বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৪, ঢাকা

বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনে ‘স্বাচিপ’ ছায়া!

মাহফুজ উল্লাহ হিমু
প্রকাশিত: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩৪ এএম

শেয়ার করুন:

বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনে ‘স্বাচিপ’ ছায়া!

# শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে স্বাচিপ ও আওয়ামী লীগ সম্পৃক্ততার অভিযোগ

# শান্তি সমাবেশে সোচ্চার ছিলেন অনেকেই


বিজ্ঞাপন


# দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

# স্বাচিপের বি-টিম পরিণত হয়েছে, দাবি ড্যাবের

ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর অস্থিরতা শুরু হয় দেশের বিভিন্ন সেক্টরে। বাদ যায়টি স্বাস্থ্যসেবা খাতেও। চিকিৎসকসহ খাত সংশ্লিষ্টদের নানা দাবিতে এক ধরনের অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় স্বাস্থ্যখাতে। অতি জরুরি এই সেবায় প্রথমবারের মতো ‘কমপ্লিট শাটডাউন’-এর মতো কর্মসূচি পালন করতেও দেখেছে দেশবাসী। স্বাস্থ্যখাত সংস্কার ও নানা দাবিতে সোচ্চার সংগঠনগুলোর মধ্যে অন্যতম বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন।

অ্যাডহক, এনক্যাডারমেন্টসহ স্বাস্থ্যখাতের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করছে সংগঠনটি। তবে সরকারি চাকরিজীবী চিকিৎসকদের এ সংগঠনটির বিরুদ্ধে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সমর্থক চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে। চিকিৎসকদের নানা মহল থেকে দাবি করা হচ্ছে, বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে সক্রিয় হয়েছে স্বাচিপপন্থী চিকিৎসকরা। সংগঠনটি নানা কর্মসূচির মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতে নৈরাজ্য ও দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠছে। সাধারণ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বাস্থ্যখাতে শাটডাউন ঘোষণা করতেও বিভিন্ন গ্রুপে সক্রিয় তারা।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন

তীব্র গরমে ঝুঁকিতে ওষুধের কার্যকারিতা

অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতার সময়ে স্বাস্থ্যখাতের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান দলীয়করণ করা হয়েছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পদে স্বাচিপ নেতাকর্মীদের বাইরে কাউকে পদায়ন করা হয়নি। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৭ জুলাই ঘোষিত বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের নতুন আহ্বায়ক কমিটিতেও ঠাঁই পেয়েছে স্বাচিপপন্থী চিকিৎসক। ঢাকা মেইলের অনুসন্ধানেও এ অভিযোগের আংশিক সত্যতা মিলেছে।

আহ্বায়ক কমিটি ও স্বাচিপ সংশ্লিষ্টতা

ঢাকা মেইলের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ শীর্ষ ১৬ সদস্যের ১২ জনেরই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগ ও স্বাচিপের যোগসূত্র রয়েছে। স্বাস্থ্য ক্যাডারের এসব চিকিৎসকের স্বাচিপের বিভিন্ন ইউনিট কমিটি, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে সখ্যতা এবং ছাত্র আন্দোলন চলাকালে চিকিৎসা সেবা না দিয়ে শান্তি সমাবেশে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, সংগঠনটির আহ্বায়ক ডা. মোহাম্মদ নেয়ামত হোসেন আওয়ামী লীগের সভায় নেতাদের সঙ্গে অতিথির আসনে বসে খাওয়া দাওয়া ও খোশগল্প করছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতেন বলে জানা গেছে। ২৪ তম বিসিএসের এই কর্মকর্তা দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিওনেটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।

bcs-niamot
আওয়ামী লীগের সভায় নেতাদের সঙ্গে বসে খাওয়া দাওয়া ও খোশগল্প করছেন ডা. মোহাম্মদ নেয়ামত হোসেন

সদস্য সচিব ডা. উম্মে তানিয়া নাসরিন ২৮তম বিসিএসের একজন কর্মকর্তা। ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি নিজেই জানান- ‘খুব গুটি কয়েক মানুষদের মধ্যে একজন-যার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কঠিন সময়ের তৃণমূল পর্যায়ের একজন দক্ষ সংগঠক ছিলেন। যখন পঁচাত্তর পরবর্তী এই দেশে কেউ আওয়ামী লীগের নাম উচ্চারণ করতে পারতো না, তখন আমার অকুতোভয় বাবা টানা ১৮ বছর বাংলাদেশের একটি থানার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।’

এছাড়া আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর সরকার দলীয় এডহক কর্মকর্তাদের চাপে বিভিন্ন পোস্টের মাধ্যমে নিজেকে আওয়ামী পরিবারের সন্তান প্রমাণে সোচ্চার ছিলেন ডা. উম্মে তানিয়া।

আরও পড়ুন

ফুরিয়ে আসছে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর ভাণ্ডার!

সংগঠনের ১ নম্বর সদস্য সুমন সেন বরিশাল মেডিকেল কলেজে (৯৯-০০ ব্যাচ) অধ্যায়নকালীন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন বলে জানা গেছে। পুলিশ হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট পদে কর্মরত এ চিকিৎসক আওয়ামী লীগের পক্ষে আয়োজিত শান্তি সমাবেশের অন্যতম আয়োজক ছিলেন। ওইদিন প্রকাশিত টিভি ফুটেজেও তার উপস্থিতি দেখা যায়।

দুই নম্বর সদস্য ডা. লোকমান হোসেন জুয়েল শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ স্বাচিপ ইউনিটে সক্রিয় বলে জানা গেছে। ছাত্র আন্দোলনকালে আহতদের চিকিৎসা দিতে অস্বীকৃতি ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ফলে ৫ আগস্টের পর তাকে হাসপাতালটির আবাসিক সার্জনের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

bcs-sumon-sen
বরিশাল মেডিকেল কলেজে অধ্যায়নকালীন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন সুমন সেন

তিন নম্বর সদস্য নীতিশ কৃষ্ণ দাস সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক। ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ ও বর্তমানে স্বাচিপে সক্রিয় তিনি। সরকারের সমর্থনে শান্তি সমাবেশের দন্ত বিশেষজ্ঞদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

৬ নম্বর সদস্য আসিফ মাহমুদ সহযোগী পরিচালক হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদফতরে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার মামা ডা. তারেক মেহেদী পারভেজ স্বাচিপের কেন্দ্রীয় কমিটির ১৩তম সদস্য।

৯ নম্বর সদস্য ডা. মাতুয়ারা শারমীনের স্বাচিপ সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। ১০ নম্বর সদস্য নিহার রঞ্জন রাজশাহী মেডিকেলের (০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষ) সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। একইসঙ্গে বিএমএ-এর সিরাজগঞ্জের নির্বাচিত কাউন্সিলর। ওই নির্বাচনে এককভাবে স্বাচিপ অংশগ্রহণ করেছিল।

আরও পড়ুন

স্ত্রী-রোগ: নারীজীবনের ৮ শতাংশ কাটছে অসুস্থতা ও অক্ষমতায়

১১ নম্বর সদস্য ডা. আল মাহমুদ লেমনের সঙ্গে সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সুমনের বিশেষ সখ্যতা ছিল।

১২ নম্বর সদস্য ডা. সাইদুর রহমান সোহাগও স্বাচিপের সক্রিয় কর্মী বলে জানা গেছে। ২০১৯ সালে তৎকালীন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে শুভেচ্ছা জানাতে দেখা যায় তাকে।

১৩ নম্বর সদস্য ডা. উম্মন ইশরাত ওরফে ইসরাত জাহান উম্মন স্বাচিপ ও বরিশাল মেডিকেলে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

bcs--masud
মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের সঙ্গে মাহমুদুর রহমান মাসুদ

১৪ সদস্য মাহমুদুর রহমান মাসুদ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের ঘনিষ্ঠজন। একইসঙ্গে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল স্বাচিপের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।

দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্বাস্থ্য ক্যাডার কর্মকর্তা ঢাকা মেইলকে জানান, স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক থেকে শুরু করে সদস্য সচিবসহ একাধিক সদস্য স্বাচিপ অনুসারী। যাদের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তারা আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন। এখন ভিন্ন ব্যানারে চিকিৎসাখাতে অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা করছে। চিকিৎসকদের বিভিন্ন গ্রুপে তাদের নেতারা ছোট ইস্যুতেই হট্টগোল করে শৃঙ্খলা নষ্টের চেষ্টা করছে। সাধারণ চিকিৎসকদের বুঝাতে চায় আমরা তো চিকিৎসকদের জন্য আন্দোলন করছি। তবে এর ভেতরে তারা আদতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।

আরও পড়ুন

নীরব ঘাতক: বড় অংশই জানে না উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তের কথা

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, চিকিৎসকদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে তারা দলীয় স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা করছে। অধিকারের কথা বললেও তাদের মূল লক্ষ্য ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করা। তারা অন্তবর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে চায়। চিকিৎসকদের বিভিন্ন গ্রুপে তারা উস্কানিমূলক কথা বলছে। একটি ক্যাডারভিত্তিক সংগঠন হলেও তারা ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি দিচ্ছে।

স্বাচিবের বি-টিম?

ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সিনিয়র যগ্ম-মহাসচিব ও ২৫তম বিসিএসের কর্মকর্তা ডা. মেহেদী হাসান ঢাকা মেইলকে বলেন, স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন এডহক নিয়োগকে সামনে এনে ক্যাডার-ননক্যাডার ইস্যু তৈরি করে ঝামেলা করছে। স্বাস্থ্য বিভাগে যথেষ্ট পদ আছে। এখানে বিসিএস ক্যাডারদের পদায়ন করতে সমস্যা হচ্ছে এমন নয়। তারা যতটা না স্বাস্থ্য ক্যাডারদের দাবি নিয়ে সোচ্চার তার থেকেও বেশি সোচ্চার অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরিতে। বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন নামক সংগঠনটি সে সময়ের স্বাচিপ ও ছাত্রলীগের যারা ছিল তাদের নিয়ে গঠিত হয়েছে। এখানে নিরপেক্ষ ভাবাপন্ন কাউকে স্থান দেওয়া হয়নি। এখানে স্বাপিচের বিপরীতে ড্যাব কিংবা এনডিএফ ভাবাপন্ন কোনো স্বাস্থ্য ক্যাডারের চিকিৎসক নেই। ফলে এটা সার্বজনীনভাবে চিকিৎসক বা বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারদের রিপ্রেজেন্ট করে না। এরা একটি দলীয় এজেন্ডা বাস্তাবায়নের সংগঠনে পরিণত হয়েছে। 

bcs-committeঅস্থিতিশীল তৈরির অভিযোগ করে মেহেদী হাসান বলেন, ‘স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর দেশের সবখাতে একটা ভঙ্গুর অবস্থা বিরাজ করছে। সেখানে স্বাস্থ্য বিভাগটাকে অস্থিতিশীল রাখার জন্যই তাদের বর্তমান কর্মকাণ্ড। তাদের বেশিরভাগের সঙ্গে স্বাচিপ ও আওয়ামী লীগের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পৃক্ততা আছে। অনেকে বিভিন্ন ইউনিটের সক্রিয় নেতাকর্মী।’

