আজ বড়দিন মানে, ক্রিসমাস। খ্রিস্ট ধর্মের মানুষের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। বিশ্বজুড়ে সবার কাছে উৎসবের একটি দিন এটি। বড়দিনের শুভেচ্ছা জানাতে সবসময় যে কথাটি বলা হয় তা হলো- ‘মেরি ক্রিসমাস’। কেউ যদি ‘হ্যাপি ক্রিসমাস’ বলেও ফেলেন তখন অন্যরা ভুল ধরিয়ে দিয়ে বলেন, হ্যাপি নয়, বরং মেরি হবে। বছরের পর বছর এমন রীতিই চলে আসছে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন- মাছ ভাজার আগে কেন লবণ-হলুদ মাখানো হয়?
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, কেন বড়দিনের শুভেচ্ছা জানাতে হ্যাপির বদলে মেরি শব্দটি ব্যবহার করা হয়। এর পেছনে কি কোনো ব্যাখ্যা রয়েছে?

বিজ্ঞাপন
ক্রিসমাসের আগে থেকে হ্যাপি শব্দটি কিন্তু পুরোপুরি বাদ পড়েনি। ইংল্যান্ডে এখনও ব্যাপক হারে ক্রিসমাসের পূর্বে ‘হ্যাপি’ ব্যবহার করা হয়। এমনকী ব্রিটেনের রানি নিজেও বড়দিনের শুভেচ্ছা জানাতে ‘হ্যাপি ক্রিসমাস’ই বলেন। এর কারণ কী?
রানির মতে, ‘মেরি’ যথেষ্ট পরিমাণে ভদ্র শব্দ নয়। এমনকী ইংল্যান্ডের কিছু স্বঘোষিত সম্ভ্রান্ত পরিবার এখনও ‘মেরি’ শব্দটি ব্যবহার করে না। তাদের মতে, এটি অসভ্য গুণ্ডাদের ভাষা। তার বদলে ‘হ্যাপি’ শব্দটি ভদ্রলোকের ব্যবহার করার উপযুক্ত। সে দেশের অনেক চার্চেও সেই রীতিই চলছে।

তবে জেনে অবাক হবেন, ‘মেরি ক্রিসমাস’-এর পিছনেও রয়েছে ইংল্যান্ডের চার্চের ভূমিকাই। সাধারণ মানুষের মধ্যে খ্রিস্টধর্ম জনপ্রিয় করার জন্যই নাকি, পাদ্রিদের উদ্যোগে একসময় ‘হ্যাপি’র বদলে ক্রিসমাসের আগে ‘মেরি’ বসানো হয়।
সহজ ভাষায় বলতে গেলে, ‘মেরি ক্রিসমাস’ একেবারে সাধারণ মানুষের ভাষা। আর ‘হ্যাপি ক্রিসমাস’ তুলনায় রক্ষণশীলদের শুভেচ্ছাবার্তা হিসাবেই থেকে গিয়েছে ইংল্যান্ডে।

তবে ১৫৩৪ সালে বিশপ জন ফিশার একটি চিঠি লিখেছিলেন ক্রোমওয়েলকে। সেখানে ‘মেরি ক্রিসমাস’ই লেখা হয়েছিল।
আরও পড়ুন- জন্মদিনে কেন কেক কাটা হয়?
উনিশ শতকের গোড়া থেকেই ইংল্যান্ড-সহ ইউরোপের নানা জায়গায় ‘মেরি ক্রিসমাস’ই শুভেচ্ছাবার্তা হিসাবে জনপ্রিয় হয়ে যায়। পরবর্তীতে আমেরিকাতেও এই রীতি ছড়িয়ে পড়ে। ক্রিসমাস-কার্ডে ব্যাপক ভাবেই লেখা হতে থাকে ‘মেরি ক্রিসমাস’। এরপর ধীরে ধীরে তা বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় হয়।

তবে রক্ষণশীল কিছু মানুষ আজও বড়দিনের শুভেচ্ছা জানাতে ‘হ্যাপি ক্রিসমাস’ ব্যবহার করে থাকেন।
এনএম

