বর্তমানে বেড়েছে মানুষের কর্মব্যস্ততা। একটানা কাজের পর প্রায়ই হাত নাড়াতে গেলে কাঁধে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়। মনে হয় যেন কাঁধ শক্ত হয়ে গেছে। কোনোভাবেই তা নাড়ানো যাচ্ছে না। এমন সমস্যাকে ‘ফ্রোজেন শোল্ডার’ বলা হয়।
এই স্বাস্থ্য সমস্যা হলে কাঁধের বল ও সকেটসন্ধি আক্রান্ত হয়। সাধারণত বয়স ৪০ পার হলেই বাড়ে এই রোগের ঝুঁকি। পুরুষদের তুলনায় নারীরা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হন। প্রাথমিক পর্যায় কাঁধ ঘোরানোর সময়ে তীব্র যন্ত্রণা হয়। সময়ের সঙ্গে বাড়তে থাকে ব্যথার তীব্রতা। এরপর ব্যথা অসহ্যকর হয়ে ওঠে এবং ঘাড় ও কাঁধের অংশ শক্ত হয়ে যায়।
বিজ্ঞাপন
চিকিৎসকদের একাংশ মনে করেন, মূলত ডায়াবেটিস, থাইরয়েড, হার্টের অসুখ থাকলে ফ্রোজেন শোল্ডারের ঝুঁকি বাড়ে। আবার শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে গেলে কিংবা কোনো চোট-আঘাত পেলেও এই সমস্যা হতে পারে।
আরও পড়ুন- পায়ের গোড়ালি ব্যথা, কী করবেন?
ফ্রোজেন শোল্ডারের সমস্যায় ভুগলে প্রতিদিন কিছু কাজ করতে পারেন। যাতে এই সমস্যার ঝুঁকি কমবে। চলুন বিস্তারিত জানা যাক-
ঘুম জরুরি
এই সমস্যা থেকে বাঁচতে ঘুমের সঙ্গে কোনো আপস করা যাবে না। ঘুমানোর সময় খেয়াল রাখবেন যেন শোয়ার ধরন ঠিক থাকে। ভুল ভঙ্গিমায় শোয়ার কারণে ঘাড়ে ব্যথা হয়। খুব বেশি উঁচু কিংবা শক্ত বালিশে ঘুমাবেন না।
আরও পড়ুন- বাতের ব্যথা কমায় এই তিন ব্যায়াম
কাজের ফাঁকে বিরতি
অফিসে কাজ করতে করতে যখনই ক্লান্ত লাগবে কিংবা কাঁধে যন্ত্রণা হবে তখনই চেয়ারে বসে না থেকে মিনিট দশেকের বিরতি নিন। এসময় হাঁটাহাঁটি করুন। হাতের ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম করুন। স্বস্তি পাবেন।
লং ড্রাইভ এড়ানো
অনেকেই লং ড্রাইভে যেতে পছন্দ করেন। ফ্রোজেন শোল্ডার সমস্যা থাকলে একটানা অনেকক্ষণ গাড়ি চালাবেন না। এতে সমস্যা বাড়বে।
মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকা
যতটা পারবেন নিজেকে মানসিক চাপমুক্ত রাখুন। মানসিক চাপ, উদ্বেগ, চিন্তার কারণে ঘুমের পরিমাণ কমে। আর কম ঘুম হলে ক্লান্তি বাড়ে। সঙ্গে কাঁধ ব্যথাও।
ব্যায়ামের বিকল্প নেই
এই সমস্যা থেকে বাঁচতে ব্যায়াম ছাড়া উপায় নেই। রোজ ঘুম থেকে উঠে ঘাড়ের হালকা ব্যায়াম করুন। এতে ঘাড় সচল থাকবে। যোগাসন ভীষণ কার্যকর ব্যায়াম। মার্জারাসন, সেতুবন্ধনাস, গরুড়াসন, গোমুখাসনের মতো আসন নিয়মিত করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।
প্রচণ্ড কাঁধ ব্যথা হলে কী করবেন?
আরও পড়ুন- পিঠ ও ঘাড় ব্যথা কমায় যে ৩ যোগাসন
সৈন্ধব লবণ
হালকা গরম পানিতে সৈন্ধব লবণ মিশিয়ে চার-পাঁচ মিনিট গোসল করুন। গোসলের সময় ঘাড় নাড়াচাড়া করবেন না। আস্তে আস্তে ঘাড়ের পেশিগুলি শিথিল হতে শুরু করবে।
আইস প্যাক
ঘাড় বা কাঁধের ব্যথা অসহ্য হয়ে উঠলে আইস প্যাক চাপা দিয়ে রাখুন। সঙ্গে সঙ্গে আরাম পাবেন।
হিটিং প্যাড
ঘাড়ের ওপর হিটিং প্যাড চেপে রাখুন। রক্ত সঞ্চালন বেড়ে ঘাড়ে ব্যথা কমবে। আরাম পাবেন।
ঘাড় বা কাঁধের ব্যথা যদি ঘরোয়া টোটকায় না কমে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। কাঁধের এক্স-রে করে প্রয়োজনে চিকিৎসক অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
এনএম