মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় দীপাবলি ও কালীপূজা উপলক্ষে প্রায় আড়াই শ বছরের ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ির মেলা আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে। ভূরঘাটা বাজারের ব্যবসায়ী ও আলেম সমাজের বাঁধার মুখে এবারের মেলার আয়োজন করা অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। অবশেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে মেলা করার অনুমতি মিলেছে।
রোববার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে দুইদিনের জন্য মেলার অনুমতি দেন জেলা প্রশাসক মোছা. ইয়াসমিন আক্তার।
বিজ্ঞাপন

২১ ও ২২ অক্টোবর এই দুইদিন মেলার জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছে প্রশাসন। ভূরঘাটার নতুন বাস টার্মিনাল এবং পূজা মন্ডপ সংলগ্ন ফাঁকা স্থানে বেশ কিছু শর্তসাপেক্ষে মেলা করার কথা বলা হয়েছে। এই মেলা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে কালকিনি পৌরসভা।
আরও পড়ুন: ভূরঘাটার কুন্ডুবাড়ির মেলা অনিশ্চিত, মানববন্ধনে বন্ধের দাবি স্থানীয়দের
শত বছর ধরে কালীপূজা ও দীপাবলী উপলক্ষে এই মেলা হয়ে আসছে। যা কালকিনি তথা মাদারীপুরের ঐহিত্যের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিজ্ঞাপন

কালকিনি পৌর এলাকার গোপালপুরের কুন্ডু বাড়িতে ১৭৮৩ সালের নভেম্বরে দীপাবলী ও কালীপূজা উপলক্ষে দীননাথ কুন্ডু ও মহেশ কুন্ডু এই মেলার প্রবর্তন করেন। তাই কুন্ডুদের বংশের নামানুসারে এই মেলা নাম করন করা হয় কুন্ডুবাড়ির মেলা। এরপর থেকে প্রতিবছর এই মেলার আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: অবশেষে দুইদিনের অনুমতি পেল মাদারীপুরের কুন্ডুবাড়ি মেলা
স্থানীয়রা জানান, মূলত কালীপূজার পরের একটি দিন থেকে কুন্ডুবাড়ির মেলা জমে। যদিও পূজার কয়েকদিন আগে থেকেই ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজাতে শুরু করেন। ক্রেতা সামাগমও হয়। কিন্তু মেলার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় কালীপূজার পরের দিন থেকেই। তখন মেলায় লোকসমাগমও হয়। বাড়ে বেচা-বিক্রিও।

ইতিমধ্যে মেলায় বিক্রেতারা তাদের পণ্য বিক্রির জন্য স্টল সাজিয়েছেন। কালকিনি পৌরসভার পক্ষ থেকে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মেলার সার্বিক নিরাপত্তার বিবেচনায় ১৫টি বিধিনিষেধ করা হয়েছে। এরমধ্যে আসামাজিক কর্মকাণ্ড বন্ধ, জুয়া-মাদক নিষেধ, উচ্চস্বরে শব্দযন্ত্র পরিহার, অবৈধ পণ্য ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ওপর দোকানপাট বসানো যাবে না, রাত ১১টার পর মেলায় দর্শনার্থী প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা ও উসকানিমূলক বক্তব্য পরিহার করতে জেলা প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে।

কালকিনির ভুরঘাটা কুন্ডুবাড়ি কালি মন্দিরের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি স্বপন কুমার কুন্ডু গণমাধ্যমকে জানান, প্রশাসন নানান দিক বিবেচনা করে দুইদিনের অনুমতি দিয়েছেন। এক সময়ে মেলা ৫-৭ দিন অনুষ্ঠিত হতো। মেলার সময়সীমা বাড়ানো হলে ক্রেতা-বিক্রেতা ও দর্শনার্থীদের উপকার হয়। এই পুরোনো মেলাকে ঘিরে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও স্থানীয়রা বেশ সহযোগিতা করেন বলেও তিনি জানান।
এই ঐতিহ্যবাহী মেলায় প্রধান আকর্ষণ থাকে কাঠের তৈরি নানা ধরনের ফার্নিচার। এ ছাড়া মাটির তৈজসপত্র, শিশুদের খেলনা ও স্থানীয়ভাবে তৈরি মিষ্টিজাতীয় খাবারের পসরা থাকে মেলা প্রাঙ্গণে।
এজেড

