images

ইসলাম

মুসাল্লাহ জিবরিল: যেখানে নবীজিকে নামাজ শিখিয়েছেন জিব্রাইল (আ.)

ধর্ম ডেস্ক

২১ আগস্ট ২০২২, ০২:১৩ পিএম

পবিত্র কাবা শরিফের শাধারাওয়ানে বাদামী মার্বেলের টুকরোগুলো ‘মুসাল্লাহ জিবরিল’ নামে পরিচিত। স্থানটিকে চিহ্নিত করে রাখা হয়, যেখানে ফেরেশতা হজরত জিব্রাইল (আ.) মেরাজের রাতের ভ্রমণের পরে নবী (স.)-কে কীভাবে সালাত আদায় করতে হয় তা শিখিয়েছিলেন। 

পবিত্র কাবার ভেতরে আটটি মার্বেলের টুকরো দিয়ে মুসাল্লাহ জিবরিল তৈরি করা হয়েছে। যা 'মেরি স্টোন' নামে পরিচিত। পৃথিবীর দুর্লভ মার্বেল পাথরের মধ্যে অন্যতম এই মেরি স্টোন। হলদে বাদামী রঙের এ পাথরের বয়স আনুমানিক ৮১১ বছর। ৬৩১ সালে কাবা শরিফ তাওয়াফকালে এই বিরল পাথরগুলো উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন খলিফা আবু জাফর আল মানসুর। টুকরোগুলো বিভিন্ন আকারের; বড়টি ২১ সেমি চওড়া এবং ৩৩ সেমি লম্বা। খণ্ডগুলো ধারণ করেছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় একটি শিলালিপি।

তাওয়াফ চত্বর থেকে একটু নিচু স্থানে এই আটটি মার্বেল পাথর রাখা হয়েছে। এ পাথরগুলো ১২১৩ হিজরিতে চুরি হয়ে গিয়েছিল। পরে তা একজন মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি থেকে উদ্ধার করা হয়। ১৩৭৭ হিজরিতে এগুলো আবার স্বস্থানে স্থাপন করা হয়।

আরও পড়ুন: কোন আসমানে কার সাক্ষাৎ পেয়েছিলেন মহানবী (স.)

ইসলামের ইতিহাস অনুযায়ী, মেরাজের পর ফেরেশতা জিব্রাইল (আ.) দুই দিনে ১০বার পবিত্র কাবার দরজার কাছে এসে দাঁড়ান এবং প্রতি নামাজ দুইবার আদায় করেন। প্রথম দিন পাঁচ বার প্রতি সালাতের আউয়াল ওয়াক্ত বা শুরুর সময়ে আসেন, বাকি দিনে তিনি প্রতিটি সালাতের শেষ সময়ে আসেন। নবীজি (স.) এবং তাঁর সাহাবিদের নামাজের পদ্ধতি শেখানোর পাশাপাশি পাঁচটি সালাতের সময়কাল নির্ধারণ করার জন্য এটি করা হয়েছিল।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন: রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘জিবরাইল (আ.) কাবা শরিফের চত্বরে দুবার আমার নামাজে ইমামতি করেছেন। তিনি প্রথমবার জোহরের নামাজ আদায় করালেন যখন প্রতিটি জিনিসের ছায়া জুতার ফিতার মতো ছিল। অতঃপর তিনি আসরের নামাজ আদায় করালেন যখন কোনো বস্তুর ছায়া তার সমান ছিল। অতঃপর মাগরিবের নামাজ আদায় করালেন যখন সূর্য ডুবে গেল এবং যে সময়ে রোজাদার ইফতার করে। অতঃপর ইশার নামাজ আদায় করালেন যখন লাল বর্ণ অদৃশ্য হয়ে গেল। অতঃপর ফজরের নামাজ আদায় করালেন যখন ভোর বিদ্যুতের মতো আলোকিত হলো এবং যে সময় রোজাদারের ওপর পানাহার হারাম হয়।

আরও পড়ুন: যে পরিস্থিতিতে আবু বকরের সিদ্দিক উপাধি লাভ

তিনি (জিবরাইল) দ্বিতীয় দিন জোহরের নামাজ আদায় করালেন যখন কোনো বস্তুর ছায়া তার সমান হল এবং পূর্ববর্তী দিন ঠিক যে সময় আসরের নামাজ আদায় করেছিলেন। অতঃপর আসরের নামাজ আদায় করালেন যখন কোনো বস্তুর ছায়া তার দ্বিগুণ হল। অতঃপর মাগরিবের নামাজ আদায় করালেন পূর্বের দিনের সময়ে। অতঃপর ইশার নামাজ আদায় করালেন যখন রাতের এক-তৃতীয়াংশ চলে গেল এবং ফজরের নামাজ আদায় করালেন যখন জমিন আলোকিত হয়ে গেল। অতঃপর জিবরাইল (আ.) আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, হে মুহাম্মদ! এটাই হল আপনার পূর্ববর্তী নবীদের (নামাজের) ওয়াক্ত। নামাজের ওয়াক্ত এই দুই সীমার মাঝখানে।’ (মেশকাত: ৫৮৩; আবু দাউদ: ৪১৬)