বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

পাইকারি বাজারে চাহিদা বেশি ভারতীয় ও চীনা কাপড়ের

এস এম শাহাদাত হোসেন অনু
প্রকাশিত: ২৫ মার্চ ২০২৩, ০৫:১১ পিএম

শেয়ার করুন:

পাইকারি বাজারে চাহিদা বেশি ভারতীয় ও চীনা কাপড়ের

ঈদুল ফিতরের বাকি এক মাসেরও কম। সারাদেশের দোকানিরা নতুন পোশাকে সাজিয়ে তুলছেন নিজেদের দোকান। সবার গন্তব্য এখন পোশাকের পাইকারি বাজার হিসেবে খ্যাত রাজধানীর পুরান ঢাকার ইসলামপুর। ঈদের পোশাক কেনার জন্য সারাদেশ থেকে খুচরা ব্যবসায়ীরা আসতে শুরু করায় কর্মব্যস্ত হয়ে উঠেছে পাইকারি এই মাকের্ট। ক্রেতাদের চাহিদা পূরণে দেশীয় কাপড়ের পাশাপাশি ভারত ও চীন থেকে আনা কাপড়ে দোকান সাজিয়েছেন দোকানিরা। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ভারত ও চীন থেকে আসা কাপড়ের চাহিদা বেশি বলে জানান তারা।

ইসলামপুরে বিশাল এলাকাজুড়ে রয়েছে ছোট বড় প্রায় ১০ হাজার মতো কাপড়ের দোকান। ঈদ সামনে রেখে শবে বরাতের পর থেকে মূলত ইসলামপুরে বেচাকেনা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের কাপড়ের সমারোহ, গুণগত মান ও সুলভমূল্য হওয়ায় সব শ্রেণির ক্রেতার কাছে জনপ্রিয় পুরান ঢাকার ইসলামপুর বাজার। সারা বছরই এখানে থাকে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের আনাগোনা।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন:  দোকানে দোকানে ঈদের পণ্য, থাকছে না সাপ্তাহিক বন্ধ

দেশি-বিদেশি সবধরনের কাপড়ের দেখা মিলবে এখানে। তবে এবার দেশি কাপড়ের থেকে ভারতীয় ও চীনা কাপড়ের প্রাধান্য তুলনামূলক বেশি। এর কারণ হিসেবে দোকানিরা বলছেন, দেশি কাপড়ের দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় ভারতীয় ও চীনা কাপড়ের চাহিদা বেশি। শাড়ি, থ্রি-পিস, ওড়না, বোরকা, গজ কাপড়, লুঙ্গি, পাঞ্জাবিসহ কোনো কিছুরই কমতি নেই এখানে।

ইসলামপুরের পাইকারি মার্কেটে সরেজমিনে দেখা যায়, সদরঘাট ইসলামপুরের দোকানের মালিক কর্মচারীরা পুরোদমে বেচাকেনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। ক্রেতাদের একের পর এক মালামাল দেখাচ্ছেন তারা। প্রায় সব মার্কেটেই ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে।

ঠাকুরগাঁও থেকে কাপড় কিনতে আসা সুজন ঢাকা মেইলকে বলেন, প্রতি বছরের তুলনায় এ বছরও পাইকারিতে কাপড় কিনতে পুরান ঢাকায় এসেছি। দোকানগুলোতে ভিড় অনেক, তাই দেখেশুনে কাপড় কেনার সময় পাচ্ছি না।


বিজ্ঞাপন


প্রতিদিনই কাস্টমারদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। বিগত বছরগুলোর লোকসান কাটিয়ে উঠতে ব্যবসায়ীরা কাজ করে যাচ্ছেন। করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতে দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতি ব্যবসায়ীদের আরও ভাবিয়ে তুলছে। মানুষ দৈনন্দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করে তারপর কাপড় কিনতে আসে। যার দরুণ মানুষের খাবারের চাহিদা পূরণে হিমশিম খেয়ে হচ্ছে।

বাজারব্যবস্থা নিয়ে কথা হয় ইসলামপুরের মাইশা বস্ত্রবিতানের কর্মচারীদের সঙ্গে। তারা জানান, ক্রেতার সংখ্যা অনেক, তবে আগের তুলনায় চাহিদা কম থাকায় বেচাবিক্রি কমেছে।

আরও পড়ুন: বিনা লাভের দোকান

সোনালী ফ্যাশনের মালিক শফিকুল ঢাকা মেইলকে বলেন, আমি থ্রি-পিস, লুঙ্গি, বিছানার চাদর, শাড়ি বিক্রি করছি। আজ সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় কাস্টমার একটু বেশি। আশা করছি আগের বছরের ঘাটতি এবার উঠে যাবে। সব মিলিয়ে এবার ভালোভাবে ব্যবসা চালাতে পারব এই প্রত্যাশা।

RRR

পাকিজা ফেব্রিক্স কালেকশনের ম্যানেজার দীপক ঢাকা মেইলকে বলেন, ইসলামপুরে তাদের মোট ছয়টি শো-রুম আছে। মূলত শবে বরাতের পর থেকে শুরু হয় তাদের বেচা-বিক্রি। ডলারের দাম উঠানামা, দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতির ফলে ব্যবসা ভালো যায়নি তাদের। ঈদের আগে ভালো বেচাকেনায় সেই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার প্রত্যাশা তাদের।

আরও পড়ুন: ব্যবসায়ীদের লাভ-লালসায় অসহায় ভোক্তা!

জিন্নাত ফ্যাশনের তহিদুর রহমান জানালেন, ৬০-৮০ টাকা দামে লেডিস আইটেমের গজ কাপড় বিক্রি করছেন তারা। মূলত নিম্ন-মধ্যবিত্তদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে তারা কাপড় সরবরাহ করেন। এখান থেকে কাপড় নিয়ে যান টেইলার্স ব্যবসায়ীরা। তারা সেলাই করে আবার দোকানিদের কাছে বিক্রি করেন।

সদরঘাটের শরিফ মার্কেটের জামিল পাঞ্জাবি হাউজের মালিক মিনহাজুল ইসলাম বলেন, শবেবরাতের আগে থেকে বিক্রি শুরু করেছি। দেশের পণ্যের পাশাপাশি ইন্ডিয়া থেকেও কিছু নিয়ে এসেছি। নানাবিধ ডিজাইনারদের পাঞ্জাবি রয়েছে, সুতি কাপড়ের পাঞ্জাবির একটু বেশি চাহিদা। পাইকারি বাজার মোটামুটি শেষের দিকে, আর ৫-৭ দিন বিক্রি আছে। এরপর খুচরা বিক্রি চালু হবে।

সদরঘাট এলাকার জুতার পাইকারি ব্যবসায়ী আশরাফুল আলম বলেন, বিগত বছরগুলোতে যে লোকসান হয়েছে আর ধার-দেনা করেছি, তা পরিশোধ করে কাটিয়ে উঠার চিন্তায় আছি। আশা করছি এবার কিছু ব্যবসা হবে। মোটামুটি বিক্রি শেষের দিকে। তবে আরও কিছু দিন চলবে। দেশের বেশিরভাগ এলাকায় দোকানদার জুতা নিয়ে চলে গেছেন। আরও এক সপ্তাহ আশা করছি পাইকারি ব্যবসা চলবে।

জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর