রোববার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

সেহরিতে মাইকে ডাকাডাকির জেরে ইমামকে অপমান, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৮ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:১৪ এএম

শেয়ার করুন:

loading/img

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে মসজিদের অবমাননা, মুসল্লিদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও ইমামের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। শুক্রবার (৭ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার সরদারপাড়ার তৌহিদি মুসলিম জনতার ব্যানারে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি বাহাদুরাবাদ সরদারপাড়া জামে মসজিদ থেকে বের হয় এবং দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার সামনে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে সরদারপাড়া নাদু বেপারীর ছেলে জাকির হোসেন সরদারপাড়া জামে মসজিদের ইমাম নুর মোহাম্মদ সোহাগকে একা পেয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। নুর মোহাম্মদ সোহাগ মসজিদে এশা নামাজের পরে মুসল্লিদের জানান। পরে মুসল্লিরা জাকিরকে ওই বিষয়ে জবাবদিহিতা করলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন। কিন্তু তবে হুমকি দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। সে সময় বিষয়টি নিয়ে জাকির হোসেনের অভিভাবককে জানানো হয় এবং পরদিন শুক্রবার বাদ জুমা নেতৃস্থানীয়রা বসে মীমাংসার সিদ্ধান্ত নেন। ওই সময় কিছু উত্তেজিত কিছু মুসল্লি জাকির হোসেনের বাড়িতে ঢিল ছুঁড়ে।
 
স্থানীয়রা জানান, তারাবিহের নামাজ শেষে মুসল্লিরা যে যার বাড়িতে চলে যান। মুসল্লিদের প্রতি রাগাম্বিত হয়ে জাকির হোসেন মদ খেয়ে মসজিদে এসে মুসল্লিদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে জাকির হোসেন থানায় অভিযোগ করে পুলিশ এনে ওই মসজিদের ইমাম নুর মোহাম্মদ সোহাগকে ধরিয়ে দেয়। ইমামকে ধরার বিষয়টি সে সময় গ্রামে মুসল্লিরা শুনলে তারা দলে দলে ছুটে আসে এবং পুলিশের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করে। প্রতিবাদের মুখে পুলিশ ওই মসজিদের ইমাম নুর মোহাম্মদ সোহাগকে ছেড়ে দেন।


বিজ্ঞাপন


পুলিশ চলে গেলে স্থানীয়রা জাকির হোসেনের বাড়ি ভাঙচুর করে। সে সময় জাকির হোসেন ও তার পরিবার পালিয়ে যায়। শুক্রবার (৭ এপ্রিল) বিকেলে সরদারপাড়া গ্রামবাসী ও তৌহিদি মুসলিম জনতা ওই গ্রাম থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি ছয় কিলোমিটার অতিক্রম করে দেওয়ানগঞ্জ থানার সামনে এসে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ওসি শ্যামল চন্দ্র ধরের আশ্বাসে বিক্ষোভকারীরা শান্ত হন। 
 
সরদারপাড়া গ্রামের মো. ইয়াদ আলী জানান, জাকির হোসেন নেশাখোর প্রকৃতির মানুষ। প্রতিদিন সে মদ-গাঁজাসহ বিভিন্ন নেশা সেবন করে। সে কারণে সে রমজান মাসে সেহরির সময় মসজিদের মাইকে রোজাদারদের ডাকতে বাধার সৃষ্টি করে। বিভিন্ন সময় ওই সমজিদ কর্তৃপক্ষকে গালিগালাজ করে। তিনি জাকির হোসেনের অন্যায়ের যথাপোযুক্ত বিচার দাবি করেন।

সরদারপাড়া গ্রামের নুরু মিয়া জানান, জাকির হোসেন যে অন্যায় করেছে তার জন্য গ্রামবাসী বিক্ষোভ মিছিল করে। জাকির হোসেন মদ-গাঁজা সেবন করে। সে এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে।  
 
সরদারপাড়া জামে মসজিদের ইমাম নুর মোহাম্মদ সোহাগ জানান, জাকির হোসেন আমাকে একা পেয়ে গালিগালজ ও মারপিটের হুমকি দিয়েছে। এছাড়াও মসজিদে মুসল্লিদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে সবাইকে উত্তেজিত করেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে অভিযুক্ত জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইলও বন্ধ পাওয়া যায়।

দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ওসি শ্যামল চন্দ্র ধর জানান, বিক্ষোভের বিষয়টি জানি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।


বিজ্ঞাপন


প্রতিনিধি/এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন