ধর্ম ডেস্ক
২৯ মার্চ ২০২৪, ০৬:৫৬ পিএম
পবিত্র রমজানের ১৮তম দিন শেষ হলো আজ। রাতে এশার নামাজের পর পড়া হবে ১৯তম তারাবি। রমজান মাসের অন্যতম আমল হলো কোরআনুল কারিম খতমের মাধ্যমে তারাবি নামাজ আদায়। ইসলামি ফাউন্ডেশন নির্ধারিত ১৯তম তারাবিতে দেশের প্রায় সব মসজিদে আজ পড়া হবে সুরা আহজাব ৩১ আয়াত থেকে সুরা ইয়াসিন ২১ আয়াত পর্যন্ত। পারা হিসেবে আজ পড়া হবে ২২তম পারা।
চলুন একনজরে দেখে নিই- আজকের খতম তারাবিতে কী তেলাওয়াত করা হবে।
সুরা আহজাব, আয়াত ৩১-৫২
নবী (স.)-এর পরিবারের সদস্যদের ত্যাগ স্বীকারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। নবী জীবনের শেষদিকে মুসলমানদের আর্থিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে নবীপত্নীরা ভরণপোষণ একটু বাড়িয়ে দেওয়ার আবদার করেন। তখন তাদের বলা হয়, যদি সম্পদের প্রাচুর্য চাও তাহলে নবীজি থেকে পৃথক হয়ে যাও, আর আখেরাতের চিরস্থায়ী নেয়ামত চাইলে কষ্ট সহ্য করে নবীজির সঙ্গেই থাকতে হবে। নবীপত্নীরা নবীজির সাহচর্য ও আখেরাতকে প্রাধান্য দেন।
এরপর নবী (স.)-এর উদ্দেশ্যে একান্ত কিছু বিধানের বর্ণনা উপস্থাপন করা হয়েছে। অতঃপর ১০টি গুণের কথা বলা হয়েছে, যেগুলো মুসলমানদের ভেতরে থাকা চাই। গুণগুলো হলো- ইসলাম, ঈমান, সদা আল্লাহর আনুগত্য, সততা, ধৈর্য, সালাতে বিনয়-খুশু, সদকা, সিয়াম, লজ্জাস্থানের হেফাজত, বেশি বেশি আল্লাহর জিকির। তারপর রাসুল (স.)-এর পালকপুত্র জায়েদ (রা.) এর তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে বিয়ের বিষয় বর্ণিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১৮তম তারাবিতে যা পড়া হবে
সুরা আহজাব, আয়াত ৫৩-৭৩
কিছু পারিবারিক ও সামাজিক শিষ্টাচারের কথা বলা হয়েছে। কারো ঘরে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করো না। কারো বাড়িতে দাওয়াতে গেলে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে স্থান ত্যাগ করো। অনর্থক কথাবার্তায় মশগুল হয়ে মেজবানের সময় নষ্ট করা উচিত নয়। যাদের সঙ্গে পর্দা করা ফরজ, এমন নারীর কাছে কোনো জিনিস চাওয়ার প্রয়োজন হলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। তারপর রাসুল (স.)-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পাঠের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুরার শেষদিকে বলা হয়েছে, আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআন এবং বিভিন্ন আমানত পালনের দায়িত্ব বিশেষভাবে মানুষকে দান করেছেন। পাহাড়-পর্বত, আসমান-জমিন এই আমানতের দায়িত্ব গ্রহণ করতে অক্ষমতা প্রকাশ করেছিল।
সুরা সাবা, আয়াত ১-২১
সুরা শুরু হয়েছে জ্ঞানী ও সত্য অস্বীকারকারীর মাঝে পার্থক্য বর্ণনা করে। জ্ঞানী ছাড়া অন্যরাই কেবল সত্য অস্বীকার করতে পারে। এরপর হজরত দাউদ এবং সুলাইমান (আ.)-এর কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে সাবা সম্প্রদায়ের কথাও।
আরও পড়ুন: ১৭তম তারাবিতে যা পড়া হবে
সুরা সাবা, আয়াত ২২-৫৪
কাফেরদের প্রতি আল্লাহ তাআলা স্বয়ং প্রশ্ন করেছেন ও উত্তরও দিয়েছেন। তাদের প্রশ্ন তুলে ধরে তার অসাড়তা প্রমাণ করেছেন। বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী সবাইকে সতর্ক ও সচেতন হওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
সুরা ফাতির, আয়াত ১-১৪
মানুষকে পরকালের প্রতি ঈমানের উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে সুরার সূচনা হয়েছে। যুক্তির আলোকে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে কেন আখেরাতের প্রতি ঈমান আনা আবশ্যক।
সুরা ফাতির, আয়াত ১৫-২৭
সুরার এই অংশে বলা হয়েছে আখেরাতে একজন মানুষ কত বেশি অসহায় হয়ে পড়বে। শুধু ঈমানই তার একমাত্র সহায় হবে। এরপর আবারও যুক্তি দিয়ে বান্দাকে আখেরাতে বিশ্বাসের প্রয়োজনীয়তা বোঝানো হয়েছে। আর বলা হয়েছে, একদিন বান্দাকে হিসাব দিতে হবেই।
সুরা ইয়াসিন, আয়াত ১-৮৩
সুরা শুরু হয়েছে কসম দিয়ে। আল্লাহ তাআলা কসম করে বলেছেন যে, হজরত মুহাম্মদ (স.) একজন সত্য নবী। তারপর কুরাইশ সম্প্রদায়ের কাফেরদের নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তারা কুফর ও ভ্রষ্টতায় সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। ফলে তারা আল্লাহর ক্রোধের পাত্র হয়েছিল। তারপর হাবিব নাজ্জারের ঘটনা বিবৃতি হয়েছে। ঘটনাটির পূর্ণ বিবরণ আগামীকাল পঠিতব্য আয়াতাংশে আলোকপাত করা হবে ইনশাআল্লাহ।