শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

জান্নাতের সবচেয়ে বড় নেয়ামত

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৫:৫৯ পিএম

শেয়ার করুন:

জান্নাতের সবচেয়ে বড় নেয়ামত

জান্নাতের নেয়ামত অপরিসীম। আল্লাহ তাআলা জান্নাতিদের সকল ইচ্ছা পূরণ করবেন। কোরআন ও হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, সেখানে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে থাকবে। কখনো অসুস্থ হবে না। দুর্দশাগ্রস্ত হবে না। পরিধেয় বস্ত্র কখনো পুরনো হবে না এবং জান্নাতিদের যৌবনও কখনো শেষ হবে না। জান্নাতের সুশীতল ছায়া, আপ্যায়ন, পানীয়, চক্ষু শীতলকারী নারীসঙ্গী, পরিবেশকগণ, বহুতলবিশিষ্ট সুউচ্চ মনোরম প্রাসাদ, বাগান ও ঝর্ণা, জান্নাতিদের প্রতি অভিবাদন এবং সবকিছুর ওপরে আল্লাহর সন্তুষ্টি—সকল নেয়ামতে পরিপূর্ণ থাকবেন চিরস্থায়ী জান্নাতিরা। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলার বাণী, ‘..জান্নাতবাসীরা আনন্দে মগ্ন থাকবে’। (সুরা ইয়াসিন: ৫৫)

কিন্তু এমন একটি মুহূর্ত আসবে, যখন তারা ইতোপূর্বের সকল নেয়ামতের কথা ভুলে যাবেন। তা হলো— মহান আল্লাহর দিদার। যা জান্নাতিদের জন্য সবচেয়ে বড় নেয়ামত। জান্নাতের সবচেয়ে সুখকর ও প্রশান্তিময় মুহূর্ত। একটু আগেও যেসকল নেয়ামতরাজির কারণে জান্নাতিরা সুখি ও আনন্দিত ছিলেন, আল্লাহর দিদার লাভের পর সেসকল নেয়ামতকে ফিকে মনে হবে জান্নাতিদের। 


বিজ্ঞাপন


রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘জান্নাতিরা যখন জান্নাতে প্রবেশ করবেন তখন আল্লাহ তাআলা তাদেরকে বলবেন— তোমরা কি চাও আমি অনুগ্রহ আরো বাড়িয়ে দেই? তারা বলবে, আপনি কি আমাদের চেহারা আলোকোজ্জ্বল করে দেননি? আমাদের জান্নাতে দাখিল করেননি এবং জাহান্নাম থেকে নাজাত দেননি? রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, এরপর আল্লাহ তাআলা আবরণ তুলে নিবেন (নিজের পর্দা সরিয়ে দেবেন)। (তখন তারা আল্লাহকে দেখবে) আল্লাহর দিদার অপেক্ষা প্রিয় কোনো বস্তু তাদের দেওয়া হয়নি।’ (সহিহ মুসলিম: ৩৪৬, কিতাবুল ঈমান)

‘আল্লাহর বান্দারা সেদিন তাদের রবকে নিজের চোখে দেখতে পাবে। আল্লাহকে দেখতে পাওয়ার তুলনায় তারা এ পর্যন্ত যা যা পেয়েছে, সবকিছু ভুলে যাবে।’ (সহিহ মুসলিম: ৪৬৭)

মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা কল্যাণকর কাজ করে, তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ (জান্নাত) এবং আরো অধিক (আল্লাহর দিদার)। তাদের মুখমণ্ডলকে মলিনতা আচ্ছন্ন করবে না এবং লাঞ্ছনাও না; তারাই হচ্ছে জান্নাতের অধিবাসী, তারা তার মধ্যে অনন্তকাল বাস করবে।’ (সুরা ইউনুস: ২৬)

‘সেদিন বহু মুখমণ্ডল উজ্জ্বল হবে। তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে।’ (সুরা কিয়ামাহ: ২২-২৩)

জারির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) বলেন, এক রাতে আমরা রাসুলুল্লাহ (স.)-এর কাছে ছিলাম। হঠাৎ তিনি পূর্ণিমার রাতের চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘শোনো! নিশ্চয় তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে তেমনি স্পষ্ট দেখতে পাবে, যেমন স্পষ্ট ওই চাঁদকে দেখতে পাচ্ছ। তাঁকে দেখতে তোমরা কোনো ভিড়ের সম্মুখীন হবে না।’ (বুখারি: ৫৫৪, ৭৪৩৪ মুসলিম: ৬৩৩, সহিহ আল-জামে: ২৩০৬, সহিহ ইবনে হিব্বান: ৭৪৪২, ৭৪৪৩, আহমদ ১৯১৯০)

এই দিদার হবে জান্নাতে। জাহান্নামিরা আল্লাহর দিদার থেকে বঞ্চিত হবে। কারণ তারা তাঁকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘কক্ষনো না, অবশ্যই তারা সেদিন তাদের প্রতিপালক (দর্শন) থেকে পর্দাবৃত থাকবে।’ (সুরা মুতাফফিফিন: ১৫)

অতএব, নিঃসন্দেহে বান্দার জন্য সর্বোত্তম ও মহান পুরস্কার আল্লাহ তাআলার সাক্ষাৎ। তাই এ পুরস্কারলাভে ধন্য হতে চাইলে মহান আল্লাহর কাছে সেই প্রার্থনা করতে হবে। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ পছন্দ করে, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ পছন্দ করেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ অপছন্দ করে, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ অপছন্দ করেন।’ (সহিহ বুখারি: ৬৫০৭)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর সাক্ষাৎ লাভের জন্য কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর