ফলের রসে তা অনুপস্থিত থাকে। যার ফলে ফ্রুট জুস খেলে চট করে বেড়ে যায় সুগার। তাই ডায়াবিটিস রোগীদের এই পানীয়ে চুমুক দিতে বারণ করেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত, বোতলবন্দি কোনও ফলের রস তো খাওয়াই চলবে না। এই ভুলটা করলে কিন্তু বড়সড় সমস্যার ফাঁদে পড়ে কষ্ট পাবেন। তাই আজ থেকেই এই বিষয়টা মাথায় ঢুকিয়ে নিন।
বিজ্ঞাপন
বিপদের নাম বিরিয়ানি, রোল, চাউমিন
বাঙালি হল খাদ্যরসিক জাতি। তাই তো আমাদের মধ্যে অনেকেই নিয়মিত ফাস্টফুড খেয়ে রসনাতৃপ্তি করেন। এমনকী ডায়াবিটিস রোগীদের একাংশও কোনও বারণ না শুনে বিরিয়ানি, চপ, সিঙারা, রোল, চাউমিন, বার্গার, পিৎজার মতো খাবার নিয়মিত খান। আর এই কারণেই তাদের সুগার লেভেল চট করে বেড়ে যায়।
আসলে যেকোনও ফাস্টফুড হল তেল এবং নুনের ভাণ্ডার। আর এই দুই উপাদান কিন্তু ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য খুবই ক্ষতিকর। শুধু তাই নয়, এসব খাবারের ক্যালোরি ভ্যালুও অনেকটাই বেশি। যার ফলে ফাস্টফুড খেলেই বাড়ে সুগার। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে আজ থেকেই এসব খাবারকে ডায়েট থেকে সরিয়ে দিন।
আরও পড়ুন: খালি পেটে পানি পান করলে এসব রোগ থেকে মুক্তি মেলে
কেকের থেকে দূরে থাকুন
রাস্তায় বেরিয়ে খিদে পেতেই পারে। আর এই সময়ই অনেক ডায়াবিটিস রোগী চট করে কেক কিনে খেয়ে নেন। আর এই ভুলটা করেন বলেই তাঁদের সুগার লেভেল এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে যায়।
এই প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা জানালেন, প্যাকেটবন্দি সব কেকেই রয়েছে চিনির ভাণ্ডার। এমনকি এই মিষ্টি খাবারে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটও মেশানো থাকে। আর এসব কারণেই কেক খেলে হুট করে বেড়ে যায় সুগার। তাই ডায়াবিটিসে ভুক্তভোগীরা যেন তেন প্রকারেণ কেকের থেকে দূরে থাকুন।
সর্বনাশা কোল্ড ড্রিংকস
তপ্ত গরমে গলায় ঠান্ডা কোল্ড ড্রিংকস ঢেলেই শান্তির নিশ্বাস ফেলছে বঙ্গবাসী। এমনকি বহু ডায়াবিটিস রোগীও দাবদাহের দোহাই দিয়ে ঠান্ডা পানীয়ে দিচ্ছেন চুমুক। আর এই ভুলটা করছেন বলেই শরীরের বেজে যাচ্ছে বারোটা। কারণ কোল্ড ড্রিংকস হল একটি সুগারি ড্রিংকস। অর্থাৎ এই পানীয়ে প্রচুর পরিমাণে মিষ্টি মেশানো থাকে। শুধু তাই নয়, এতে এমন কিছু রাসায়নিক রয়েছে যা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। আর এসব সমস্যার কথা মাথায় রেখেই মধুমেহ রোগীদের কোল্ড ড্রিংকস খেতে বারণ করেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রসেসড মিট খেলেই বিপদ
হ্যাম, বেকন, সসেজের মতো বিদেশি খাবার তৈরির মূল উপকরণ হল প্রক্রিয়াজাত মাংস। আর এই মাংস কিন্তু ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। কারণ প্রসেসড মিট খেলে সুগার তো বাড়েই, সেই সঙ্গে একাধিক অঙ্গের গুরুতর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তাই হেসেখেলে জীবন কাটাতে চাইলে যত দ্রুত সম্ভব এই মাংস খাওয়ার লোভ সামলে নিন। আশা করছি, তাতেই আপনার সুস্থ থাকার পথ প্রশস্থ হবে।
এজেড