তারাবি পবিত্র রমজানের বিশেষ ইবাদত। এই নামাজের অসংখ্য ফজিলত বর্ণিত হয়েছে হাদিস শরিফে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজানের রাতে তারাবি নামাজ আদায় করে, তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করা হয়।’ (বুখারি: ২০৪৭)
তারাবি নামাজ মূলত আরামের নামাজ। তারাবি ‘তারবিহাতুন’-এর বহুবচন। তারবিহাতুন শব্দের অর্থই হলো আরাম করা, বিশ্রাম করা। ইসলামি শরিয়তের নিয়ম অনুযায়ী, এই নামাজে প্রতি চার রাকাত পরপর চার রাকাত পরিমাণ বসে আরাম করার বিধান রয়েছে।
লক্ষণীয় যে আমাদের সমাজে কিছু মসজিদে কে কত দ্রুত পড়তে পারে, তা-ই বড় হয়ে দাঁড়ায়। এক্ষেত্রে কোরআন পাঠের সাধারণ নিয়মাবলী ও আদবের প্রতিও লক্ষ করা হয় না। তাছাড়া মুসল্লিরা এভাবে নামাজ পড়ে অভ্যস্ত হওয়ার কারণে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে দ্রুত নামাজ শেষ করার নির্দেশও থাকে। হাফেজ সাহেবরা সেই নির্দেশের প্রতি সম্মান দেখিয়ে তাড়াহুড়া করে নামাজ শেষ করার চেষ্টা করে থাকেন। ফলে কোরআন শ্রবণের মাধ্যমে মুসল্লিদের অন্তরে যে স্বাদ অনুভব করার কথা, যে আবেগ সৃষ্টি হওয়ার কথা, সেটা হয় না।
এতে তারাবি নামাজের সওয়াব নষ্ট হয়। ইসলামী আইনবিদদের মতে, যে গতিতে পড়লে পবিত্র কোরআনের শব্দাবলি বোঝা যায়, ন্যূনতম সেই গতিতে পবিত্র কোরআন পড়তে হবে। তবে যে গতিতে পড়লে কিছুই বোঝা যায় না, সে গতিতে পড়া বৈধ নয়, এর দ্বারা সওয়াবও হবে না। (ফতোয়ায়ে শামি: ২/৪৭; ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/১১৭)
সুতরাং দ্রুত তারাবি পড়ার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আল্লাহ তাআলা কোরআন তেলাওয়াতের পদ্ধতি বর্ণনা করে ইরশাদ করেছেন, وَرَتِّلِ الْقُرْآنَ تَرْتِيلًا ‘এবং কোরআন আবৃত্তি করুন সুবিন্যস্ত ভাবে ও স্পষ্টভাবে।’ (সুরা মুজ্জাম্মিল: ৪)
বিজ্ঞাপন
আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘সে আমাদের দলভুক্ত নয়, যে সুন্দর সুরে কোরআন তেলাওয়াত করে না।’ (বুখারি: ৭৫২৭)
তাই প্রতিটি মুমিনের উচিত তারাবির নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে তার যথাযথ হক আদায়ের চেষ্টা করা। তারতিলের সঙ্গে কোরআন তেলাওয়াত করা। মহান আল্লাহ মুসলিম উম্মাহকে সেই তাওফিক দান করুন। আমিন।
