images

ইসলাম

১০ম তারাবিতে যা পড়া হবে

ধর্ম ডেস্ক

২০ মার্চ ২০২৪, ০৬:৫১ পিএম

পবিত্র রমজানের ৯ম দিন শেষ হলো আজ। রাতে এশার নামাজের পর পড়া হবে ১০ম রমজানের তারাবি। রমজান মাসের অন্যতম আমল হলো কোরআনুল কারিম খতমের মাধ্যমে তারাবি নামাজ আদায়। ইসলামি ফাউন্ডেশন নির্ধারিত ১০ম তারাবিতে দেশের প্রায় সব মসজিদে আজ পড়া হবে সুরা ইউসুফ ৫৩ আয়াত থেকে সুরা হিজর ১ আয়াত পর্যন্ত। পারা হিসেবে তেলাওয়াত করা হবে ১৩তম পারা।

চলুন একনজরে দেখে নিই- আজকের খতম তারাবিতে কী তেলাওয়াত করা হবে।

সুরা ইউসুফ, আয়াত ৫৩-৬৮
ইউসুফ (আ.) নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে কারাগার থেকে মুক্তি পান। শুধু তাই নয়, মিশরের ধনভাণ্ডারের রক্ষক তথা অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বেও অধিষ্ঠিত হন। রাজার ওই স্বপ্ন অনুযায়ী মিশরে অল্প ক’বছরে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ে। অন্যান্যদের মতো তার বৈমাত্রেয় ভাইয়েরাও মিশরে আসেন খাদ্য-শস্য নেয়ার জন্য। ইউসুফ নবী ভাইদের চিনতে পারেন। কিন্তু ভাইয়েরা তাকে চিনতে পারেনি। ভাইদের পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য দিয়ে এই বলে সতর্ক করা হয়েছে যে, পরবর্তী সময়ে তাদের আরেক ভাই বিন ইয়ামিনকে যেন সঙ্গে আনে। তা না হলে তাদেরকে আর কোনো শস্য দেওয়া হবে না। ভাইয়েরা তাদের পিতা ইয়াকুব (আ.)-কে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে বিন ইয়ামিনকে সঙ্গে করে মিশরের উদ্দেশ্যে রওনা করেছে।

আরও পড়ুন: ৯ম তারাবিতে যা পড়া হবে

সুরা ইউসুফ, আয়াত ৬৯-১০৪
খাদ্য-শস্যসহ ফেরার পথে কৌশলে বিন ইয়ামিনকে ইউসুফ (আ.) এর কাছে রেখে দেওয়া হয়। অন্য ভাইয়েরা অগত্যা বিন ইয়ামিনকে ছাড়াই পিতার সামনে দাঁড়ায়। বিন ইয়ামিনকে না পেয়ে নবী ইয়াকুব (আ.) আবার তাদেরকে মিশর যেতে বলেন। এবার ইউসুফ (আ.) ভাইদের পরিচয় দেন এবং বলেন, আমিই সেই ইউসুফ, যাকে তোমরা হত্যা করতে চেয়েছিলে। আজ তোমাদের প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই। যাও ফিরে যাও এবং আব্বা-আম্মাসহ বাকী সবাইকে নিয়ে আসো। সবাই এসে ইউসুফের উদ্দেশ্যে বিনীত হয়ে সেজদাবনত হয়। 

সুরা ইউসুফ, আয়াত ১০৫-১১১
মুমিনদের উদ্দেশ্যে নসিহতের মাধ্যমে সুরার সমাপ্তি টানা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘জেনে রাখ! এই রাসুলদের জীবনকাহিনীতেই অন্তর্দৃষ্টিদের জন্য রয়েছে অগণিত শিক্ষা।

সুরা রাদ, আয়াত ১-১৮
আল্লাহর সৃষ্টি বৈচিত্র্যের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। সৃষ্টিরাজিতে ছড়িয়ে থাকা এতসব নিদর্শন প্রত্যক্ষ করা সত্ত্বেও যারা আল্লাহর কালাম অবিশ্বাস করে তাদের জন্য কঠোর আজাবের ব্যবস্থা রয়েছে। নবীর দায়িত্ব শুধু তাবলিগ করা। যেমন পূর্ববর্তী নবীরাও করে গেছেন। আল্লাহর জ্ঞান বৈচিত্র্যের কথা বলা হয়েছে সুরা এই অংশে। তারপর প্রশ্ন করা হয়েছে, যারা অসীম জ্ঞানের অধিকারী আল্লাহকে মানে আর যারা মানে না তারা কি সমান হতে পারে? যারা আল্লাহকে মানে না তাদের জন্য কতই না নিকৃষ্ট পরিণাম অপেক্ষা করছে! 

