images

ইসলাম

পরচুলা পরা কি জায়েজ?

ধর্ম ডেস্ক

২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:০৮ পিএম

পরচুলা মানে পরের চুল বা নকল চুল বা কৃত্রিম চুলের তৈরি মাথার আচ্ছাদন। চুলের শোভা বাড়াতে পরচুলার ব্যবহার আদিকাল থেকে। ইসলাম ধর্মে পরচুলা ব্যবহারের বিধান জানতে চান অনেকে।

এ বিষয়ে ফুকাহায়ে কেরামের বক্তব্য হলো- মানুষের চুল পরচুলা হিসাবে ব্যবহার করা নাজায়েজ। হাদিস শরিফে এ ব্যাপারে কঠিন ধমকি এসেছে। নবী (স.) বলেন -لَعَنَ اللَّهُ الوَاصِلَةَ وَالمُسْتَوْصِلَةَ ‘আল্লাহ তাআলা লানত করেন ওই নারীর প্রতি যে (অন্য নারীকে) চুল লাগিয়ে দেয় এবং যে নারী নিজে চুল লাগায়। (সহিহ বুখারি: ৫৯৩৩)

অবশ্য পরচুলা যদি কোনো মানুষের চুল না হয়ে শুকর ছাড়া অন্যকোনো পশুর হয় অথবা কৃত্রিম চুল হয়, তাহলে তা ব্যবহার করা অবৈধ নয়। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন- لاَ بَأْسَ بِالْوِصَالِ إِذَا كَانَ صُوفًا ‘পশম দিয়ে তৈরি পরচুলা ব্যবহার করতে সমস্যা নেই।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ২৫৭৪৩)

আরও পড়ুন: নারী-পুরুষ একে অপরকে সালাম দেওয়া জায়েজ?

সুনানে আবু দাউদের বর্ণনায় এসেছে, সাঈদ ইবনে জুবায়ের (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- لَا بَأْسَ بِالْقَرَامِلِ ‘করমাল’ ব্যবহারে কোনো সমস্যা নেই। (আবু দাউদ: ৪১৬৮) ‘করমাল’ আরবি শব্দ। অর্থ রেশম বা পশমের সুতা দিয়ে তৈরি কেশগুচ্ছ যা মহিলারা চুলের সাথে যুক্ত করে ব্যবহার করে। 

অতএব, নারীরা রেশম বা পশমের সুতা দিয়ে তৈরি কেশগুচ্ছ নিজের চুলের সঙ্গে সংযুক্ত করে ব্যবহার করতে পারবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, কৃত্রিম চুল লাগানো তখনই জায়েজ, যখন তা শুধুই সৌন্দর্যচর্চা পর্যন্ত সীমিত থাকবে। যদি এ ধরনের চুল ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতারণা উদ্দেশ্য থাকে তাহলে তা নাজায়েজ। (রদ্দুল মুহতার: ৬/৩৭২; বাজলুল মাজহুদ: ১৭/৫৮)

আরও পড়ুন: নারীদের সুগন্ধি ব্যবহারের বিধান

হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টের বিধান হলো- যদি নিজের মাথার চুল প্রতিস্থাপন বা ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়, তাহলে জায়েজ হবে। তবে অন্য মানুষের চুল প্রতিস্থাপন করলে তা জায়েজ হবে না। (কিতাবুন নাওয়াজেল: ১৬/২৩১-২৩২)

নকল চুল-দাড়ি লাগানো থাকলে অজু-গোসলে সতর্কতা জরুরি। কেননা নকল চুলের কারণে সাধারণত পানি মাথার তালুতে পৌঁছায় না, আর নকল দাড়ির কারণে মুখের একটা অংশে পানি লাগে না। অথচ শরীরের এসব অংশে পানি পৌঁছানো অজু ও গোসল উভয় ক্ষেত্রেই ফরজ। যদি পরচুলা পরা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়, সেক্ষেত্রে অজু ও গোসলের সময় পরচুলা খুলে নিতে হবে। পরে নামাজের আগে তা পরে নেওয়া যেতে পারে। তবে হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করানো হলে সেক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই।