images

ইসলাম

জান্নাতে যাওয়ার মাধ্যম হবে সহজ ১৪ আমল

ধর্ম ডেস্ক

১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৬:০১ পিএম

আল্লাহ তাআলার দয়া অফুরান। মানুষের বেশি প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো তিনি ফ্রিতেই দিয়েছেন। যেমন-আলো বাতাস, পানি, উপযুক্ত ভূমণ্ডল। এছাড়াও চোখ, কান, নাক, মুখ, হাত, পা—একেকটি অঙ্গ কত দামী তা শুধু বোকারাই উপলব্ধি করতে পারে না। আসলে আল্লাহ তাআলার নীতি হলো- তিনি বেশি দামী জিনিসগুলো সহজলভ্য করেন। কারণ তিনি মেহেরবান। 

প্রশ্ন আসতে পারে- তিনি কি জান্নাতে যাওয়ার পথটা সহজ রাখেননি? অবশ্যই রেখেছেন। কারণ, জান্নাত মানুষের অপরিহার্য প্রয়োজন। দুনিয়াতে যেমন আলো বাতাস পানি প্রয়োজন, তেমনি আখেরাতে মানুষের টিকে থাকতে, সুখে শান্তিতে থাকতে জান্নাত ছাড়া উপায় নেই। তাই তিনি মেহেরবানি করে জান্নাতে যাওয়ার উপায়ও জানিয়ে দিয়েছেন বান্দাদের। বলেছেন, তাঁর রাসুলের আনুগত্য করলেই জান্নাত। আল্লাহ তাআলার ভাষায়- وَمَنْ يُطِعِ اللهَ وَرَسُولَهُ يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَمَنْ يَتَوَلَّ يُعَذِّبْهُ عَذَابًا أَلِيمًا অর্থ: ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করবে, আল্লাহ তাকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার তলদেশে প্রবহমান থাকবে নহর। আর যে ব্যক্তি (তা থেকে) মুখ ফিরিয়ে নেবে, তাকে দেবেন যন্ত্রণাময় শাস্তি। (সুরা ফাতহ: ১৭)

আরও পড়ুন: জান্নাতের সুখ শান্তি

বান্দার উচিত- চিরকল্যাণ ও প্রকৃত সফলতার সেই পথে অগ্রসর হওয়া। এছাড়াও জান্নাতে যাওয়ার কিছু সহজ আমল রয়েছে। যেগুলো নবীজি উম্মতকে জানিয়ে দিয়েছেন। সেরকম ১৪টি সহজ আমল নিচে তুলে ধরা হলো।

১. প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি তেলাওয়াত। (সুনানে কুবরা, নাসায়ি: ৯৮৪৮; আলমুজামুল আওসাত, তাবারানি: ৭৫৩২)
২. সকাল-সন্ধ্যায় সায়্যিদুল ইস্তেগফার পাঠ। (সহিহ বুখারি: ৬৩০৬)
৩. অজুর পর দু’রাকাত নামাজ। (আবু দাউদ: ৯০৬; তিরমিজি: ১০৫৯)
৪. অজুর পর কালেমা শাহাদাত পড়া। (সহিহ মুসলিম: ২৩৪; আবু দাউদ: ১৭০)
৫. আজানের উত্তর দেওয়া। (সহিহ মুসলিম: ৩৮৫; আবু দাউদ: ৫২৭)
৬. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া। (আবু দাউদ: ১৪২০; সুনানে নাসায়ি: ৪৬১; সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৪০১)

আরও পড়ুন: জান্নাতের সবচেয়ে বড় নেয়ামত

৭. গুরুত্বের সঙ্গে ফজর ও আছর আদায়। (সহিহ বুখারি: ৫৭৪; সহিহ মুসলিম: ৬৩৫)
৮. সালামের প্রসার, মানুষকে খাওয়ানো এবং শেষরাতে নামাজ-এই তিনটি কাজ যে ব্যক্তি করে। (তিরমিজি: ২৪৮৫; ইবনে মাজাহ: ১৩৩৪)
৯. মকবুল হজ। (সহিহ বুখারি: ১৭৭৩; সহিহ মুসলিম: ১৩৪৯)
১০. জিহ্বা ও লজ্জাস্থানের হেফাজতকারী (সহিহ বুখারি: ৬৪৭৪)
১১. আপন দাবিতে সত্যবাদী হওয়ার পরও ঝগড়া ত্যাগ, রসিকতার ছলেও মিথ্যা না বলা এবং নিজের চরিত্র সুন্দর করা—এ তিন আমলের জন্য তিন স্তরের জান্নাত। (আবু দাউদ: ৪৮০০)
১২. নারীদের চার কাজে জান্নাত। ১. পাঁচওয়াক্ত নামাজ, ২. রমজানের রোজা, ৩. লজ্জাস্থানের হেফাজত ও ৪. স্বামীর আনুগত্য। (সহিহ ইবনে হিব্বান: ৪১৬৩; মুসনাদে আহমদ: ১৬৬১; আলমুজামুল আওসাত, তাবারানি: ৪৫৯৮)
১৩. দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ধৈর্যধারণ করলে জান্নাত। (সহিহ বুখারি: ৫৬৫৩)
১৪. প্রিয়জনকে হারিয়ে সওয়াবের আশায় ধৈর্যধারণ করলে জান্নাত। (সহিহ বুখারি: ৬৪২৪)

আমাদের উচিত- দৈনন্দিন জীবনে ফরজ, সুন্নত ও মোস্তাহাব আমলের সঙ্গে বিশেষ এই আমলগুলোর প্রতিও আলাদা যত্নশীল নেওয়া। নিশ্চয় এগুলো আমাদের পরকালীন সফলতার জন্য সহায়ক হবে। জান্নাত লাভের ওসিলা হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন।