images

ইসলাম

মুসলিম চেতনাই হোক মূল পরিচয়: আশুরা নিয়ে শায়খ আহমাদুল্লাহ

ধর্ম ডেস্ক

০৬ জুলাই ২০২৫, ০৩:২৬ পিএম

আশুরার দিন মুসলমানদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এই পবিত্র দিনে শুধু রোজা রাখাই নয়, বরং এর পেছনের আত্মিক ও আদর্শিক শিক্ষা হৃদয়ে ধারণ করাও জরুরি বলে মনে করেন দেশের খ্যাতনামা ইসলামি আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ।

সম্প্রতি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি আশুরার দুই রোজার পেছনের গভীর তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন। শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘আশুরার রোজার সঙ্গে আরেকটি রোজা রাখার সুন্নাহসম্মত নির্দেশনা মূলত মুসলমানদের নিজস্বতা ও স্বাতন্ত্র্যবোধের চেতনা থেকে এসেছে।’

তিনি বলেন, নবী মুহাম্মদ (স.) ইহুদিদের সঙ্গে সাদৃশ্য এড়াতে আশুরার রোজার সঙ্গে একটি অতিরিক্ত রোজার নির্দেশ দেন। এটি ছিল মুসলমানদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও ধর্মীয় চেতনায় অবিচল থাকার এক অনন্য নিদর্শন।

শায়খ আহমাদুল্লাহ দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আজ আমাদের সন্তানদের চিন্তাচেতনা, পছন্দ-অপছন্দ, এমনকি নাম রাখার ক্ষেত্রেও পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাব প্রবল। আমরা হীনম্মন্যতায় ভুগছি। ইসলামি ঐতিহ্যবোধ আমাদের মাঝে মলিন হয়ে যাচ্ছে।’

আরও পড়ুন: সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে ষড়যন্ত্র, যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ

তিনি আরো বলেন, ‘নবীজি (স.) মুসলিম-স্বাতন্ত্র্যবোধের ব্যাপারে এতটাই সজাগ ছিলেন যে, আশুরার রোজাও যেন ইহুদিদের মতো না হয়, সেদিকেও দৃষ্টি রেখেছেন। অথচ আমরা আজ স্রোতের তালে গা ভাসিয়ে চলেছি। আমরা যেন হয়ে গেছি নদীতে ভাসা এক মৃত গাছের গুঁড়ি, যাকে স্রোত যেখানে খুশি ভাসিয়ে নিয়ে যায়।’

তার বক্তব্যে বারবার ফিরে আসে আত্মবিশ্বাস ও আত্মপরিচয়ের উপর গুরুত্বারোপ। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি এখনই জেগে না উঠি, সময়ের স্রোতের উল্টো দিকে না হাঁটি, তাহলে আমাদের গন্তব্য হবে ধ্বংসের দিকে।’

শেষে তিনি আশুরাকে উপলক্ষ করে একটি দীপ্ত শপথ নেওয়ার আহ্বান জানান- ‘ইসলাম আমাদের গর্বের ঠিকানা। জীবনভর আমার ইসলামি স্বাতন্ত্র্যবোধের চেতনায় উজ্জীবিত হব—এটাই হোক এবারের আশুরার শপথ।’

আরও পড়ুন: রসুল (স.)-এর সমরনীতি আজও পৃথিবীর জন্য শান্তির অনুপম আদর্শ

শায়খ আহমাদুল্লাহর এই স্ট্যাটাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। বহু মুসলিম তরুণ তাঁর বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেদের সংস্কৃতি ও চেতনার দিকে ফিরে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

আসলে আশুরা শুধু ইতিহাস নয়, এটি আদর্শেরও নাম। শায়খ আহমাদুল্লাহর এই আহ্বান হয়ত আমাদের আত্মপরিচয়ের সন্ধান করে দিতে পারে—শুধু রোজা নয়, বরং রোজার অন্তর্নিহিত চেতনাকেও ধারণ করার মাধ্যমেই।