সুগন্ধি বা খুশবোর ব্যবহার মূলত সুন্নত। আল্লাহর রাসুল (স.) সুগন্ধি পছন্দ করতেন এবং নিজে ব্যবহার করতেন। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের দুনিয়া থেকে আমার কাছে তিনটি জিনিস অধিক প্রিয়। স্ত্রী, সুগন্ধি আর আমার চক্ষু শীতল হয় নামাজের মাধ্যমে।’ (নাসায়ি: ৩৯৩৯)
নারীদের জন্যও ঘরের ভেতরে সুগন্ধি ব্যবহার জায়েজ। সেন্ট, পারফিউম, বডি স্প্রে ইত্যাদিতে যদি কোনো ধরনের নাপাক বস্তু মিশ্রিত না থাকে, তাহলে মুসলিম নারীরা ঘরের মধ্যে অবশ্যই সুগন্ধি ব্যবহার করবে। (তুহফাতুল আহওয়াজি: ৮/৭১)
বিজ্ঞাপন
তবে, পরপুরুষ গন্ধ পাবে এমন জায়গা দিয়ে নারীদের সুগন্ধি মেখে চলাচল করা নিষেধ। এতে পর্দার লঙ্ঘন হয়। কেননা ইসলামে নারীদের সুগন্ধি ব্যবহারের বিধান পর্দার বিধানের মতোই। অর্থাৎ নারী সুগন্ধি মেখে ঘর থেকে বের হলে শরয়ি পর্দা আদায় হয় না। হাদিসে ওসব নারীর ওপর অভিসম্পাত করা হয়েছে। মহানবী (স.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক চক্ষুই ব্যভিচারী। আর কোনো নারী যদি (কোনো ধরনের) সুগন্ধি ব্যবহার করে কোনো (পুরুষের) মজলিসের পাশ দিয়ে অতিক্রম করে, তবে সে ব্যভিচারিণী।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসায়ি, ইবনে হিব্বান, ইবনে খুজাইমা, হাকেম, সহিহুল জামে: ৪৫৪০)
‘যে মহিলা সুগন্ধি ব্যবহার করে লোকজনের পাশ দিয়ে যাওয়ার ফলে তারা তার ঘ্রাণ পেল সে মহিলা ব্যভিচারিণী।’ (নাসায়ি: ৫০৩৬)
এমনকি নারীরা আল্লাহর ইবাদত করার উদ্দেশ্যে মসজিদে যেতেও সুগন্ধি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে হাদিসে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘আল্লাহর বান্দিদেরকে মসজিদে আসতে বারণ করো না, তবে তারা যেন খুশবো ব্যবহার ছাড়া সাধাসিধাভাবে আসে।’ (আহমদ, আবু দাউদ, সহিহ জামে: ৭৪৫৭)
‘যে মহিলা সুগন্ধি ব্যবহার করে মসজিদে যায়, তার গোসল না করা পর্যন্ত কোন নামাজ কবুল হবে না।’ (ইবনে মাজাহ, সহিহ আল-জা-মিউস সাগির ওয়া জিয়াদাতুহ: ২৭০৩)
উল্লেখ্য, অনেক মহিলার দুর্গন্ধের সমস্যা থাকে। তারা শরিয়তের নির্দেশনা পালনার্থে সুগন্ধি ব্যবহার ছাড়া নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে পারেন। প্রয়োজনে প্রতি ঘণ্টা অন্তর অন্তর নিজেকে পরিস্কার করে নিতে পারেন। সমস্যা যদি জটিল হয়, তাহলে একজন চর্ম বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন এবং তাঁর পরামর্শমতো শরিয়তের দৃষ্টিতে বৈধ কিছু ব্যবহার করতে পারেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সকল নারীকে ইসলামের প্রতিটি বিধান যথাযথ পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।