images

রাজনীতি

ঢাকা-৯: এলাকাবাসীর কাছে তিন প্রার্থীই অপরিচিত

মাহফুজুর রহমান

১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:১৩ পিএম

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। গত বৃহস্পতিবার হয়েছে তফসিল ঘোষণা। সারাদেশে এখন নির্বাচনি আমেজ। আলোচনার কেন্দ্রে প্রার্থীরা। কোন আসনের প্রার্থী কতটা পরিচিত, এলাকায় কার কেমন জনপ্রিয়তা- এসব নিয়ে চায়ের কাপে উঠছে ঝড়।

সেই ধারাবাহিকতায় আলোচনায় রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ আসন ঢাকা-৯। এই আসনে মূল লড়াইটা হবে দেশের অন্যতম বড় দল বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্র নেতাদের গঠিত নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে। এর মধ্যে বিএনপি থেকে প্রার্থী হয়েছেন হাবিবুর রশিদ (হাবিব), জামায়াত থেকে কবির আহমেদ এবং এনসিপি থেকে ডা. তাসনিম জারা। 

সবুজবাগ, খিলগাঁও ও মুগদার বিস্তৃত জনপদ নিয়ে গঠিত ঢাকা-৯ আসন। সেখানে প্রার্থীরা আলোচনায় থাকলেও মাঠপর্যায়ে ভোটারদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ প্রত্যাশা মতো চোখে পড়ছে না বলে শোনা যাচ্ছে। 

সরেজমিনে গিয়ে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির হাবিবুর রশিদ, জামায়াতের কবির আহমেদ এবং এনসিপির তাসনিম জারা- তিনজনই নিজেদের রাজনৈতিক পরিচিতি ও সাংগঠনিক পদমর্যাদায় উল্লেখযোগ্য হলেও এলাকার সাধারণ মানুষের কাছে তাদের পরিচিতি কম।

প্রার্থীদের মধ্যে হাবিবুর রশিদ ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। সে হিসেবে তার একটি দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ার রয়েছে। রাজনীতিতে তিনি সুপরিচিত হলেও মাঠ পর্যায়ে বিশেষ করে ঢাকা-৯ এর অলিগলি, বাজার, ওয়ার্ডের ভেতর তার পরিচিতি সেই অনুপাতে শক্তিশালী হয়ে ওঠেনি। অনেকেই তাকে ‘নতুন মুখ’ হিসেবে দেখছেন।

100
নির্বাচনি প্রচারণায় ঢাকা-৯ আসনের বিএনপি প্রার্থী হাবিবুর রশিদ হাবিব। ছবি- সংগৃহীত

সরেজমিনে খিলগাঁও তালতলা, মুগদা হাজীপাড়া ও সাবুজবাগে কথা বললে অনেকেই বলেন, বিএনপির প্রার্থী মিছিল-সমাবেশ করলেও তাকে খুব একটা চেনেন না তারা।

কয়েকজন দোকানদার বলছিলেন, বিএনপির প্রার্থী নাকি নতুন, আগে তো দেখা যায়নি। শুনছি উনি বড় নেতা, ছাত্রদলে ছিলেন। কিন্তু এলাকায় তো কখনো দেখি নাই। হঠাৎ নির্বাচনের সময় এলে মানুষ চিনতে পারে না, ভোট দিতেও দ্বিধা করে। বিএনপির নাম আছে, কিন্তু প্রার্থী নতুন মনে হয়। উনি যদি আগে একটু সময় দিতেন, মানুষের সঙ্গে ঘুরে কথা বলতেন, তাহলে আলাদা একটা সাড়া পেতেন। মিছিল মিটিং করছে ঠিকই, কিন্তু আমরা তো মানুষ দেখি না সবসময়। প্রার্থী যদি এলাকাপ্রেমী হয়, তবেই মানুষ মন থেকে ভোট দেয়।

এই প্রেক্ষাপটে হাবিবুর রশিদের প্রচারণা কিছুটা সীমিত পরিসরে হলেও নিয়মিত চলছে। বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ, গণসংযোগ এবং ছোট ছোট শোডাউন চোখে পড়েছে। 

তবে ভোটারদের একটি অংশ এখনো তাকে নিয়ে দ্বিধায়। কারণ সংগঠনের পরিচয়ের বাইরে ব্যক্তিগত যোগাযোগ বা দীর্ঘমেয়াদী স্থানীয় সম্পৃক্ততার ঘাটতি এই আসনের নির্বাচনি বাস্তবতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষত ঢাকা মহানগরীতে প্রতিটি আসনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যক্তিগত সম্পর্ক, গণসংযোগের ধারাবাহিকতা এবং স্থানীয় সেবা কার্যক্রমের সঙ্গে যোগসূত্র তৈরি করা ভোটাররা গুরুত্ব দিয়ে দেখেন।

