images

ইসলাম

শাশুড়ির খেদমত নিয়ে ইসলাম যা বলে

ধর্ম ডেস্ক

০৬ জুন ২০২৪, ০৪:৫৬ পিএম

দাম্পত্য জীবন হলো আত্মার মেলবন্ধন। এখানে সবাই সন্তুষ্টির সঙ্গে মিলেমিশে থাকবে—এটাই সুন্নাহ। তাই স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই কর্তব্য- নিজ নিজ শ্বশুর শাশুড়িকে যথাযথ সম্মান করা। বিশেষ করে শ্বশুর শাশুড়ি একই ঘরে থাকলে তদের অসম্মান ও অবহেলা করা যাবে না। এটি ইসলামের শিক্ষা নয়, বরং তাদের বার্ধক্য কিংবা অসুস্থ অবস্থায় সেবা করা কর্তব্য।

তবে, ইসলামের বিচারে শ্বশুর-শাশুড়ির সেবা করা ও ননদ-দেবরের কাজে সহযোগিতা করা—এসব স্ত্রীর দায়িত্ব নয়। বরং তা অতিরিক্ত কাজ। কিন্তু বর্তমান সমাজে বিষয়টাকে এমনভাবে দেখা হয় যে, যেন এটিই স্ত্রীর প্রধান দায়িত্ব! বিভিন্ন পরিবারের অবস্থা তো এমন যে, ছেলের জন্য বউ আনা হয় কেবল শ্বশুর-শাশুড়ির সেবার জন্য। ইসলামের সঙ্গে এসব ভ্রান্ত ধারণার কোনো সম্পর্ক নেই। মা-বাবার সেবা-শুশ্রূষা করা সন্তানের দায়িত্ব— কোনোভাবেই পুত্রবধূর নয়। (আল-বাহরুর রায়েক: ৪/১৯৩; কিফায়াতুল মুফতি: ৫/২৩০)

আরও পড়ুন: বিবাহিত নারী মা-বাবার সেবা করবে কীভাবে?

সন্তান হিসেবে স্বামীর গুনাহ হবে নিজের অসুস্থ মা-বাবার খেদমত না করলে। ইসলামে নিজের মা-বাবার অবস্থান খুবই মর্যাদাপূর্ণ এবং মা-বাবার অসন্তুষ্টি খুবই মারাত্মক। এজন্যই আল্লাহর রাসুল (স.) বলেন, ‘মা-বাবাই হলো তোমার জান্নাত এবং জাহান্নাম।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৪২১)

তবে, স্ত্রী যদি সন্তুষ্টচিত্তে শ্বশুর-শাশুড়ির সেবা করে, তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। সেটি তার বড় মনের পরিচায়ক। এতে তার বিপুল সওয়াবও লাভ হবে। মূলত অন্যের প্রয়োজন পূরণ করা নবীজির আদর্শ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (স.) বলেছেন, ‘যতক্ষণ একজন মানুষ অন্য মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত থাকবে, আল্লাহ তাআলাও তার কল্যাণে রত থাকবেন।’ (মুসলিম: ৬৭৪৬)

আরও পড়ুন: স্ত্রী ও বাবা-মা’র হক আদায়ে ভারসাম্য রক্ষার উপায়

অতিরিক্ত কিছু স্ত্রীর ওপর চাপিয়ে দেওয়া ইসলাম সমর্থন করে না। স্ত্রী স্বতঃস্ফূর্তভাবে কিছু করলে ভিন্ন কথা। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক ভালো মানুষ তারাই, যারা স্ত্রীদের সঙ্গে সদাচরণ করে। (তিরমিজি: ১১৬২)

স্ত্রীকে মূলত যে দায়িত্ব নিয়ে বেশি সচেতন থাকতে হয় তা হলো স্বামীর নৈতিক আদেশ-নিষেধের প্রতি আনুগত্য। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘নারী যখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে, রমজান মাসের রোজা রাখবে, নিজের লজ্জাস্থানের হেফাজত করবে, স্বামীর অনুগত হবে, তখন জান্নাতের যেকোনো দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করবে।’ (মুসনাদে আহমদ: ১৬৬১)

মূলকথা হলো- ইসলাম ও নৈতিকতাবোধের দাবি এটাই যে, স্ত্রী স্বামীর বাবা-মাকে নিজের মা-বাবার মতো সম্মান দেবেন। তাদের সমীহের চোখে দেখবেন। মনেপ্রাণে তাদের ভালোবাসবেন। তাদের সেবা-যত্নকে নিজের জন্য পরম সৌভাগ্য মনে করবেন। শ্বশুর-শাশুড়িরও কর্তব্য হলো- পুত্রবধূকে নিজের মেয়ের মতো আদর ও মমতায় আবদ্ধ করা। তার সুখ, আনন্দ ও সুবিধার প্রতি সবিশেষ মনোযোগ দেওয়া।