মাত্র ৫০ হাজার টাকা চুরি করতে গিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় অনন্যা কর্মকারকে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে পায়ের আঙুলে ধরানো হয় আগুন। কোনো নড়াচড়া না করায় নিশ্চিত হয় অনন্যা মারা গেছেন।
পরে হাত-পা বেঁধে লাশ বস্তাবন্দি করে রাস্তার পাশে ফেলে দেওয়া হয়। পিবিআইয়ের তদন্তে অনন্যা হত্যায় এসব তথ্য উঠে আসে। এ ঘটনায় ২৫ দিন পর গ্রেফতার করা হয় হত্যায় জড়িত এক দম্পতিকে।
বিজ্ঞাপন
গ্রেফতার দুই আসামি হলেন- কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার মো. জীবন ও তার স্ত্রী পটুয়াখালীর কলাপাড়া থানার সাত হাসনাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নূজরাত জাহান মীম। অনন্যা কর্মকার নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার শিবু মার্কেট সংলগ্ন সস্তাপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। তার স্বামী হরে কৃষ্ণ বছরখানেক আগে মারা যান।
সোমবার (১ এপ্রিল) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. আল মামুন সিকদার এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন
পুলিশ সুপার মো. আল মামুন সিকদার বলেন, নারায়ণগঞ্জ সদর থানার চর সৈদপুরে থাকার সময় নিহত অনন্যা কর্মকারের সঙ্গে পরিচয় হয় মো. জীবন ও তার স্ত্রী নূজরাত জাহান মীমের। গত ফেব্রুয়ারি মাসে অনন্যা ও ওই দম্পতি ফতুল্লার সস্তাপুরে একসঙ্গে বাসা ভাড়া নেন। হত্যার দুদিন আগে জীবন জানতে পারে অনন্যার ভাই আমেরিকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন। তখন জীবন ওই টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, গত ৪ মার্চ এলাকায় গ্যাসের চাপ কম থাকায় জীবনের স্ত্রী মীম রান্না করেনি। তখন তিনি বাইরে থেকে খাবার এনে অনন্যার খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন। সে খাবার খাওয়ার পর তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। জীবন টাকা চুরি করতে দুপুরে অনন্যার কক্ষে প্রবেশ করেন। তখন তার ঘুম ভেঙে গেলে জীবনকে দেখে ফেলে। চুরির সময় দেখে ফেলায় বালিশচাপা দিয়ে অনন্যাকে হত্যা করে জীবন। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে জীবন তার স্ত্রীকে গ্যাসলাইট আনতে বলে। অনন্যার পায়ের আঙুলে আগুন লাগালে কোনো নড়াচড়া না করায় তারা নিশ্চিত হয় অনন্যা মারা গেছেন।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, পরে স্বামী-স্ত্রী মিলে হাত-পা বেঁধে লাশ বস্তাবন্দি করে। অটোরিকশা দিয়ে লাশ চর সৈয়দপুর এলাকায় রাস্তার পাশে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় তারা। এ ঘটনায় নিহতের ভাই দেবব্রত কর্মকার বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারের পর রোববার (৩১ মার্চ) আসামি জীবনকে আদালতে তোলা হলে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলমের আদালতে এবং মীম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মায়দার আলীর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
প্রতিনিধি/এসএস