নিজস্ব প্রতিবেদক
০৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০৪:৩৫ পিএম
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আগামীকাল ঢাকায় বিভাগীয় সমাবেশ করবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। প্রথম থেকেই নয়াপল্টনে এই সমাবেশ করতে চাইলেও রাস্তাঘাটে সমাবেশে ডিএমপির বাধায় সমাবেশস্থল নিয়ে দোটানায় পড়ে দলটি। দফায় দফায় এ নিয়ে আলোচনার পর অবশেষে রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। তবে এ ক্ষেত্রেও রয়েছে শর্তের বেড়াজাল।
শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদ এ কথা জানিয়েছেন।
ডিবি প্রধান বলেন, আগামীকাল গোলাপবাগে বিএনপিকে ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আগের শর্ত বহাল থাকবে।
>> আরও পড়ুন: অবশেষে গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশের অনুমতি পেল বিএনপি
এর আগে ২৯ নভেম্বর বিএনপিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দিয়ে এসব শর্ত দিয়েছিল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। সেই শর্তগুলো হলো-
১. এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
২. স্থান ব্যবহারের অনুমতি পালন করতে হবে।
৩. সমাবেশস্থলের অভ্যন্তরে সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
>> আরও পড়ুন: ১০ ডিসেম্বর ঘিরে রাজধানীতে কঠোর অবস্থানে পুলিশ
৪. নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত সংখ্যক খোয়াসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।
৫. স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলের অভ্যন্তরে ও বাইরে উন্নত রেজুলেশনের সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।
৬. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি প্রবেশ পথে আর্চওয়ে স্থাপন করতে হবে এবং সমাবেশস্থলে আগতদের হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে চেকিং করতে হবে।
৭. Vehicle Scanner/ Search Mirror এর মাধ্যমে সমাবেশস্থলে আগত সকল যানবাহন তল্লাশির ব্যবস্থা করতে হবে।
৮. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা করতে হবে।
৯. সমাবেশস্থলের বাইরে বা সড়কের পাশে মাইক/সাউন্ডবক্স ব্যবহার করা যাবে না।
১০. মাঠের বাইরে বা সড়কের পাশে প্রজেক্টর ব্যবহার করা যাবে না।
>> আরও পড়ুন: জামিন পেলেন আমান-জুয়েল, রিজভী-এ্যানীরা কারাগারে
১১. ফুটপাতে কোথাও লোক সমবেত হওয়া যাবে না।
১২. আযান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক বা শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
১৩. ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আসতে পারে এমন কোনো ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না।
১৪. অনুমোদিত সময়ের মধ্যে সমাবেশের সার্বিক কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
১৫. সমাবেশ শুরুর দুই ঘণ্টা আগে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে।
১৬. সমাবেশস্থলের আশপাশের রাস্তায় সমবেত হওয়াসহ যান ও জন চলাচলে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।
১৭. পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে কোনো ধরণের লাঠি-সোটা ব্যবহার করা যাবে না।
১৮. আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কার্যকলাপ করা যাবে না।
>> আরও পড়ুন: ফখরুল-আব্বাসকে গ্রেফতার দেখাল পুলিশ
১৯. রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যকলাপ ও বক্তব্য দেওয়া যাবে না।
২০. উস্কানিমূলক কোনো বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।
২১. মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে আসা যাবে না।
২২. পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত স্থানে গাড়ি পার্কিং করতে হবে। মূল সড়কে কোনো গাড়ি পার্কিং করা যাবে না।
২৩. সমাবেশস্থলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।
২৪. স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণপূর্বক সমাবেশ পরিচালনা করতে হবে।
২৫. উল্লেখিত শর্তাবলী না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে।
২৬. জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।
জ্বালানি তেল ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, দলীয় কর্মসূচিতে গুলি করে নেতাকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ ছাড়াও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে গত ১২ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রামের মাধ্যমে শুরু হয়ে ইতোমধ্যেই বিভাগীয় (দলের সাংগঠনিক বিভাগ) পর্যায়ে সমাবেশ শেষ করছে বিএনপি। আগামীকাল ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিএনপির পূর্বঘোষিত এই কর্মসূচি।
/আইএইচ