আরও পড়ুন: ৮ম তারাবিতে যা পড়া হবে

সুরা রাদ, আয়াত ১৯-৩৭
যারা আল্লাহ এবং তার কালামে বিশ্বাস করে তাদের বৈশিষ্ট্য কী তা বলে দেওয়া হয়েছে। আবার যারা এর বিপরীত বিশ্বাস পোষণ করে তাদের বৈশিষ্ট্য কী তা-ও বলা হয়েছে। নবীকে উদ্দেশ্য করে বলা হচ্ছে যে, হে নবী! তোমার পূর্বেও এমন অনেক জাতি গত হয়েছে যারা সত্যের আহ্বানে সাড়া দেওয়ার বদলে গোয়ার্তুমির আশ্রয় নিয়েছে। এখন যারা সত্য অস্বীকার করছে তাদের যত অলৌকিক কিছুই দেখানো হোক না কেন- তারা ঈমান আনবে না।  
পক্ষান্তরে যারা ঈমানের রঙে নিজেদের রাঙিয়েছে আল্লাহ তাদের পরকালকে অপরূপ নেয়ামতরাজি দিয়ে সাজিয়ে রেখেছেন। 

সুরা রাদ, আয়াত ৩৮-৪৩
কাফেরদের থেকে উত্থাপিত দাবির জবাব দেওয়া হয়েছে। কাফেররা বিভিন্ন অলৌকিক নিদর্শন দাবি করছিলো। আল্লাহ বলছেন, অলৌকিক নিদর্শন শুধু আল্লাহর এখতিয়ারধীন। কোনো নবী বা অলির ইচ্ছায় অলৌকিক কিছু হয় না। আল্লাহ যখন তার আজাব বাস্তবায়ন করবে তখন কাফেরদের আর পালানোর কোনো জায়গা থাকবে না।

আরও পড়ুন: খতম তারাবিতে যেদিন যা তেলাওয়াত করা হবে

সুরা ইবরাহিম, আয়াত ১-২১
কোরআনের মাহাত্ম্য সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনার মাধ্যমে ভূমিকা পর্ব শেষ করে মূল কথায় প্রবেশ করা হয়েছে। পূর্ববর্তী নবীদের দাওয়াতি কৌশল আলোচনা করতে গিয়ে মুসা (আ.) সম্পর্কে অল্প কথায় আলোচনা করে অন্যান্য রাসুলদের বিষয়ে বলা হয়েছে। তবে মুসা (আ.) ছাড়া আর কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি। 

সুরা ইবরাহিম, আয়াত ২২-৩৪
কেয়ামতের দিন ফায়সালার পর জাহান্নামে শয়তান ও পরস্পরের সঙ্গে কী ধরণের বাক-বিতণ্ডা, তর্ক-বিতর্ক হবে তা আলোচনা করা হয়েছে। পাপী সম্প্রদায়কে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে, ওই কঠিন আজাব আসার আগেই পাপ থেকে ফিরে এসে ইবাদতময় জীবন গঠন কর। তবেই আল্লাহর আজাব থেকে মুক্তি মিলবে। 

সুরা ইবরাহিম, আয়াত ৩৫-৫২
হজরত ইবরাহিম (আ.) এর আলোচনা করা হয়েছে। তিনি তার প্রভুর কাছে একান্তে কিছু প্রার্থনা করেছিলেন, যা পরবর্তীতে কবুল হয়েছে সেসব এখানে তুলে দেওয়া হয়েছে। যারা আল্লাহ সম্পর্কে বিতর্ক করে এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা বলে, তাদের ব্যাপারে আল্লাহ বে-খবর নন। আল্লাহর দেওয়া অবকাশ শেষ হলেই তাদেরকে পাকড়াও করা হবে। সে সময় আসা পর্যন্ত এ কোরআন দিয়ে মানুষকে সতর্ক করতে থাকা নবীর কর্তব্য।