শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

‘লোকসভার সেমিফাইনালে’ বাজিমাত বিজেপির, আরও চাপে কংগ্রেস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৩৮ পিএম

শেয়ার করুন:

‘লোকসভার সেমিফাইনালে’ বাজিমাত বিজেপির, আরও চাপে কংগ্রেস
চারটি বিধানসভার ফলাফলে ফুরফুরে বিজেপি। ছবি: সংগৃহীত

টানা দুই মেয়াদে ভারতের ক্ষমতায় থাকা বিজেপির হাত থেকে সম্প্রতি কয়েক রাজ্য ছুটে যায়। এতে দলটি বেশ চিন্তিত ছিল। এর মধ্যে আরও পাঁচটি রাজ্যের নির্বাচন সামনে আসে। আগামী বছরের মাঝামাঝি দেশটিতে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। সেই লোকসভা নির্বাচনের আগে পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভার ভোটকে ‘লোকসভার সেমিফাইনাল’ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আর সেই সেমিফাইনালে বাজিমাত করেছে বিজেপি। বুথফেরত জরিপে কংগ্রেস ভালো করবে বলে আভাস দিলেও সেটা বাস্তবে হয়নি। চারটি রাজ্যের ফলাফলে তিনটিতেই জয়ী হয়েছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি। আর একটিতে জয় পেয়েছে কংগ্রেস।

এতে বেশ ফুরফুরে বিজেপি। অন্যদিকে দুই মেয়াদ ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা প্রাচীন দল কংগ্রেস আরও বেশি চাপে পড়ল। এমনকি বিরোধীদের নিয়ে ‘ইন্ডিয়া’ নামে যে জোট গঠিত হয়েছে সেখানেও কংগ্রেসের নেতৃত্ব পড়েছে প্রশ্নের মুখে।


বিজ্ঞাপন


রোববার (৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড় ও তেলেঙ্গানা রাজ্যে ভোট গণনা শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, মধ্যপ্রদেশে ২৩০ আসনের মধ্যে বিজেপি ১৬৬ আসনে এগিয়ে আছে। এখানে কংগ্রেস এগিয়ে ৬৩ আসনে। এ রাজ্যে সরকার গড়তে দরকার ১১৬ আসন।

আরও পড়ুন

লোকসভার ‘সেমিফাইনাল’: বিজেপি ৩, কংগ্রেস ১ 


বিজ্ঞাপন


রাজস্থানে ১৯৯ আসনের মধ্যে ১১৬ আসনে এগিয়ে বিজেপি, কংগ্রেস ৬৮ এগিয়ে আসনে। এ রাজ্যে সরকার গড়তে দরকার ১০০ আসন।

BJP2
উল্লসিত বিজেপি নেতারা। ছবি: সংগৃহীত

ছত্তিশগড়ে ৯০ আসনের মধ্যে ৫৩ আসনে এগিয়ে বিজেপি, কংগ্রেস এগিয়ে আছে ৪৫ আসনে। এ রাজ্যে সরকার গড়তে দরকার ৪৬ আসন। এ হিসেবে তিনটি রাজ্যেই বিজেপির সরকার গঠন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

অপরদিকে তেলেঙ্গানায় ১১৯ আসনের মধ্যে ৬৪ আসনে এগিয়ে কংগ্রেস। সেখানে ক্ষমতাসীন দল ভারত রাষ্ট্রীয় সমিতি (বিআরএস) ৪০ আসনে এগিয়ে। এ রাজ্যে সরকার গড়তে দরকার ৬০ আসন। যদিও চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষিত হলে দু-একটি আসনের ফলাফল পরিবর্তন হতে পারে।

ভোটফেরত জরিপ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এবার মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ে কংগ্রেসের জেতার কথা ছিল। আর রাজস্থানে বিজেপি জিততে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদি ম্যাজিকই বাজিমাত করল। তিন প্রদেশেই জয় পেল বিজেপি। একমাত্র তেলেঙ্গানা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হলো কংগ্রেসকে।

আরও পড়ুন

কর্নাটকে মুখ থুবড়ে পড়ল বিজেপি 

এদিকে, মিজোরামে ভোট গণনা হবে আগামীকাল সোমবার (৪ ডিসেম্বর)। বিধানসভা নির্বাচনে ৪০ আসনের ফলাফল যাই হোক, একটি লোকসভা আসনের মিজ়োরাম নিয়ে বিজেপি বা কংগ্রেস, কারও আর সেভাবে কোনো মাথাব্যথা নেই। তবে অনেকের মতে, মিজ়োরাম বিধানসভার ভোটের ফলাফল প্রভাব ফেলতে পারে উত্তর-পূর্বের বাকি রাজ্যে। সে ক্ষেত্রে ধাক্কা খেতে পারে অমিত শাহের ‘কংগ্রেসমুক্ত উত্তর-পূর্ব ভারত’-এর লক্ষ্য।

Kongress2
দলকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় রাহুল গান্ধী। ছবি: সংগৃহীত

এদিকে এই ফলাফলের পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেস আরও চাপে পড়ে গেল। এসব রাজ্যে ইন্ডিয়া জোটের শরিকরা কংগ্রেসের ওপর লোকসভায় আসন ছাড়ার জন্যও চাপ বাড়াতে পারে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহল থেকে কংগ্রেসের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ক্ষমতার দৌড়ে থাকা পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস তাদের নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে ইন্ডিয়া জোটের নেতা করার দাবি জানিয়েছে আসছে।   

আরও পড়ুন

বিজেপি ঘৃণার কেরোসিন ছড়িয়েছে: রাহুল গান্ধী 

আগামী বছরের মাঝামাঝিতে ভারতের জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। কেন্দ্রে টানা দুই মেয়াদ ধরে ক্ষমতায় রয়েছে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি। ২০১৪ সাল থেকে প্রতিটি নির্বাচনেই ‘মোদি ম্যাজিক’ কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি। এতে বেশির ভাগ ভোটে সাফল্য পেয়েছে দলটি। উগ্র হিন্দুত্ববাদী, ডান ও হিন্দি বলয়ে বিজেপি শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছে। ফলে আগামী বছরের নির্বাচনে হ্যাট্রিক করার স্বপ্ন দেখছে দলটি।

অপরদিকে প্রাচীন দল কংগ্রেস নেতৃত্বশূন্যতার কারণে অনেকটা ধুঁকছে। গত দুই মেয়াদে ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি ২০১৯ সালের লোকসভার ভোটে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। সেই ধকল এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি। গান্ধী পরিবার থেকে নেতৃত্ব বদল করেও সেই অর্থে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি কংগ্রেস। এবার কয়েকটি প্রদেশে ক্ষমতায় আসায় অনেকের ধারণা ছিল কংগ্রেস ঘুরে দাঁড়াবে। তবে পাঁচটি বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবি কংগ্রেসকে নতুন করে চাপে ফেলেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর