ধর্ম ডেস্ক
১২ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৩২ পিএম
বিশ্ব ইসলামি অঙ্গন আজ এক প্রজ্ঞাবান আলেম ও দাঈকে হারালো। রাবেতা আল-আলম আল-ইসলামির সাবেক মহাসচিব, সৌদি আরবের শুরা কাউন্সিলের সাবেক উপপ্রধান এবং খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ ড. আব্দুল্লাহ ওমর নাসিফ ইন্তেকাল করেছেন। রোববার (১২ অক্টোবর) সকালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
ড. নসিফ ১৯৩৯ সালে সৌদি আরবের জেদ্দা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্নের পর তিনি রিয়াদের কিং সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে গমন করে একই বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
শিক্ষাজীবন শেষে তিনি কিং আবদুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন এবং পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়টির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন নতুন অনুষদ ও গবেষণা বিভাগ চালু হয়। সমাজ ও শিক্ষার মধ্যে সংযোগ স্থাপনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
আরও পড়ুন: মিসরের প্রখ্যাত আলেম ড. আহমদ ওমর হাশেমের ইন্তেকাল
ড. নসিফ রাবেতা আল-আলম আল-ইসলামির মহাসচিব হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়ে তিনি বিশ্বজুড়ে ইসলামি ঐক্য, সংলাপ ও শান্তির বার্তা প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সম্মেলনে তিনি সৌদি আরব ও মুসলিম বিশ্বের প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গিতে আন্তধর্মীয় সংলাপ ও সহাবস্থানের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন।
তিনি সৌদি আরবের শুরা কাউন্সিলের উপপ্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি গবেষণা, শিক্ষা ও দাওয়াতের ক্ষেত্রে রেখে গেছেন এক অনন্য উত্তরাধিকার। তাঁর বহু গ্রন্থ, বক্তৃতা ও আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ মুসলিম সমাজে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।
আরও পড়ুন: মদিনার কোরআন শিক্ষার স্তম্ভ শায়খ বশির বিন আহমেদ মারা গেছেন
মধ্যপন্থা ও ভারসাম্যপূর্ণ চিন্তাধারার জন্য তিনি বিশ্বজুড়ে পরিচিত ছিলেন। তাঁর জীবনের লক্ষ্য ছিল ইসলামের প্রকৃত মর্মবাণী প্রচার, চরমপন্থা পরিহার এবং মানবতার কল্যাণে শিক্ষা ও বিজ্ঞানের প্রসার ঘটানো।
রোববার আছর নামাজের পর জেদ্দার আল-জাফালি মসজিদে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে মরদেহ দাফন করা হয় আল-আসাদ কবরস্থানে। তিনি স্ত্রী হিন্দ বিনতে আবদুলওয়াহাব বানাজাহ ও সন্তান ড. ওমর, মুহাম্মাদ, আয়েশা, খাদিজা এবং মাহমুদের শোকসন্তপ্ত পরিবার রেখে গেছেন।
শিক্ষাবিদ, আলেম ও সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলেন, ‘ড. নসিফের মৃত্যু শুধু সৌদি আরব নয়, সমগ্র মুসলিম বিশ্বের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।’ আল্লাহ তাআলা তাঁকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন।