ছবিবিহীন পরিচয়পত্র পাওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শরীয়তপুরের পর্দানশিন নারীরা। এসময় তারা ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে ছবিবিহীন পরিচয়পত্র পাওয়ার দাবিতে বিভিন্ন ধর্মীয় যুক্তি তুলে ধরেন।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টায় শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে পদার্নশিন নারী সমাজ নামে একটি সংগঠন এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
বিজ্ঞাপন
এর আগে তারা শরীয়তপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আসেন।
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, শুধুমাত্র পরিপূর্ণ পর্দা করার কারণে পর্দানশিন নারীরা বৈষম্যের শিকার। গত ১৬ বছর ধরে অসংখ্য পর্দানশিন নারীর নাগরিকত্ব আটকে রাখা হয়েছে। এতে পর্দানশিন নারীরা মৌলিক ও নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ছবিবিহীন পরিচয়পত্র করতে না পারায় পর্দানশিন নারীরা বাবা ও স্বামীর উত্তরাধিকার হতে বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়াও শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকার হওয়া সত্ত্বেও মুখচ্ছবির অজুহাত দিয়ে পর্দানশিন নারীদের শিক্ষার মতো মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। পর্দানশিন বিধবা নারীরা তাদের সন্তানদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করতে পারছেন না, বিধবা ভাতা পাচ্ছেন না। রাষ্ট্রীয় সব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পর্দানশিন নারীরা। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে বলে আমরা এখন আমাদের ন্যায্য দাবিতে রাস্তায় নেমে মানববন্ধন করতে বাধ্য হচ্ছি। বর্তমান সরকারের কাছে আমাদের দাবি, ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে ছবিবিহীন পরিচয় পত্র পাওয়ার দাবি জানাই।
মানববন্ধনে আহমদ মারজিয়া নুসরাত নামে এক নারী বলেন, আমরা পর্দানশিন নারীরা আমাদের মেয়েদেরকে ছোটবেলা থেকে পর্দা করা শেখাই। কিন্তু ওই মেয়ে বড় হলে পরিচয় পত্র না থাকার কারণে বিয়ে দিতে পারছি না। আমরা বাবা ও স্বামীর উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। বয়স অনুযায়ী ছবির পরিবর্তন হয়, কিন্তু ফিঙ্গারপ্রিন্টের কোনো পরিবর্তন হয় না। আল্লাহ এই নেয়ামত আমাদের জন্য রাখা সত্ত্বেও মুসলিম প্রধান দেশ বাংলাদেশে ছবিবিহীন পরিচয় পত্র পাওয়া যাবে না, এটা হতে পারে না। আমরা ছবিবিহীন পরিচয় পত্র চাই।
আহমদ রওশনা নামে আরেক নারী বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। ইসলামে রয়েছে নারীর পর্দার বিধান। কিন্তু পর্দা করার কারণে নারীরা পরিচয়পত্র পাবেন না, এটা হতে পারে না। আমি চাই, এই সরকার যেহেতু মুসলিম, উনি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখে আমাদেরকে ছবিবিহীন পরিচয়পত্র পাওয়ার ব্যবস্থা করবেন।
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ছবিবিহীন পরিচয়পত্র পাওয়ার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রধান করে পর্দানশিন নারী সমাজ নামে সংগঠনটি।
প্রতিনিধি/এসএস