দ্বিতীয় দফায় আমেরিকার ক্ষমতায় আসার পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসন নিয়ে কঠোর হয়েছেন। তার নীতির কারণে অবৈধ অভিবাসীরা আমেরিকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন।
অনেক ভারতীয়কেও বেআইনি অনুপ্রবেশের অভিযোগে আমেরিকা থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে আমেরিকা একা নয়, অন্য অনেক দেশই নানা কারণে ভারতীয় নাগরিকদের দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। গত পাঁচ বছরের পরিসংখ্যান বলছে, এই তালিকায় আমেরিকা অনেক নীচে, বরং শীর্ষে রয়েছে সৌদি আরব!
বিজ্ঞাপন
কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিংহ বিদেশ থেকে ভারতীয়দের ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গে একটি প্রশ্নের জবাবে সৌদিসহ একাধিক দেশের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছেন।
তাতে দেখা গিয়েছে, ২০২১ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সৌদি যত ভারতীয়কে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে, তত আর কোনও দেশ করেনি। রিয়াদে ভারতীয় মিশনের হিসাব বলছে, ২০২১ সালে ৮৮৮৭ জন, ২০২২ সালে ১০২৭৭ জন, ২০২৩ সালে ১১৪৮৬ জন, ২০২৪ সালে ৯২০৬ জন এবং ২০২৫ সালে এ পর্যন্ত ৭০১৯ জন ভারতীয় নাগরিককে তাড়িয়ে দিয়েছে সৌদি সরকার। সৌদির তুলনায় আমেরিকা থেকে ভারতীয়-বিতাড়নের সংখ্যা অনেক কম।
আমেরিকার ভারতীয় মিশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে সবচেয়ে বেশি ভারতীয়কে তাড়ানো হয়েছে রাজধানী ওয়াশিংটন থেকে। ওই শহর থেকে ২০২১ সালে ৮০৫ জন, ২০২২ সালে ৮৬২ জন, ২০২৩ সালে ৬১৭ জন, ২০২৪ সালে ১৩৬৮ জন এবং ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত ৩৪১৪ জন ভারতীয়কে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এ ছাড়া, সান ফ্রান্সিসকো, নিউ ইয়র্ক, আটলান্টা, হিউস্টন, শিকাগো থেকেও অনেককে ভারত ফেরত পাঠানো হয়েছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই সংখ্যা ৫০০ পেরোয়নি।
সৌদি এবং আমেরিকা ছাড়া যে সব দেশ থেকে ভারতীয়দের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া।
যাদের তাড়ানো হয়েছে, তাদের কেউ ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও দেশটিতে থেকে গিয়েছিলেন, কারও কাজের অনুমতির (ওয়ার্ক পারমিট) মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছিল, কেউ আবার সংশ্লিষ্ট দেশের শ্রমবিধি লঙ্ঘন করার শাস্তি পেয়েছেন।
সৌদির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ। গত এপ্রিল মাসে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সশস্ত্র সংঘাতের সময় মধ্যস্থতায় এগিয়ে এসেছিল সৌদি সরকার। তাদের প্রতিনিধি ভারতেও এসেছিলেন।
সংঘর্ষ থামানোর এবং উত্তেজনা প্রশমন করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের বার্তা তারা দিয়েছিল দুই দেশকেই। কিন্তু পরে পাকিস্তানের সঙ্গে সৌদি একটি বিশেষ প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করে।
তাতে বলা হয়, তৃতীয় কোনও দেশ এদের মধ্যে কোনও একটি দেশকে আক্রমণ করলে তা উভয় দেশের উপর হামলা হিসাবে গণ্য করা হবে। সৌদি সরকার অবশ্য পরে জানায়, ওই চুক্তির নিশানায় ভারত নেই।
-এমএমএস

