ধর্ম ডেস্ক
০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৮ পিএম
সালাম শান্তির প্রতীক। সালাম দেয়া-নেয়া ইসলামি সংস্কৃতির অংশ। রাসুলুল্লাহ (স.) মুসলিমদের সালামের প্রচার প্রসারের নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে লোক সকল! তোমরা সালাম প্রচার করো, (ক্ষুধার্তকে) খাবার দান করো, আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখো এবং লোকে যখন (রাতে) ঘুমিয়ে থাকে, তখন তোমরা নামাজ পড়ো। তাহলে তোমরা নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (তিরমিজি: ২৪৮৫; ইবনে মাজাহ: ১৩৩৪-৩২৫১; দারেমি: ১৪৬০)
হাদিস শরিফে আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘এক মুসলমানের সঙ্গে অপর মুসলমানের ছয়টি সদ্ব্যবহারের বিষয় রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো, কারো সঙ্গে দেখা হলে তাকে সালাম করবে।’ (তিরমিজি: ২৭৩৬)
সালাম মুসলিম ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসা ও সম্প্রীতির প্রকাশ। সালামের মাধ্যমে ভ্রাতৃত্ব সুদৃঢ় হয়। হিংসা-বিদ্বেষ দূরীভূত হয়। সালাম দেওয়া সুন্নত; সালামের জবাব দেওয়া ওয়াজিব। আগে সালাম দিলে সওয়াব বেশি। হজরত আবু উমামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, মানুষের মধ্যে আল্লাহর কাছে সর্বাধিক উত্তম ওই ব্যক্তি, যে আগে সালাম দেয়। (আবু দাউদ: ৫১৯৭)
সালাম দেয়ার সাধারণ নিয়ম হলো- ‘বয়ঃকনিষ্ঠ বয়োজ্যেষ্ঠকে, পদচারী উপবিষ্টকে এবং অল্পসংখ্যক অধিকসংখ্যককে সালাম দেবে। (বুখারি: ৬২৩১)
আরও পড়ুন: ইসলামে ‘সালাম’ ছাড়া অন্য অভিবাদন নয়
সাক্ষাতে ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলাকেই সাধারণত আমরা সালাম হিসেবে চিনি। আসসালামু আলাইকুম এর অর্থ ‘আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক’। সালামের উত্তর সুন্দরভাবে সালাম প্রদানকারীকে শুনিয়ে দেওয়া উত্তম। যেমন ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহ বলা। অর্থ: ‘আপনার ওপর শান্তি ও আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক।’
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যদি কেউ তোমাদের জন্য দোয়া করে (সালাম দেয়), তাহলে তোমরাও তার জন্য দোয়া করো। তার চেয়ে উত্তম দোয়া অথবা তারই মতো ফিরিয়ে বলো। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে হিসাব-নিকাশ গ্রহণকারী।’ (সুরা নিসা: ৮৬)
চিঠি বা মেইলেও সালাম দেওয়া যায়। চিঠি বা মেইলে কেউ সালাম দিলে জবাব কীভাবে দিতে হবে জানতে চান অনেকে।
আরও পড়ুন: মাথা নিচু করে পা ছুঁয়ে সালাম, ইসলাম কী বলে
এর উত্তরে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, ‘লিখিত সালামের জবাব লিখেও দেওয়া যায় আবার মুখে উচ্চারণ করেও দেওয়া যায়। সুতরাং এক্ষেত্রে আপনি চাইলে জবাব লিখেও পাঠাতে পারেন অথবা নিজে নিজে মুখে জবাব দিয়ে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে মৌখিক জবাব তাকে শুনিয়ে দেওয়া জরুরি নয় এবং সালামের জবাবের জন্য তাকে পাল্টা উত্তর লেখা কিংবা ফোন করে জানানো কোনোটিই জরুরি নয়। বরং একাকী মুখে জবাব দিয়ে দিলেই হবে।
(ফয়জুল কাদির: ৪/৩১; রদ্দুল মুহতার: ৬/৪১৫)