এদিকে জামায়াতের প্রার্থী কবির আহমেদ কিছুটা সংগঠিত প্রচারণা চালালেও তারও জনসম্পৃক্ততা ব্যাপক নয়। তিনি শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এবং সবুজবাগ, মুগদা ও খিলগাঁও উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি হিসেবে পরিচিতি রাখলেও সেটি অধিকাংশ সাধারণ ভোটারের কাছে ততটা বিস্তৃত নয়।

বিগত আওয়ামী শাসনামলে দীর্ঘদিন জামায়াত তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাতে পারেনি। গত এক বছরের কার্যক্রমে দলটি জনসম্পৃক্ত হতে পারছে বলেই মনে করে স্থানীয়রা। কবির আহমেদ কিছু মিছিল-মিটিং করলেও ভোটারদের বড় একটা অংশ তাকে ‘চেনা’ বললেও ‘ঘনিষ্ঠ’ বা ‘জনসম্পৃক্ত’ মনে করছেন না।

কয়েকজন ভোটার বলেন, ‘জামায়াতের লোকজন চিনি, কিন্তু প্রার্থীকে খুব একটা দেখি না। মাঝে মাঝে মিছিল হয়, কিন্তু তা দিয়ে জনপ্রিয়তা বাড়ে না। উনি নাকি বিভিন্ন সংগঠনের সভাপতি। কিন্তু এলাকার বাস্তব সমস্যায় তাকে তেমন দেখা যায়নি। ভোটাররা সে ব্যাপারটা গুরুত্ব দেয়। আগে একটু ভালোভাবে এলাকায় কাজ করলে জনপ্রিয়তা বাড়ত। এখন প্রচারণা করছে, কিন্তু তেমন ঢেউ তৈরি করতে পারেনি। জামায়াতের নিজস্ব ভোট ব্যাংক আছে, সেটা সবারই জানা। তবে সেটা দিয়ে তো নির্বাচনে জয় লাভ করা সম্ভব নয়। নির্বাচনে জয় লাভ করতে হলে সাধারণ জনগণের ভোট লাগবে।’

200
নির্বাচনি গণসংযোগে ঢাকা-৯ আসনের জামায়াতের প্রার্থী কবির আহমেদ। ছবি- সংগৃহীত

অন্যদিকে এনসিপির প্রার্থী তাসনিম জারা দলটির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব হিসেবে সাংগঠনিক পদে থাকলেও ভোটের মাঠে তাকে খুব একটা দেখা যায় না। প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর তুলনায় তার প্রচারণা নীরব বা প্রায় অদৃশ্য। সরেজমিনে তার ব্যানার, পোস্টার বা ওপেন প্রচারণা কার্যক্রম তেমনভাবে চোখে পড়েনি।

তাসনিম জারা এই আসনে ব্যতিক্রমধর্মী আলোচনা তৈরি করেছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সক্রিয় হলেও মাঠপর্যায়ে তার উপস্থিতি সীমিত। বিশেষ করে তিনি একটি পোস্টে উল্লেখ করেছেন, নির্বাচনি আইন অনুযায়ী ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ের সীমার বাইরে গিয়ে তিনি কোনো অতিরিক্ত বা অনিয়মের মাধ্যমে টাকা খরচ করবেন না। এই প্রতিশ্রুতি রাজনৈতিক শুদ্ধাচারের দৃষ্টিতে প্রশংসনীয় হলেও প্রচারণার বাস্তবতায় এটি তাকে পিছিয়ে দিচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

রহমত আলী নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘এলাকায় তার (তাসনিম জারা) কোনো প্রচারণাই দেখিনি। প্রার্থী যদি মানুষকে দেখা না দেয়, তার প্রতি আস্থা তৈরি হয় কীভাবে? উনি নাকি নিয়মমতো ২৫ লাখের বেশি খরচ করবেন না, সেটা ভালো কথা। কিন্তু মাঠে না নামলে তো ভোটারদের জানার সুযোগই হচ্ছে না উনি কে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকটিভ, কিন্তু বাস্তবে নেই। নির্বাচনে শুধু নীতি দেখলে হবে না, ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগও জরুরি।’

সবুজ উদ্দিন নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘তার (তাসনিম জারা) কথা ফেসবুকে দেখি। কিন্তু এলাকায় তো তাকে দেখি না। ভোট তো মাঠের ব্যাপার। নির্বাচনে ভালো করলে মাঠে প্রচারণা চালাতে হবে।’