বিভিন্ন ইউনিট কমিটি প্রসঙ্গে ড্যাবের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘এমটা পেশাগত ক্যাডার সংগঠনের আগে হতে দেখিনি। স্বাস্থ্য ছাড়া অন্যান্য ক্যাডারাভিত্তিক সংগঠনগুলোর এমন কমিটি দেওয়ার নজির নেই। এটা তাদের ভবিষ্যৎ দূরভিসন্ধির পরিকল্পনার ইঙ্গিত দেয়। এটা স্বাচিপের একটি বি-টিমে পরিণত হয়েছে। এখানে নিরপেক্ষ ও ভিন্নমতের কোনো বিসিএস চিকিৎসক নেই। স্বাস্থ্য ক্যাডারদের মধ্যে এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। ফলে খুব শিগগিরই সার্বজনীন একটি বিসিএস হেলথ ক্যাডার সংগঠন হবে বলে মনে করছি।’

ট্যাগের রাজনীতির অভিযোগ

তবে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে সংগঠনটির সদস্য সচিব ডা. উম্মে তানিয়া নাসরিন। ন্যায্য দাবির আন্দোলন রুখতে ট্যাগের রাজনীতির অভিযোগ করেন তিনি।

ডা. উম্মে তানিয়া নাসরিন বলেন, যারা অভিযোগ করছে, ‘তারা স্বাচিপের কোন লিস্টে আমাদের নাম আছে তা দেখাক। তারা যেসব স্ক্রিনশট বা লিস্টের কথা বলছে আমরাও এমন অনেক লিস্ট দেখাতে পারব। আওয়ামী লীগ সরকার যখন ক্ষমতায় ছিল তখন আমরা ওই সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছি। যেখানে আমাদের আহ্বায়ক ভুলে দেশনেত্রী বলে ফেলেছিলেন। তখন আমাদের জামায়াত-শিবির ট্যাগ দিয়ে পেটানোর হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এসবের স্ক্রিনশটও আছে আমাদের কাছে। এখনও আমাদের একইভাবে আওয়ামী লীগ ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে।’

sohag-3
সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে শুভেচ্ছা জানাতে যান ডা. সাইদুর রহমান সোহাগ

অ্যাসোসিয়েশনের দাবির বিষয়ে তানিয়া নাসরিন বলেন, ‘এডহক নিয়োগ হয়েছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকারে স্ব-পুনর্বাসনের জন্য। তারা বিসিএসকে বাইপাস করে ছাত্রলীগ নেতা, বড় বড় ব্যাবসায়ী ও মন্ত্রী এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের নিয়োগ দিয়েছে। যাদের বেশিরভাগ বিভিন্ন বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। নর্থ-বেঙ্গল কলেজের মতো অচেনা একটি বেসরকারি মেডিকেল ৪০ জন এডহকের মাধ্যমে চাকরিতে ঢুকেছে। এরপর এতগুলো বিসিএস গেছে, এর মধ্যে ওই মেডিকেলের কতজন শিক্ষার্থী ক্যাডার হয়েছে সেই তথ্য নিলে আপনি এডহক নিয়োগের উদ্দেশ্য বুঝতে পারবেন।’

আরও পড়ুন

পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরে বদলি আতঙ্ক!

নিজের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সম্পৃক্তরার অভিযোগ প্রসঙ্গে ডা. তানিয়া বলেন, ‘আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আওয়ামী লীগ যখন বিরোধীদলে ছিল তখন তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন। এটা অস্বীকার করার তো কোনো কারণ নেই। এবার আওয়ামী লীগের ক্ষমতাকালীন আমার বাবা মারা গেছেন। আমার বাবা আওয়ামী লীগ করতো, এর দায় তো আমার না। যারা অভিযোগ করছে তারা দেখাক আমি কোথাও বলেছি কিনা যে, আমি আওয়ামী লীগ বা স্বাচিপ করি। আমার পরিবারের সদস্যরা আওয়ামী লীগ, বিএনপি করতে পারে। কিন্তু একজন সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে আমাদের প্রকাশ্যে দল করার সুযোগ নেই।’

এমএইচ/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর