images

ইসলাম

১৫তম তারাবিতে যা পড়া হবে

ধর্ম ডেস্ক

২৫ মার্চ ২০২৪, ০৭:০১ পিএম

পবিত্র রমজানের ১৪তম দিন শেষ হলো আজ। রাতে এশার নামাজের পর পড়া হবে ১৫তম রমজানের তারাবি। রমজান মাসের অন্যতম আমল হলো কোরআনুল কারিম খতমের মাধ্যমে তারাবি নামাজ আদায়। ইসলামি ফাউন্ডেশন নির্ধারিত ১৫তম তারাবিতে দেশের প্রায় সব মসজিদে আজ পড়া হবে সুরা মুমিনুন ১ আয়াত থেকে সুরা ফোরকান ২০ আয়াত পর্যন্ত। পারা হিসেবে আজ পড়া হবে ১৮তম পারা।

চলুন একনজরে দেখে নিই- আজকের খতম তারাবিতে কী তেলাওয়াত করা হবে।

সুরা মুমিনুন, আয়াত ১-২২
শুরুতে মুমিনের কিছু গুণের কথা বলা হয়েছে। যা অর্জনের মাধ্যমে ব্যক্তি জান্নাতুল ফেরদাউসের অধিকারী হতে পারে। গুণগুলো হলো ১. রিয়া ও কপটতামুক্ত খাঁটি ঈমান। ২. নামাজের মধ্যে খুশু তথা আল্লাহর সামনে ভয় ও বিনয়ের সঙ্গে দাঁড়ানো। ৩. অনর্থক কথাবার্তা, কাজকর্ম ও জিনা ব্যভিচার এবং অশ্লীলতা থেকে মুক্ত থাকা। ৪. জাকাত প্রদান, আমানত রক্ষা করা এবং প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করা ৫. নিয়মিত নামাজ আদায় এবং নামাজের সময়, আদব ও রুকনগুলোর প্রতি যত্নবান থাকা।
এরপর মানুষ ও সাত আসমান-জমিনের সৃষ্টি, বৃষ্টিবর্ষণ এবং এর মাধ্যমে বিভিন্ন ফল-ফসলের উৎপাদন, চতুষ্পদ প্রাণী ও এদের মাঝে দুধ, গোশত, পশম, বহনক্ষমতা, ধৈর্যশীলতা প্রভৃতি উপকারিতার সৃষ্টি প্রসঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার কুদরতের প্রমাণ পেশ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ১৪তম তারাবিতে যা পড়া হবে

সুরা মুমিনুন, আয়াত ২৩-৯২
কয়েকজন নবীর ঘটনা ও শিক্ষা সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। তারা হলেন হজরত নুহ (আ.), হজরত হুদ (আ.), হজরত সালেহ (আ.), হজরত মুসা (আ.), হজরত হারুন (আ.) এবং হজরত ঈসা (আ.) প্রমুখ নবীগণ। তাদের সবার একই দাওয়াত, একই কার্যক্রম এবং একই উদ্দেশ্য ছিল। তারপর বলা আল্লাহর একত্ববাদ সাব্যস্ত করে এবং শিরকের খণ্ডনের পর বলা হয়েছে, কেয়ামতের দিন যারা সৌভাগ্যবান তাদের আমলের পাল্লা ভারী হবে আর দুর্ভাগাদের আমলের পাল্লা হবে হালকা; ওই দিন কোনো সম্পর্ক ও অজুহাত কাজে আসবে না।

সুরা মুমিনুন, আয়াত ৯৩-১১৮
আল্লাহ তাআলা রাসুল (স.)-এর মাধ্যমে সব মানুষকে এই শিক্ষা দিয়েছেন, তোমরা এই প্রার্থনা করো, হে আমার রব! আমার প্রতি অনুগ্রহ করুন এবং আমাকে ক্ষমা করে দিন। আপনিই শ্রেষ্ঠ অনুগ্রহকারী।

সুরা নুর, আয়াত ১-২০
জিনা ব্যাভিচারের শাস্তি সম্পর্কে মৌলিক বিধান বর্ণনা করা হয়েছে। এরপর অপবাদ রটনা করা, সাক্ষ্যদান, মিথ্যা বলা ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: দ্রুত তারাবি পড়লে যে ক্ষতি

সুরা নুর, আয়াত ২১-৩৪
বলা হয়েছে মুমিনরা যেন শয়তানের অনুসরণ না করে। আরো বলা হয়েছে যে পুরুষ যৌবনের হেফাজত করবে সে অনুরূপ নারী পাবে। আর যে যৌবনের হেফাজত করবে না সে অনুরূপ নারীই পাবে।
দৃষ্টির হেফাজত, পর্দা, অতিশয় বৃদ্ধা নারীর পর্দা, ঘরে প্রবেশের অনুমতি, বিবাহযোগ্য নরনারী এবং বিধবা বিবাহের নির্দেশ, দাস-দাসীদের ব্যাপারে ইসলামের নির্দেশনা, বৈঠক থেকে ওঠা  ইত্যাদি প্রসঙ্গে আলোকপাত করা হয়েছে।

সুরা নুর, আয়াত ৩৫-৬৪
নবীজীবনের একটি মর্মান্তিক ও দুঃখজনক ঘটনা সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। রাসুল (স.)-এর স্ত্রী হজরত আয়েশা (রা.)-কে একটি কুচক্রী মহল মিথ্যা অপবাদ দিয়েছিল। আল্লাহ তাআলা দশটি আয়াত নাজিল করে তাদের সে অপবাদ মিথ্যায় পরিণত করেন এবং আম্মাজান আয়েশা (রা.)-এর চারিত্রিক পবিত্রতার ঘোষণা দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহই হলেন আসমানগুলো ও জমিনের নুর। তিনি যাকে খুশি তাকে তার নুরের পথ দেখান। যারা সে নুরের ছোঁয়া পায় তারা দিন-রাত আল্লাহর তাসবিতে মশগুল থাকে; দুনিয়ার কোনো ব্যস্ততা তাদের আল্লাহর জিকির থেকে গাফেল রাখতে পারে না। আর যারা খোদার নুর থেকে বিরত তারা ভ্রষ্টতার অন্ধকারে নিমজ্জিত, তারা সবসময় মরীচিকার পেছনে ছুটছে। স্রষ্টার একত্ববাদের যে প্রমাণাদি সৃষ্টির মাঝে বিদ্যমান সে প্রসঙ্গে বিবরণ দেয়ার পর বলা হয়েছে, মুমিন সর্বাবস্থায় আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্যে নিজেকে নিয়োজিত রাখে। আর মুনাফিকরা সবসময় সুযোগের সন্ধানে থাকে।

আরও পড়ুন: তারাবি না পড়লে কি রোজার মূল্য কমে যায়?

সুরা ফুরকান, আয়াত ১-২০
পবিত্র কোরআন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। কোরআনের ব্যাপারে মুশরিক জাতি নানা রকমের আপত্তিকর প্রশ্ন তুলত। সে সবের জবাব দেওয়া হয়েছে। এরপর রাসুল (স.) সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। এক শ্রেণির লোক জিদ ও ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে রাসুল (স.)-কে মিথ্যা প্রতিপন্ন করত। তাদের ধারণা ছিল, কোনো মানুষের পক্ষে রাসুল বা নবী হওয়া সম্ভব নয়। নবী-রাসুল তো হবেন ফেরেশতাদের মধ্য থেকে কেউ। আর যদি মেনেও নেয়া হয়, কোনো মানুষ নবী বা রাসুল হতে পারে, তাহলে তিনি তো হবেন পার্থিব বিচারে অবস্থাশালী এবং নেতৃস্থানীয়! কোনো অসহায় এতিম কখনো নবী হতে পারে না। তাদের সেসব অসার ও অবান্তর ধ্যান-ধারণার মজবুত ও সুদৃঢ় জবাব দেওয়া হয়েছে।