সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ঘরে বানানো কেক অনলাইনে বিক্রি করে ঝলকের মাসে আয় ৩৫ হাজার

সুমন চন্দ্র, দিনাজপুর
প্রকাশিত: ১৩ মে ২০২৫, ০১:১০ পিএম

শেয়ার করুন:

ঘরে বানানো কেক অনলাইনে বিক্রি করে ঝলকের মাসে আয় ৩৫ হাজার

কেক খেতে কে না পছন্দ করে, ছোট থেকে বড় সবার কাছে কেক মানে আলাদা একটা ভালোলাগা। শুধু তাই নয়, বর্তমানে যেকোনো উপলক্ষে বা খুশির দিনে কেক কাটা হয়ে থাকে। আর এই কেক তৈরি করে নারী উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হয়েছেন দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার মেয়ে সিনথিয়া ঝলক। এখন নিজের হাতের বানানো এই কেক বিক্রয় করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা আয় করেন তিনি।

সিনথিয়া ঝলক কীভাবে সফল নারী উদ্যোক্তা হয়ে উঠলেন সেই সফলতার গল্প শোনান ঢাকা মেইলকে।


বিজ্ঞাপন


thumbnail_Dinajpur_-2

সফল নারী উদ্যোক্তা সিনথিয়া ঝলক ঢাকা মেইলকে বলেন, আমি স্ব-নির্ভরশীল হওয়ার জন্য ২০১৫ সালে ‘চিলড্রেন কেয়ার কোচিং সেন্টার’ নামে একটা কোচিং সেন্টার চালু করি। সেখানে আমার তত্ত্বাবধানে ২ জন শিক্ষক ছিল। অনেক ভালো নাম ডাক হয়েছিল কোচিং সেন্টারের। কিন্তু করোনার শুরুর পর থেকে কোচিং সেন্টারটি বন্ধ রাখার কারণে ধস নামা শুরু করে। ছাত্র-ছাত্রী অনেক কমে যায়। তখন কোচিং সেন্টারটি আমি বন্ধ করে দেই। তারপর একদিন দিনাজপুরে এক আপুর সঙ্গে দেখা হয়। আর সেখানে উনার একটা কেক খেয়েছিলাম। যেটার টেস্ট আমার অনেক ভালো লাগে । তখন থেকে আমার আগ্রহ হলো কেক তৈরি করার ও শেখার।

thumbnail_Dinajpur_-3

তিনি আরও বলেন, আমি যখন কেক তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকি তখন আমার কোর্স ফি দেওয়ার মতো টাকা ছিল না। আমি তখন কিছু লোন নিয়ে কেকের ক্লাসে ভর্তি হই। কিন্তু আজ আমি ভাবি তখন যদি আমি খরচের ভয় করে পিছিয়ে যেতাম আজকে এই স্থানটা পেতাম না।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন

চাকরির পেছনে না ঘুরে মাঠা বিক্রি, অর্ঘ্যের মাসিক আয় ৫০ হাজার টাকা

সিনথিয়া ঝলক আরও বলেন,কেক বানানো শেখার পর আমি ‘Sana homemade cake and food gallery’ নামে একটি পেজ তৈরি করি। অনলাইনে পোস্ট করি। সেখান থেকে আস্তে আস্তে অর্ডার পেতে শুরু করি। প্রথম প্রথম মাসে ৩/৪টা অর্ডার আসত। কেননা তখন বোচাগঞ্জের মানুষের কাছে এই কেকগুলো অনেক দামি হতো। কিন্তু যখন তারা কোয়ালিটি আর টেস্ট বুঝতে শুরু করল তখন আস্তে আস্তে আমার অর্ডার বাড়তে শুরু করে। এখন আমি দিনে ৭/৮টা কেক অর্ডার পেয়ে থাকি। কখনও কখনও ২০ থেকে ৩০ পাউন্ডও অর্ডার পেয়ে থাকি।

thumbnail_Dinajpur_-5

তিনি বলেন, হোমমেড কেকের প্রতি মানুষের ধারণা বদলেছে। তারা জানেন, ঘরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে কোয়ালিটি মানের কেক তৈরি করা যায়। আর বোচাগঞ্জে দিন দিন এসব কেকের চাহিদাও বাড়ছে।

আপনি কি কেক তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন, এমন প্রশ্নের জবাবে নারী উদ্যোক্তা ঝলক বলেন, আমি গত ১ বছর থেকে কেক এর প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছি। গত ১ বছরে আমার কাছে ৩৪ জন প্রশিক্ষণ নিয়েছে। আমার কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে কিছু আপুরা আমার মতো নারী উদ্যোক্তা হয়েছে। আমার মতো যেন আরও নারীরা উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখে তাই আমি ‘বোচাগঞ্জের উদ্যোক্তাবর্গ’ নামে একটি গ্রুপ চালু করি। সেখান থেকে অনেক নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হয়। এটাই ছিল আমার লক্ষ্য।

thumbnail_Dinajpur_-6

কোন ধরনের কেক বানাতে আপনি পারদর্শী এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, আমি বিভিন্ন প্রকারের কেক তৈরি করে থাকি। তার মধ্যে ভ্যানিলা স্পঞ্জ কেক, চকলেট স্পঞ্জ কেক, রেড ভেলভেট স্পঞ্জ কেক, অরেঞ্জ ডিলাইট স্পঞ্জ কেক, স্ট্রবেরি স্পঞ্জ কেক, ব্ল্যাক ফরেস্ট স্পঞ্জ কেক, হোয়াইট ফরেস্ট স্পঞ্জ কেক, মার্বেল কেক, কাপকেকসহ বিভিন্ন ডিজাইনের কেক তৈরি করে থাকি। এছাড়াও আমি ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী হুবহু ডিজাইন সংবলিত কেক তৈরি করে দিয়ে থাকি।

thumbnail_Dinajpur_-8

আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, এমন প্রশ্নের জবাবে নারী উদ্যোক্তা ঝলক বলেন, আমি ভবিষ্যতে আমার কেক এর একটি সুন্দর কারখানা করতে চাই। যেখানে সুন্দর পরিবেশে স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরি হবে এবং কিছু মানুষের কর্ম সংস্থান হবে। আমি নিজের একটি ব্র্যান্ড তৈরি করতে চাই। কেক এর পাশাপাশি অন্যান্য খাবার সারাদেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর