বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ, নিপীড়ন ও সংঘাতের মধ্যেই মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.)-এর মানবিক সমরনীতির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ ও দাঈ শায়খ আহমাদুল্লাহ।
তিনি তাঁর এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে আজকের তথাকথিত ‘সভ্য’ বিশ্বের সঙ্গে নবীজি (স.)-এর যুদ্ধনীতি ও নৈতিক আচরণের তুলনা করে লিখেছেন, ‘প্রিয়নবী (স.)-এর অংশগ্রহণ করা ২৭টি যুদ্ধে উভয়পক্ষে নিহতের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪০০। তাঁদের প্রত্যেকেই ছিলেন সামরিক যোদ্ধা। অথচ আজকের পৃথিবীতে এক বোমার আঘাতে নিহত হয় চার শতাধিক সাধারণ মানুষ, যাদের মধ্যে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরাও থাকে। এরপরও আপনাকে বলতে হবে, আজকের পৃথিবী সভ্য?’
বিজ্ঞাপন
শায়খ আহমাদুল্লাহ নবীজি (স.)-এর সহনশীলতা, মানবাধিকার, পরিবেশ রক্ষা ও সংখ্যালঘুদের প্রতি সহানুভূতির বাস্তব দৃষ্টান্ত তুলে ধরে বলেন, ‘নবীজি (স.) কখনো কোনো নারী বা শিশুর গায়ে ফুলের টোকাও দেননি, কখনো উপাসনালয়ের যাজকদের হত্যা করেননি, এমনকি লাশের সঙ্গেও অমানবিক আচরণ করতে নিষেধ করেছেন। তাঁর খলিফা আবু বকর (রা.) সৈন্যদের গাছ ও ফসল ধ্বংস করতে নিষেধ করেছিলেন। অথচ আজ সব জায়গায় এর উল্টো চিত্র।’
আরও পড়ুন: ৫০ বছর ধরে ইসলামপন্থীদের প্রতি বৈষম্য, করণীয় জানালেন শায়খ আহমাদুল্লাহ
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান পৃথিবীতে রাতের আঁধারে ঘুমন্ত মানুষের ওপর হামলা চালানো হয়, উপাসনালয়ে নামাজরত নিরীহদের রক্ত ঝরানো হয়, নিরস্ত্র নারীর কান্না গোপন করা যায় না; অথচ তারপরও বলা হয়, আমরা মানবিক, শান্তিকামী ও সংবেদনশীল!’
আজকের পৃথিবীতে যখন সাম্রাজ্য বিস্তার ও ক্ষমতা ধরে রাখার লড়াইয়ে তৈরি হচ্ছে ক্ষেপণাস্ত্র, পারমাণবিক অস্ত্র, ড্রোন ও কার্পেট বোমা। শায়খ আহমাদুল্লাহ স্মরণ করিয়ে দেন, ‘নবীজি (স.) সম্মুখযুদ্ধেও আগে আক্রমণ করতেন না। বরং শেষবারের মতো প্রতিপক্ষকে সত্যের দিকে আহ্বান করতেন। তাঁর আদর্শ অনুসরণ করলে যুদ্ধপ্রবণ এই পৃথিবীর আগুন অনেকটাই নিভে যাবে।’
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার প্রতি শায়খ আহমাদুল্লাহর খোলা চিঠি
অশান্ত সময়ের মধ্যে এ ধরনের স্ট্যাটাস শুধুই একটি বক্তব্য নয়; বরং এটি শান্তি, ন্যায্যতা ও মানবিকতার পথে ফিরে যাওয়ার এক জোরালো আহ্বান। শায়খ আহমাদুল্লাহর এই বার্তা আজ শুধু মুসলমানদের নয়; সমগ্র বিশ্ব মানবতার জন্যও একটি মহামূল্যবান শিক্ষা।

