স্পোর্টস ডেস্ক
২৫ মে ২০২৫, ০৫:৩২ পিএম
ভারতের টেস্ট দলের নতুন অধিনায়ক হওয়াকে জীবনের “সর্বোচ্চ সম্মান” হিসেবে দেখছেন শুবমান গিল। ২৫ বছর বয়সী গিল জানিয়েছেন, মাঠে পারফরম্যান্সের মাধ্যমে এবং মাঠের বাইরে কঠোর পরিশ্রম ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে তিনি নেতৃত্ব দিতে চান।
জুন ২০ থেকে শুরু হচ্ছে ইংল্যান্ডে ভারতের পাঁচ টেস্টের সিরিজ, যা নতুন ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (ডব্লিউটিসি) চক্রেরও সূচনা। রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাওয়া এই দলে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে গিল বললেন, সতীর্থদের ভালোভাবে বোঝা এবং তাদের সেরা খেলাটা বের করে আনা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
গিল বিসিসিআই টিভিকে বলেন, “একজন অধিনায়ক হিসেবে বোঝা দরকার, কখন খেলোয়াড়দের পাশে দাঁড়াতে হবে আর কখন তাদের নিজের মতো ছেড়ে দিতে হবে। কারণ প্রত্যেকের জীবনযাত্রা আলাদা, বেড়ে ওঠা আলাদা, ব্যক্তিত্বও আলাদা। একজন ভালো অধিনায়ক জানে, কীভাবে কার থেকে সেরা পারফরম্যান্স বের করে আনতে হয়।”
“ক্রিকেটের বাইরেও খেলোয়াড়দের সঙ্গে এমন সব আলাপ হওয়া খুব রোমাঞ্চকর, যেখান থেকে তাদেরকে গভীরভাবে চেনা যায়। আর সেটাই আসলে সাহায্য করে, কীভাবে তাদের থেকে সেরা ফলটা বের করা যাবে।”
এর আগে জিম্বাবুয়েতে ভারতের টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন গিল। তিনি বললেন, নিজের ব্যাটসম্যান ও অধিনায়ক- এই দুই ভূমিকার মধ্যে স্পষ্ট বিভাজন রাখাটা খুব জরুরি।
গিল বলেন, “যখন আমি ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নামি, তখন সিদ্ধান্তগুলোও নিতে চাই ব্যাটসম্যান হিসেবে, অধিনায়ক হিসেবে নয়। যদি তখন অন্য কিছু ভাবি, সেটা আমার উপর অপ্রয়োজনীয় চাপ তৈরি করে। কারণ যখন আপনি ব্যাট করছেন, তখন আপনার সেই স্বাধীনতা দরকার, যা শুধু একজন ব্যাটসম্যানের দৃষ্টিকোণ থেকে আসে। তাই আমি শিখেছি, ব্যাট করতে নামলে অধিনায়কত্বের চিন্তা মাথায় না রাখাই ভালো।”
গিল নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন, কারণ তিনি অধিনায়ক হিসেবে বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মার কাছ থেকে শিখতে পেরেছেন, যারা দুজনেই এখন টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন।
“ছোটবেলায় ভারতীয় ক্রিকেটের কিংবদন্তিদের দেখে বড় হয়েছি। খুব সৌভাগ্য যে বিরাট ভাই, রোহিত ভাইদের সঙ্গে খেলতে পেরেছি,” বলেন গিল। “তাদের নেতৃত্বের ধরন একদম আলাদা, কিন্তু দুজনেই অভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে কাজ করেছেন। একজন অধিনায়ক হিসেবে জিততে চাইলে শৈলী আলাদা হতে পারে, কিন্তু উদ্দেশ্য থাকে এক। বিরাট ভাই সবসময় খুব আক্রমণাত্মক, সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়, ক্ষুধা আর উৎসাহে ভরপুর। অন্যদিকে রোহিত ভাইও আক্রমণাত্মক, কিন্তু সেটা হয়তো তার অভিব্যক্তি বা প্রতিক্রিয়ায় দেখা যায় না। মাঠে সে খুব কৌশলী, শান্ত, আর খেলোয়াড়দের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখে, কী চাইছে তা স্পষ্ট করে বলে। এই বিষয়গুলো আমি রোহিত ভাই থেকে শিখেছি।”
“রোহিত ভাই, বিরাট ভাই, অশ্বিন ভাই- তারা আমাদের দেখিয়ে দিয়েছেন, কীভাবে বিদেশে গিয়ে ম্যাচ ও সিরিজ জেতা যায়। হ্যাঁ, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা এক জিনিস, কিন্তু তাদের দেওয়া ‘ব্লুপ্রিন্ট’ থাকার কারণে আমাদের সেই পথটা জানা আছে।”
ইংল্যান্ড সফরের কথা বলতে গিয়ে গিল উচ্ছ্বসিত, কারণ পাঁচ টেস্টের সিরিজ মানেই বিশেষ কিছু চ্যালেঞ্জ।
গিল বলেন, “আমার প্রিয় সিরিজও ছিল পাঁচ টেস্টের, যখন ইংল্যান্ড আমাদের দেশে খেলতে এসেছিল [২০২৪ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি]। পাঁচ টেস্টের সিরিজে এক আলাদা ধারা থাকে। শারীরিক, মানসিক- সবদিক থেকে খুব চ্যালেঞ্জিং। আর এটাই টেস্ট ক্রিকেটের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর দিক। এখানে একমাত্রিক কিছু নেই, লাল বলের ক্রিকেটে অনেক স্তরের লড়াই থাকে।”
“এটা সহজ হবে না, জানি। কিন্তু আমি মনে করি, আমরা যেকোনো চ্যালেঞ্জের জন্য তৈরি।”