images

স্পোর্টস / ক্রিকেট

দ্বিতীয় মেয়াদে কেমন ছিল বাংলাদেশে হাথুরুর অধ্যায় 

স্পোর্টস ডেস্ক

১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:১৬ পিএম

বাংলাদেশ ক্রিকেটের হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের চাকরি অনেকদিন ধরেই সুতায় ঝুলছে। ফারুক আহমেদ বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পরই তার চাকরিটা যাওয়ার কথা ছিল। তবে পাকিস্তান সিরিজে দল ভালো করায় সে যাত্রায় বেঁচে যান হাথুরু। ভারত সিরিজে জঘন্য পারফর্মেন্স জন্য ঝুলে ছিলো তার বিদায়ের ঘন্টা। অবশেষে চুক্তির মেয়াদ শেষের আগেই তাকে শোকজ লেটার পাঠিয়েছে বিসিবি। আজ আনুষ্ঠানিক এক সংবাদ সম্মেলনে হাথুরুসিংহেকে শোকজ এবং সাসপেন্ড করার ঘোষণা দেন বিসিবির নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদ।

সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি ফারুক বলেন, ‘দ্রুততম সিদ্ধান্তে বরখাস্ত করা হলো হাথুরুকে।’ বিসিবি সভাপতি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব হিসেবে যেহেতু খবরটা দেশের বাইরে যাবে, আন্তর্জাতিক আইন মেনে ৪৮ ঘণ্টা নোটিশ করেছি। এটা ইমিডিয়েট এফেক্টে সাসপেন্ড, এরপর বিদায়। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত কোচ ফিল সিমন্স।’

আরও পড়ুন- বরখাস্ত হলেন টাইগার কোচ হাথুরুসিংহে

আরও পড়ুন- শান্ত-লিটনদের নতুন কোচের নাম জানাল বিসিবি 

hatru_bangladeshহাথুরুসিংহে দুই মেয়াদে বাংলাদেশ দলের হেড কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রথম মেয়াদে ২০১৪ সালের মে থেকে ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের ক্রিকেটের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এরপর নিজ দেশ শ্রীলঙ্কার হেড কোচের দায়িত্ব পালন করেন হাথুরু। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশের কোচ হয়ে আসেন হাথুরু। কিন্তু তার প্রথম মেয়াদে বাংলাদেশ ক্রিকেটের যতটুকু উন্নতি দেখা গেছে, দ্বিতীয় মেয়াদে সেটা দেখা যায়নি।

আরও পড়ুন- সাকিবের দেশে আসা-যাওয়ায় আইনি বাধা নেই: আসিফ মাহমুদ

আরও পড়ুন- বাবরকে বাদ দেয়ার সমালোচনা করায় ফখরকে পিসিবির শোকজ

এমনকি এই সময়ে বাংলাদেশের সিনিয়র ক্রিকেটারদের মধ্যে বিভেদ তৈরি, বিসিবির বিধি ভঙ্গ ও ক্রিকেটারদের সাথে অশোভন আচরণের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে হাথুরুসিংহের বিরুদ্ধে। আজ ফারুক আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে হাথুরুর অভিযোগ নিয়ে বলেন, ‘বর্তমান কোচের ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করছিলাম মানিয়ে নিতে। দুই-তিনটা ঘটনা ঘটেছে। ইচ্ছে মতো ছুটি কাটানো, জাতীয় দলের খেলোয়াড়ে গায়ে হাত তোলার মতো ঘটনা কোনওভাবেই এটা দলের জন্য ভালো উদাহরণ ছিল না। তাই তাকে ৪৮ ঘণ্টার শোকজ ও সাসপেনশন দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই এটা স্থায়ী হয়ে যাবে।’

দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশে হাথুরুর অধ্যায়- 

২০২৩ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে টাইগার কোচিংয়ে হাথুরু অধীনে ১০টি টেস্ট, ৩৫টি ওয়ানডে ও ৩৫টি টি–টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। যেখানে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে হারজিত সমান- ৫টি জয় ও ৫টি হার। তবে বাংলাদেশের শক্তির জায়গা ওয়ানডেতে হতাশজনক হাথুরুর দ্বিতীয় অধ্যায়। শ্রীলঙ্কান এই কোচের দ্বিতীয় মেয়াদে একদিনের ক্রিকেটে ৩৫ ম্যাচে ১৩ টি জয়ের বিপরীতে হার ১৯টি, ম্যাচের ফল হয়নি ৩টি। আর ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাট টি–টোয়েন্টিতে ৩৫ ম্যাচের ১৯টিতে জিতেছে টাইগাররা। বিপরীতে হেরেছে ১৫টিতে, ম্যাচের ফল আসেনি একটিতে।

প্রথম মেয়াদে বাংলাদেশে হাথুরুর অধ্যায়- 

প্রথম অধ্যায়ে হাথুরুকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ছিল হাথুরু কড়া হেডমাস্টার। ক্রিকেটারদের কড়া শাসনের মধ্যে রেখে পারফরম্যান্স বের করে আনার নীতিতে বিশ্বাসী তিনি। সেই ফর্মুলাতে সাফল্যও মিলেছিল আগের অধ্যায়ে। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে হাথুরুর অধীনেই প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলে বাংলাদেশ। এছাড়া ২০১৫ সালে ঘরের মাঠে ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকার মত পরাশক্তির সাথে সিরিজও জিতেছিল টাইগাররা। ঘরের মাঠে টেস্ট জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। শ্রীলঙ্কার মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শততম টেস্ট জয়ও ছিল হাথুরুর অধীনেই।

2014-17_hatru_bangladesh

লঙ্কান এই কোচের অধীনে প্রথম মেয়াদে ২১ টেস্টের মধ্যে জয় ৬টিতে, ৫২ ওয়ানডের মধ্যে জয় ২৫টিতে ও ২৯টি টি-টোয়েন্টি খেলে জয় ছিল ১০টিতে। সিরিজ হিসেবে দেখলে সবচেয়ে বেশি ছয় জয় এসেছে ওয়ানডে সিরিজে। আর টি-টোয়েন্টি ও টেস্টে সমান একটি করে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ।