images

ইসলাম

দুর্ঘটনা-অগ্নিকাণ্ডে মৃত ব্যক্তিরা শহীদ

ধর্ম ডেস্ক

১৫ আগস্ট ২০২২, ০৭:৪৮ পিএম

রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার কালামবাগ এলাকার এক প্লাস্টিক কারখানায় আজ (১৫ আগস্ট) অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এই পর্যন্ত ৬ জন মারা গেছে। একই দিন বিকেলে উত্তরার জসীম উদ্দীন এলাকায় ক্রেন থেকে গার্ডার ছুটে গিয়ে প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে শিশুসহ চারজন নিহত হয়েছেন। দুটি মর্মান্তিক ঘটনায় স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠেছে কামালবাজার ও উত্তরার জসীম উদ্দীন এলাকা।

এমন অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু মেনে নেওয়া কঠিন। তাদের পরিবার-পরিজনকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা কারো জানা নেই। তবে যেসব ঈমানদার অগ্নিকাণ্ড বা কোনো দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করে, তাদের জন্য নবীজির সুসংবাদ রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (স.) আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া ও কোনোকিছুর নিচে চাপা পড়া ব্যক্তিদের শহীদ বলে আখ্যা দিয়েছেন। 

আরও পড়ুন: চকবাজারের আগুনে মৃত্যু বেড়ে ছয়

আর সবচেয়ে উত্তম মৃত্যু হচ্ছে শহীদি মৃত্যু। প্রিয়নবী (স.) কামনা করতেন তাঁর উম্মতের মধ্যে শহীদের সংখ্যা বেশি হোক। জিহাদের ময়দানে শহীদ হওয়া ছাড়াও কিছু মৃত্যুকে শহীদি মৃত্যু বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে আগুনে পুড়ে, পানিতে ডুবে, কোনো কিছুর নিচে চাপা পড়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা অন্তর্ভুক্ত। আবদুল্লাহ ইবনে জাবের তাঁর বাবার সূত্রে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) তাঁর বাবা জাবের (রা.)-কে তাঁর রোগশয্যায় দেখতে গেলেন। তাঁর কাছে গিয়ে দেখলেন নারীরা কেঁদে কেঁদে বলছে, আমরা মনে করেছিলাম, তুমি আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়ে মৃত্যুবরণ করবে। 

তখন মহানবী (স.) বলেন, আল্লাহর রাস্তায় শহীদ না হলে তোমরা কাউকে শহীদ মনে করো না? এমন হলে তো তোমাদের শহীদের সংখ্যা অতি অল্পই হবে। আল্লাহর রাস্তায় নিহত ব্যক্তি শহীদ, পেটের পীড়ায় মৃত ব্যক্তি শহীদ, আগুনে পুড়ে মৃত ব্যক্তি শহীদ, পানিতে ডুবে মৃত ব্যক্তি শহীদ, কোনো কিছুর নিচে চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তি শহীদ, নিউমোনিয়াজাতীয় কঠিন পীড়ায় মৃত ব্যক্তি শহীদ, যে নারী গর্ভাবস্থায় মৃত্যুবরণ করে সেও শহীদ...। (আবু দাউদ: ৩১১১)

আরও পড়ুন: উত্তরায় গার্ডার ভেঙে প্রাইভেটকারে পড়ে নিহত ৪

সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ কত দয়ালু। মানুষের মৃত্যু অবধারিত। যখন সময় আসবে, তখন তাকে কেউ আটকে রাখতে পারবে না। সময়ের একমুহূর্ত আগেও কেউ তাকে মারতে পারবে না। তবে কারো মৃত্যু যদি কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা বা কঠিন রোগে হয়, মহান আল্লাহ তার বিনিময়ে তাকে শাহাদাতের মতো অতি সম্মানের মর্যাদা দিয়ে দেন। উল্লিখিত হাদিসটি ইবনে মাজাহয় এসেছে এভাবে—জাবের বিন আতিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে নবী (স.) তাঁকে দেখতে আসেন। জাবের (রা.)-এর পরিবারের কেউ কেউ বলল, আমরা আশা করতাম যে সে আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়ে মৃত্যুবরণ করবে। 

রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, তাহলে আমার উম্মতের শহীদের সংখ্যা তো খুব কম হয়ে যাবে। আল্লাহর পথে নিহত হলে শহীদ, মহামারিতে নিহত হলে শহীদ, যে নারী গর্ভাবস্থায় মারা যায় সে শহীদ এবং পানিতে ডুবে, আগুনে পুড়ে ও ক্ষয় রোগে মৃত্যুবরণকারীও শহীদ। (ইবনে মাজাহ: ২৮০৩)

আল্লাহ তাআলা এই দুই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহতদের শহীদি মর্যাদা দান করুন। আহতদের সুস্থতা দান করুন। তাদের পরিবার-পরিজনকে ধৈর্যধারণের তাওফিক দান করুন এবং তাদের উত্তম প্রতিদান দান করুন। আমিন।