ফলে ভোটারদের প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘরোয়া বৈঠক, গণসংযোগ বা দৃশ্যমান প্রচারণা না থাকায় তাসনিম জারার জনপ্রিয়তা বাড়ার সুযোগ সীমিত রয়ে গেছে।

ভোটাররা সাধারণত যে প্রার্থীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে পারেন, সমস্যা-ভোগান্তি, স্থানীয় উন্নয়ন কিংবা রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার সময় যাকে পাশে পান, তাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। কিন্তু ঢাকা-৯ আসনে তিন প্রধান প্রার্থীর ক্ষেত্রে এই ধারাবাহিকতা অনুপস্থিত।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ‘স্থানীয়ভাবে দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক এবং ধারাবাহিক যোগাযোগ ছাড়া নগর আসনে জনপ্রিয়তা তৈরি কঠিন। কেন্দ্রীয় পরিচিতি বা সাংগঠনিক পদ সবসময় মাঠের ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে না।’

এলাকার ভোটাররা বলছেন, প্রার্থীরা নির্বাচনের সময় এলে একপ্রকার হুট করেই সক্রিয় হন। স্থানীয় উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা, রাস্তাঘাটের সমস্যা, ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা বা স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক উদ্যোগে তিনজনের কাউকেই নিয়মিত ভূমিকা রাখতে দেখা যায়নি। ফলে জনসম্পৃক্ততা অর্জনে তাদের কাজ এখন বেশি কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ভোটাররা আরও বলছেন, নির্বাচনের সময় সবাই আসে। কাজ করলে তো আগে দেখতাম। বিশেষ করে তরুণদের একটি অংশ মনে করছেন, নেতাদের সোশ্যাল মিডিয়া উপস্থিতি বাস্তব মাঠের কাজের বিকল্প নয়।

বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীরা যেহেতু প্রচলিত পদ্ধতিতে মিছিল-মিটিং করছেন, তাই তাদের উপস্থিতি কিছুটা বেশি চোখে পড়ে। কিন্তু তা যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন।

সোহানুর রহমান নামে একজন বলেন, মিছিল হলেই তো জনপ্রিয়তা হয় না, মানুষের ঘরে যেতে হয়। তাসনিম জারার প্রচারণা প্রায় অনুপস্থিত থাকায় তিনি আরও পিছিয়ে। তার পোস্টে কঠোর ব্যয়ের শৃঙ্খলা বজায় রাখার ঘোষণা রাজনৈতিক আদর্শের দিক থেকে প্রশংসনীয় হলেও বাস্তবে ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর কার্যকর পদ্ধতি খুবই সীমিত।

এছাড়া অনেক ভোটারই বলছেন, আসনে কোনো প্রার্থীই এখনো এমনভাবে প্রচারণা চালাতে পারেননি, যা বড় গণজোয়ার তৈরি করবে। ঢাকা-৯ এর সামাজিক গঠনবিন্যাসে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ, কর্মজীবী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, মধ্যবিত্ত পরিবার, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী- এসব শ্রেণির ভোটারদের আলাদা করে টানতে প্রত্যেক প্রার্থীর আলাদা রাজনৈতিক কৌশল দরকার।

মাঠপর্যায়ের প্রচারণার বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিএনপি প্রার্থী হাবিবুর রশিদ তার কেন্দ্রীয় পরিচিতির ওপর নির্ভরশীল। এনসিপির প্রার্থী তাসনিম জারা তার রাজনৈতিক আদর্শিক অবস্থানের ওপর নির্ভর করছেন। অন্যদিকে জামায়াতের প্রার্থী কবির আহমেদ তার সাংগঠনিক নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভরশীল। 

কিন্তু এ তিনটি ক্ষেত্রের কোনোটিই ভোটারদের কাছে ব্যক্তিগত যোগাযোগের বিকল্প হয়ে উঠতে পারছে না। নগর নির্বাচনের বাস্তবতা হলো- জনসংযোগ, মুখোমুখি কথা বলা, স্থানীয় ইস্যুতে দৃশ্যমান উপস্থিতি- এসবকে ভোটাররা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।

এখন প্রশ্ন, ঢাকা-৯ এ পরিবর্তনের বাতাস কত দূর যাওয়া সম্ভব? মাঠে জনসম্পৃক্ততার ঘাটতি কি সব প্রার্থীকেই সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, নাকি শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় কেউ জয়ের চাকা ঘুরিয়ে দিতে পারবে?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই আসনে এখনো ‘অব্যবস্থাপ্রসূত প্রতিদ্বন্দ্বিতা’ চললেও এখন থেকে ধারাবাহিক প্রচারণা চালালে কিছু পরিবর্তন করতে পারে। তবে প্রার্থীদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো- এখনো অনেক ভোটারই নিশ্চিত নন, তারা কাকে ভোট দেবেন। তাই ভোটারদের মন জয় করাই হবে আসনটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণে মূল বিষয়।

মোদ্দকথা, তিন প্রার্থীই সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হলেও স্থানীয় উপস্থিতির ঘাটতি তাদের জনপ্রিয়তাকে সীমিত করেছে। ঢাকা-৯ এর মতো বৈচিত্র্যময় ও রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় এলাকায় জনসম্পৃক্ততা ছাড়া বড় পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন। ভোট ঘনিয়ে এলে তারা কতটা মাঠে নামতে পারে এটাই এখন দেখার বিষয়।

বিএনপির প্রার্থী হাবিবুর রশীদ বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশের মানুষকে সমঅধিকার, ভোটাধিকার ও মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে চান এবং সেই লক্ষ্যেই দল কাজ করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলছে। এসব মোকাবিলায় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঢাকা-৯ আসনকে একটি মডেল এলাকা হিসেবে গড়ে তোলা হবে। ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে জনগণের সমর্থনই হবে পরিবর্তনের পথে বড় শক্তি। রাজপথে থেকেছি, ভবিষ্যতেও জনগণের পাশে থাকব- এটাই আমার অঙ্গীকার।’

জামায়াত প্রার্থী কবির আহমেদ বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রয়োজন সৎ, দক্ষ ও নতুন নেতৃত্ব। এবার নতুন বাংলাদেশ গড়তে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজমুক্ত মানবিক সংগঠন জামায়াতে ইসলামীকে সবাই মিলে জয়যুক্ত করবে। জামায়াতে ইসলামী জাতিকে দুর্নীতি-সন্ত্রাস-চাঁদাবাজমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে দেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র, বেকারত্ব মুক্ত করে এক সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করবে।’

300
নির্বাচনি প্রচারণায় ঢাকা-৯ আসনের এনসিপি প্রার্থী ডা. তাসনিম জারা। ছবি- সংগৃহীত

ঢাকা-৯ সংসদীয় এলাকাকে নতুন বাংলাদেশের মডেল হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘জনগণকে একটি নিরাপদ ও বাসযোগ্য মানবিক শহর উপহার দেওয়াই জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গীকার।’

কবির আহমেদ বলেন, ‘অতীতে যারা এমপি হয়ে ঢাকা-৯ আসনের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে, দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে, ব্যাংক-বিমার মালিক হয়েছে, নিজ নামে স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠা করে শিক্ষা বাণিজ্য করেছে, তাদেরকে আর ভোট দেওয়া যায় না। এরা আবারও সুযোগ পেলে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলবে।’

তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীতে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজের স্থান নেই। জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাস মুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।’ 

জামায়াতে ইসলামীকে পরীক্ষামূলক একবার নির্বাচিত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গীকার, জাতি পাবে নিরাপদ এক কল্যাণ রাষ্ট্র।’ 

জুলাইয়ের শহীদদের স্বপ্নের বৈষম্যহীন কল্যাণ ও মানবিক নতুন বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীর দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে সমর্থন দিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান কবির আহমেদ।

এনসিপি প্রার্থী তাসনিম জারা বলেন, ‘আমাদের দেশে নির্বাচনে একজন প্রার্থী আইনগতভাবে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা খরচ করতে পারেন। কিন্তু বাস্তবে আমরা দেখি প্রায় কেউই এই আইন মানেন না। শোনা যায়, একজন প্রার্থী ২০, ৫০, এমনকি ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ করেন। অথচ নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়ে বলেন মাত্র ২৫ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন। ফলে প্রায় সকলেরই সংসদে যাওয়ার যাত্রাটাই শুরু হয় আইন ভাঙা ও মিথ্যা বলার মাধ্যমে।’

তিনি বলেন, ‘আমি এই অসততা ও মিথ্যার রাজনীতি করব না। আমি এনসিপি থেকে ঢাকা-৯ আসনে মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছি এবং আমি প্রতিজ্ঞা করছি যে, আইনে অনুমোদিত টাকার বাইরে আমি এক টাকাও খরচ করব না।’

তাসনিম জারা আরও বলেন, ‘অনেকেই বলছেন, এত অল্প বাজেটে নির্বাচন করা অসম্ভব। আমি তাদের বলেছি, আমরা প্রমাণ করব এটা সম্ভব। শুধু নির্বাচনের পর নয়, নির্বাচনের আগেই নিয়মিত জানাব কত টাকা পেয়েছি এবং কত টাকা খরচ করেছি। সবকিছু করব স্বচ্ছভাবে।’

এম/এএইচ